ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

পোশাক শিল্পে সবুজ বিপ্লব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৩ এএম, ২৪ মার্চ ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৫:৪৫ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৯ রবিবার

দেশের সিংহভাগ রফতানি আয়ে অবদান রাখা তৈরি পোশাক শিল্পে ঘটেছে সবুজ বিপ্লব। পৃথীবির মধ্যে এখন যে ১০টি প্লাটিনাম গ্রিন কারখানা রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশেই রয়েছে ৭টি। এটি তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বড় অর্জন বলে মনে করছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।

এদিকে রানা প্লাজা ধসের পর থেকে গত ৬ বছরে ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের সংস্কার কাজের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ব বাজারে দেশের ও গার্মেন্টস খাতের যে ইমেজ সংকট হয়েছিল সেটিও পুনরুদ্ধার হয়েছে।

তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গ্রিন ফ্যাক্টরি দেশের অর্থনীতিতে নতুনমাত্রা যোগ করবে। এতে বিদেশি ক্রেতারা আকৃষ্ট হবেন। রপ্তানি বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। তিনি বলেন, বর্তমানে যারাই ফ্যাক্টরি করছেন, তারা গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার আলোকেই কারখানা স্থাপন করছেন। কারণ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কারখানা না হলে ক্রেতারা অর্ডার দেবেন না। তাই উদ্যোক্তারা ব্যবসার আইনকানুন ও দেশের আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা এখন পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়ে তুলছি। পৃথীবির মধ্যে এখন যে ১০টি প্লাটিনাম গ্রিন কারখানা রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশেই রয়েছে ৭টি। ৮০টির ওপরে গ্রিন কারখানা বিল্ডিংয়ের সার্টিফিকেট নেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আরও ২৫টির মতো কারখানা এই সার্টিফিকেট পাবার অপেক্ষায় আছে। তাছাড়া আরো ২৮০টি কারখানা গ্রিন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

সূত্র জানায়, পরিবেশবান্ধব কারখানার বিচারে বিশ্বের শীর্ষ দশটির মধ্যে সেরা ৭টি গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে। ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের সেরা দশটি গ্রিন ফ্যাক্টরির মধ্যে বাংলাদেশের সাতটি কারখানা স্থান পেয়েছে। সেরা দশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়া বাংলাদেশের সাত তৈরি পোশাক কারখানা হচ্ছে- এনভয় টেক্সটাইল, রেমি হোল্ডিংস, প্লামি ফ্যাশনস, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও, এসকিউ সেলসিয়াস, জেনেসিস ফ্যাশনস ও জেনেসিস ওয়াশিং, এসকিউ কোলবেন্স ও এসকিউ বিরিকিনা।

দেশের বিভিন্ন জেলায় যেমন- ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, হবিগঞ্জ, যশোর, পাবনা ও মানিকগঞ্জে এ ধরনের কারখানা তৈরি হচ্ছে। পোশাক খাতের দুর্নাম কাটাতে নানান চেষ্টার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল’ থেকে ধারণা নিয়ে দেশে গ্রিন ফ্যাক্টরি তৈরি করছেন উদ্যোক্তারা। এখন ওই কাউন্সিলের সার্টিফিকেট নিয়েই নতুন যাত্রা শুরু করেছে দেশের পোশাক খাত।

