বেনাপোলে চোরাচালানকৃত পণ্য আটক
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:৩৯ পিএম, ২০ মার্চ ২০১৯ বুধবার
বেনাপোল স্থলবন্দরে নো-এন্ট্রির (চেকপোস্টে কার্গো শাখায় এন্ট্রি বাদে) চোরাচালানের মাধ্যমে ভারতীয় ট্রাকে (ট্রাক নং এন এল এসি-৬৬৫৪) আসা ৬৫১ কার্টুন জিলেট ফোমসহ একটি ভারতীয় ট্রাক আটক করা হয়েছে। ভারতীয় পণ্যবাহি ট্রাকটি বাংলাদেশে গত ১৩ মার্চ প্রবেশের পর থেকে বেনাপোল কাস্টমের ইনভেস্টিগেশন রিচার্চ এন্ড ম্যানেজমেন্ট টিম (আইআরএম) নজরে রাখে।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় স্থানীয় সিএন্ডএফ এজেন্টস ও সাংবাদিকদের বলেন, ভারতীয় ট্রাকটি ৯নং শেডে কিছু পণ্য খালাস করে। বাকি পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরের বিভিন্নস্থানে ঘোরাফেরা করে। এতে কাস্টমের আইআরএম টিম নিশ্চিত হয় ট্রাকে রাখা অবশিষ্ট মালের কোন কাগজপত্র নেই। এরই এক ফাঁকে ভারতীয় ট্রাকের চালক বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রাকটি বেনাপোল বন্দরের ১নং শেডের সামনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর বাংলাদেশি চালকদের সহায়তায় ট্রাকটি বেনাপোল কাস্টম হাউজে আনা হয়। স্থানীয় সাংবাদিকের উপস্থিতিতে আটককৃত ট্রাকটির তালা ভেঙ্গে পণ্য গননা করা হয়। এতে চোরাচালানের মাধ্যমে মিথ্যা ঘোষনায় আনা ৬৫১ কার্টুনে মোট ৭৮১২টি জিলেট শেভিং ফোম পাওয়া যায়। যার শুল্কায়ন ওজন ৩২৬৫.৪১৬ কেজি। আটককৃত ট্রাকসহ পণ্য চালানের মূল্য প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকা।
বেনাপোল বন্দরের ৯নং শেডে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ট্রাকটিতে একটি মেনিফেষ্টের মাধ্যমে তিনটি পণ্যচালান আনা হয়। ট্রাকটি থেকে টেক্সটাইল ডাইস ঘোষনাকৃত তিনটি পন্য চালানই গ্রহণ করেন শেড ইনচার্জ। তিনি ট্রাকের অবশিষ্ট পণ্যের বিষয়ে কোন কিছু অবহিত নয় বলে জানান। উক্ত তিনটি পণ্যচালানের আমদানিকারল প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লি.এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট রুমা ইন্টারন্যাশনাল। উক্ত আমদানিকারকের সিএন্ডএফ এজেন্ট রুমা ইন্টারন্যাশনাল এর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা তাদের মাল নয় বলে জানান।
বেনাপোল কাস্টমে আটককৃত ট্রাকের ভেতরের পণ্যের প্রতিটি কার্টুনে শিপিং টু প্রজেক্ট এন্ড গ্যাম্বেল বাংলাদেশ প্রাইভেট লি. বনানী লেখা ষ্টিকার রয়েছে। তারাও এ মাল তাদের নয় বলে জানান।
কাস্টম কমিশনার বেলাল হোসোইন চৌধুরী বলেন, এভাবে একটি অসাধু চক্র অভিনব কৌশলে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অপচেস্টা করছে। যার জন্য জাতীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। কমিশনার অব কাস্টমের চৌকস আইআরএম টীম এই ধরণের রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নির্ধারিত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নিরলস কাজ করছে। বেনাপোলের শুল্কদল চোরাচালান রোধ, শুল্কফাঁকি উদঘাটন, অবৈধ ও ক্ষতিকর পণ্য বহনকারীদের সনাক্তকরণ এবং শুল্ক আহরণের ধারাকে অব্যাহত রেখে বৈধ বাণিজ্যকে উদ্ধুদ্ধকরণে প্রতিনিয়ত বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। তবে এ ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং আটককৃত ভারতীয় ট্রাক ও পণ্য নিলামে বিক্রি করা হবে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যসোসিয়েশন এর সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন বলেন, যারা এ ধরণের নো-এন্ট্রির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এসব অসাধু ব্যবসায়ির জন্য বেনাপোল বন্দরের সুনাম ক্ষুন্ম হচ্ছে।
কেআই/