ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মাল্টিটাস্কিং করলে যে ক্ষতি হয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৪৮ পিএম, ২২ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৩:৫৮ পিএম, ২২ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার

কোনও নির্দিষ্ট সময়ে মন দিয়ে একটা কাজ করা এখন প্রায় অলীক ব্যাপার৷ একটা শুরু করতে না করতে এসে যায় আর একটি, তার পর আর একটি, তার পর আবা...৷ মাল্টিটাস্কিং এখন সবার জীবনের অঙ্গ৷ সে ঘরে হোক, কি বাইরে৷

ঘরে-বাইরে হলে তো কথাই নেই, কীভাবে যে স্ট্রেস বাড়ে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন৷ নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না৷ সময় থাকে না আরাম-বিরামেরও৷ কম বয়সে সে সব কোনও মতে সামলানো গেলেও বয়স বাড়লে কাজের মান খারাপ হওয়ার পাশাপাশি বিগড়াতে শুরু করে শরীর-মন৷

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে মাল্টিটাস্কিং করে গেলে ব্রেনের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে৷ কমে মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি, দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা, আই কিউ৷

কেন এমন

মোটামুটি একই দক্ষতা সম্পন্ন এক দল মাল্টিটাস্কার ঠাণ্ডা মাথায় একটা করে কাজ শেষ করেন- এমন এক দল মানুষকে নিয়ে স্টাডি করে গবেষকরা দেখলেন যে, যারা বহু দিন ধরে মাল্টিটাস্কিং করে চলেছেন, তাদের কিছু বুঝতে ও মনে রাখতে যত সময় লাগছে, অন্যদের তত লাগছে না৷

একসঙ্গে ২–৩টি কাজ করতে দিয়েও দেখা গেল সাধারণত যারা মাল্টিটাস্কিং করেন না, তারা অনেক দ্রুত ও অনেক ভালভাবে কাজগুলো করতে পারছেন৷ কারণ ব্রেনের ধর্ম হল, এক বারে একটা বিষয়ে ‘ফোকাস’ করা৷ দীর্ঘ দিন ধরে তাকে অবহেলা করে এক সঙ্গে একাধিক কাজ করে চললে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করা ও চিন্তাকে সাজানোর দক্ষতা কমে যায়৷ হাজারো তথ্যের ভিড় থেকে দরকারিগুলোকে ছেঁকে তুলে তাকে কাজে লাগানোর পদ্ধতি ধীর হয়৷ এক কাজ শেষ করে চটপট অন্য কাজে ঢুকে পড়তেও অসুবিধা হয় প্রায় সময়ই৷

বিপদ ঠেকাতে

মাল্টিটাস্কিং পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না৷ কিন্তু তার দরুন যে যে বিপদ হয় তার প্রকোপ কমাতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে৷ যেমন-

* লো ক্যালোরির পুষ্টিকর খাবার খান৷ শরীর পুষ্টি পেলে পুষ্টি পাবে ব্রেনও৷ কাজের ধরন অনুযায়ী কী খাবেন, কতটা খাবেন, কী খাবেন না তা জেনে নিন ডায়াটিশিয়ানের কাছে৷ সাধারণত সেমি–তে উচ্চতা মেপে তা থেকে ১০০ বিয়োগ করলে পাওয়া যায় আদর্শ ওজন, অর্থাৎ ওজন যা হওয়া উচিত৷ তাকে ৩০০ দিয়ে গুণ করলে জানা যায় কত ক্যালোরি খাওয়া উচিত৷ এমন ব্যবস্থা করুন যাতে সেই ক্যালোরির সবটুকুই প্রায় পুষ্টিকর খাবার থেকে আসে৷ এর পাশাপাশি সারা দিনে আরও কয়েকটি বিশেষ খাবার খান৷ ব্রেনের ক্ষতির হার কমবে৷ যেমন–

* ২–৩ কাপ দুধ-চিনি ছাড়া গ্রিন টি৷

* ২-৩ রকমের টাটকা ফল৷ একেক দিন একেক রকম৷

* দু’-চারটি করে অ্যালমন্ড, আখরোট, কিসমিস৷

* তৈলাক্ত মাছ, সপ্তাহে অন্তত দু’বার৷

* টাটকা শাকসবজি, বিন্স, স্যালাড৷

* এক-আধ গ্লাস রেড ওয়াইন, সপ্তাহে ৩–৪ বার৷

* এক টুকরো ডার্ক চকলেট৷

৩৫–এর পর, বিশেষ করে মেয়েদের শরীরে কিছু ভিটামিন–মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চাহিদা বাড়ে৷ খাবার খেয়ে তা পূরণ করা না গেলে চাপ পড়ে ব্রেনে৷ সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো সাপ্লিমেন্ট খেতে হতে পারে৷

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//