ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

পা হারানো নিপার ক্ষতিপূরণের দাবিতে সড়ক অবরোধ

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ২৩ মার্চ ২০১৯ শনিবার

যশোরের নাভারনে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পিকআপ জীপের ধাক্কায় পা হারানো মেধাবী স্কুলছাত্রী মোফতাহুল জান্নাত নিপার ক্ষতিপূরণসহ ৭ দফা দাবিতে শনিবার সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বেনাপোল-যশোর ও নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।

সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে শার্শার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক চাই, নিপার ক্ষতিপূরণ চাই এই শ্লোগান দিয়ে সড়কে বিক্ষোভ করে। এসময় উভয় সড়কে বন্দরের পণ্যবাহী ট্রাকসহ শত শত যানবাহন আটকে থাকে। অধিকাংশ যাত্রীরা বাস থেকে নেমে পায়ে হেটে, রিকশা ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে পৌছাতে দেখা গেছে। শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালিন সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা শিক্ষার্থীদের শাররিকভাবে লাঞ্চিত করে। এতে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা বিক্ষুদ্ধ উঠে।

স্কুল শিক্ষার্থীরা জানায়,৭ দফা পূরণে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হলেও স্কুলের দুটি গতি নিয়ন্ত্রক স্থাপন ছাড়া কোন দাবি পূরণ করা হয়নি। সড়ক দূর্ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ ঘাতক পিকআপ জীপ চালককে আটক করতে পারেনি। তারা দাবি করেন,অবিলম্বে ঘাতক চালককে আটক করতে হবে। সেই সাথে আমাদের সহকর্মী নিপার সমস্ত চিকিৎসা খরচ বহনসহ তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাই আমাদের আবারও আন্দোলনে নামতে হয়েছে। আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘাতক চালককে আটকের প্রতিশ্রুতিসহ ছাত্র-ছাত্রীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা সকাল সাড়ে ১০টার সময় অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়ে ক্লাসে ফিরে যায়।

গত বুধবার (২০ মার্চ) সকালে নাভারন বরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী মোফতাহুল জান্নাত নিপাসহ তিন শিক্ষার্থী ভ্যানে চড়ে স্কুলে যাচ্ছিল। স্কুলের সামনেই বেনাপোলগামী বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি দ্রুতগামী পিকআপ জীপ (ঢাকা-মেট্রো-১৫-১১৭৯) ওই স্কুলছাত্রীদের বহনকারী ভ্যানে ধাক্কা দিলে তিনজনেই ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়।

এ সময় নিপার ডান পা মারাত্মক জখম হয় পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর ডান পা শরীর থেকে কেটে ফেলতে হয়। এছাড়াও নিপার দুই হাত ও বাম পা ভেঙে গেছে। ভ্যানে থাকা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি ও নবম শ্রেণির ছাত্রী রিপা ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা পিকআপ জীপে আগুন ধরিয়ে দেয়। মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ করে।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মশিউর রহমান বলেন, পা হারানো স্কুলছাত্রী নিপার ক্ষতিপূরণসহ ৭ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা বেনাপোল-যশোর ও নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে তাদের সাথে কথা বলে তাদের সকল দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে তারা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নেয়। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কেআই/