ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১

তিন সেঞ্চুরির দিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৫ পিএম, ২০ মার্চ ২০১৯ বুধবার

ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরিতে দলকে টানলেন আব্দুল মজিদ। তিনশো রানের কাছাকাছি পুঁজি নিয়ে দারুণ লড়াই করল মোহামেডান। কিন্তু লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে সাফল্যের সঙ্গেই পথ দেখালেন অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। অবশ্য এক ম্যাচ আগে ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে দলকে সাড়ে তিনশো পার করিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মোহামেডানের ৭ উইকেটে তোলা ২৯৫ রান ৪ বল হাতে রেখেই টপকে যায় রূপগঞ্জ। মুমিনুল হক ও রিশি ধাওয়ানের ফিফটিতে রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় তুলে নিলেও রূপগঞ্জের ৪ উইকেটের জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নাঈমের ৮৫ রানের ইনিংসটির।

এ দিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি মোহমেডানের। ভারতীয় অলরাউন্ডার ধাওয়ানের বলে বোল্ড হয়ে শুরুতেই ফিরে যান অভিষেক মিত্র। এক প্রান্তে নিয়মিত উইকেট হারাচ্ছিল মোহামেডান। অন্য প্রান্তে নিজেকে একদম গুটিয়ে রেখেছিলেন মজিদ। অবশেষে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১১৯ বলে। ১২৬ বলে তিন ছক্কা আর পাঁচ চারে ফিরে যান ১০৭ রান করে।

জবাবে রূপগঞ্জের দুই ওপেনার আজমির আহমেদ ও মোহাম্মদ নাঈম ফিরেন রান আউট হয়ে। আর ১২২ রানে ৪ উইকেট হারানো রূপগঞ্জ প্রতিরোধ গড়ে নাঈম ও ধাওয়ানের ব্যাটে। জুটি ভাঙার পর কিপার-ব্যাটসম্যান জাকের আলীর সঙ্গে ৭১ রানের আরেকটি ভালো জুটিতে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান রূপগঞ্জ অধিনায়ক। রকিবুলের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে থামেন নাঈম। ৯২ বলে খেলা তার ৮৫ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস গড়া ৮ চারে।

মুক্তার আলীকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন জাকের। দলকে পথ দেখানো ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন রূপগঞ্জ অধিনায়ক নাঈম।

অন্যদিকে, ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে সাধ্যের মধ্যেই আটকে রেখে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে আবাহনী। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ৯ বল বাকি থাকতে জিতেছে ৫ উইকেটে।

আর আগের ম্যাচে মাত্র ১৬৩ রান তাড়ায়ও সেঞ্চুরি করে দলকে জেতানো এনামুল হক (বিজয়) কাল মঙ্গলবার বিকেএসপিতে করেছেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সেই সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটার অভিমন্যু ঈশ্বরণের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩৪৪ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়া প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব বৃষ্টি আইনে ২৯ রানে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবকে। এই ম্যাচের দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে মোহামেডানের মজিদের সেঞ্চুরিতে দিনে শতরান হয়েছে তিনটি।

প্রাইম ব্যাংকের শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না। মাত্র ৫ রানেই ওপেনার রুবেল মিয়াকে হারায় তারা। এরপর অবশ্য ঈশ্বরণকে নিয়ে ১৯৪ রানের জুটিতে দলের বিশাল স্কোরের ভিত গড়ে দেন ৫২ বলে ফিফটি করার পর ১১৮ বলে তিন অঙ্কছোঁয়া এনামুল। লেগস্পিনার তানভীর হায়দারের শিকার প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত ১২০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে সাজান তাঁর ১০১ রানের ইনিংস। ১০৫ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছার পর প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর আরো চড়াও হওয়া ঈশ্বরণের ১২৬ বলে ১৩৩ রানের ইনিংসে ১০ বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল একটি ছক্কার মারও।

এরপর শেষ দিকে আরিফুল হকের বিধ্বংসী ব্যাটিং প্রাইম ব্যাংককে নিয়ে যায় সাড়ে তিনশো’র কাছাকাছি। মাত্র ৩২ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। জবাবে ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারানো জামালকে তৃতীয় উইকেটে ১১৬ রানের পার্টনারশিপে টানেন নাসির হোসেন (৭৬) ও অধিনায়ক নুরুল হাসান। বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক এই জুটি ভাঙার পরও তানভীর হায়দারকে নিয়ে নুরুলের (৫৪*) এগোনোর চেষ্টা থামে বৃষ্টিতে। ৩৭.১ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৬ রান তোলা জামাল ওই সময়ের মধ্যে স্কোরবোর্ডে ২৩৬ রান জমা করলেই ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি অনুযায়ী জিতত। কিন্তু বৃষ্টি আর খেলা হতে না দেওয়ায় ৪ ম্যাচে তৃতীয় হারের স্বাদ নিতে হয় তাদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আবাহনী-শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব

শাইনপুকুর ৫০ ওভারে ২০৩/৯ (আফিফ ৪৮, তৌহিদ ৩৯; মোসাদ্দেক ৩/৪১)। আবাহনী ৪৮.৩ ওভারে ওভারে ২০৬/৫ (ওয়াসিম ৭৬, নাজমুল শান্ত ৪২; শরীফুল ৩/৪৪)। ফল : আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা : ওয়াসিম জাফর (আবাহনী)।

মোহামেডান-লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ

মোহামেডান ৫০ ওভারে ২৯৫/৭ (মজিদ ১০৭, নাদীফ ৬৪; শহীদ ৩/৭০)। রূপগঞ্জ ৪৯.২ ওভারে ২৯৬/৬ (নাঈম ৮৫, মমিনুল ৫৫; শফিউল ২/৬৫)। ফল : রূপগঞ্জ ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা : নাঈম ইসলাম (রূপগঞ্জ)।

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব-শেখ জামাল ধানমণ্ডি

প্রাইম ব্যাংক ৫০ ওভারে ৩৪৪/৬ (ঈশ্বরণ ১৩৩, এনামুল ১০১, আরিফুল ৬৭*; তানভীর ২/২৭)।  শেখ জামাল ৩৭.১ ওভারে ২০৬/৪ (নাসির ৭৬, নুরুল ৫৪*; নাহিদুল ২/৫১)।  ফল : ডি/এল মেথডে ২৯ রানে জয়ী প্রাইম ব্যাংক। 

ম্যাচসেরা : অভিমন্যু ঈশ্বরণ (প্রাইম ব্যাংক)।