বিজিএমইএ থেকে পাওয়া সবুজ কারখানার তালিকায় রয়েছে- কলাম্বিয়া ওয়াসিং প্লান্ট, সুতি টেক্সটাইল বিডি, ব্যাবিলন প্রোডাক্টশন, দীপ্ত অ্যাপারেলস, ওসমান ইন্টারলিংস, ভিন্টেজ ডেনিম অ্যাপারেলস, ইকো ফ্যাব, গ্রিন টেক্সটাইল, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, রিজেন্সি গার্মেন্টস, একেএইচ ইকো অ্যাপারেলস, এসকিউ চেলসিয়াস, ইপিলিয়ন স্টাইল, ভালটেক্স ইন্টারন্যাশনাল বিডি, ইকো কৌসার, অনন্ত অ্যাপারেলস, কেনপার্ক-২, কেনপার্ক-৩, কেনপার্ক-৪, কেনপার্ক-৫, হেলা ক্লথিং বাংলাদেশ, ভারটেক্স ওয়ার, এনভয় টেক্সটাইল স্পিনিং, মেঘনা ইন্টিম্যাটস, সামস স্টাইলিং ওয়ার, অবনি নিটওয়ার, ব্যাবিলন শার্ট ফ্যাক্টরি, ক্যাজুয়াল ওয়ার প্রোডাক্টশন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ওভেন, অবনি ফ্যাশন, ভিজুয়াল ইকো স্টাইলওয়ার, এম অ্যান্ড ইউ ফ্যাশন, জিওবানা ডেনিম, বার্ডস এ অ্যান্ড জেড, অ্যালফাবেট ফ্যাশন, আগামী অ্যাপারেলস, ফকির গার্মেন্টস, আরএস কম্পোজিট, পানউইন ডিজাইনস, টোপাজ ড্রেজ, রিজেন্সি গার্মেন্টস, ইপিআইসি গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, পিয়ার্স গার্মেন্টস কোম্পানি, কসমোপলিটান ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনিভোগ গার্মেন্টস কোম্পানি, সায়হাম নিট কম্পোজিট, মিউচুয়াল অ্যাপারেলস, প্রোগ্রেস অ্যাপারেলস বাংলাদেশ, নাওমি সুয়েটার্স, তানিমা নিট কম্পোজিট, প্রাইম প্লাটিনাম ফ্যাশন, গ্রিন টেক্সটাইল, ইএসকেই ক্লথিং, হামজা ক্লথিং, সাউথ স্কয়ার, স্নোটেক্স, ভায়োলেট ফ্যাশন, ভিবগোয়ার নিট কম্পোজিট, কনসেপ্ট নিটিং, ব্র্যান্ড অ্যাপারেলস, কমফিট রেইনবো ডাইন অ্যান্ড ফ্যাশন, কমফিট গোল্ডেন, কমফিট গ্রিন সেন্টার, ফিল অ্যাপারেলস, অ্যাপারেলস প্লাস, ইউনিটেক্স কম্পোজিট মিলস, আর্কাই নিট ডাইং মিলস, আলিজা ফ্যাশন, ফ্যাশন ট্রাউজারস, রুমানা ফ্যাশন, গ্ল্যামার ড্রেস, সান্টা নিট ফ্যাশন, মাস ফেব্রিক্স, জিন্নাত নিটওয়ার, এজি ড্রেস, বারসন ফ্যাশন, এস-সিক্স ফ্যাশন, ইপিলিয়ন ফ্যাশন, ইন্টারন্যাশনাল ক্ল্যাসিক, নিউ লাইন সোয়েটারস, মেনহাজ স্টাইল, উইরো ডেনিম অ্যান্ড ওয়াসিং, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, রাইজিং ফ্যাশন এক্সেসরিস, এনডিএইচ ডাইং ফ্যাক্টরি, মেগা সোয়েটার কম্পোজিট, পুরুডেন্ট ফ্যাশন, আম্বার ওয়াস, উইনটেক্স গার্মেন্টস, রিফাত ফ্যাশন, আমান গ্রাফিকস ইকো স্টুডিও, হামিম ডেনিম, এমএইচ নিট, এমএইচ স্পোর্টস ওয়ার, কেডিএস ফ্যাশন, আজমাট অ্যাপারেল, রাসেল গার্মেন্টস, টেক্সপ্রো ইকো অ্যাপারেল, ডেকো গার্মেন্ট, ইক্সিকিউটিভ গ্রিনটেক্স, সিএ নিটওয়ার, ওয়াকফি নিট ফেব্রিক্স, ইসলাম ইকো গার্মেন্ট, নিও জিপার কোম্পানি, পিমকি অ্যাপারেল, ইস্ট-ওয়েস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, সাইনেস্ট এক্সপোর্ট ভিলেজ, পিনাকি ইকো অ্যাপারেল, মাহিন এক্সেসোরিস, সিমবা ফ্যাশন, নাসা হাইটেক স্টাইল, নাবা নিট কম্পোজিট, ট্রাস্ট নিটওয়ার, সান ফ্যাশন ওয়ার, আলয়না ফ্যাশন, অ্যাপারেল মেকারস, ডেভা, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং, কিউট ড্রেস, অ্যাপারেল ২১, বারাকা অ্যাপারেল, তাহের অ্যাপারেল, বারিধি গার্মেন্টস, মেঘনা ডেনিমস, ফারইস্ট স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ, কাজীপুর ফ্যাশন, অ্যাডামস স্টাইল, মাহমুদ ফ্যাশন, রিয়ালাইন্স ড্রেস, রহমত ফ্যাশন, অরুনিমা নিটওয়ার, ইব্রাহিম টেক্সটাইল, নিট হেভেন, টিমটেক্স ইকো অ্যাপারেল, এবিসি নিটওয়ার, নিট জোন মুড, এবিসি ফ্যাশন, ফাতুল্লা অ্যাপারেল, ব্লু প্লানেট ফ্যাশন ওয়ার, কানিজ ফ্যাশন, সাবলিন গ্রিনটেক্স, অল ওয়েদার ফ্যাশন, সাউদার্ন গার্মেন্টস, পিএন কম্পোজিট, লাইলা স্টাইল, কেআরসি কম্পোজিট টেক্সটাইল, জেএফকে ফ্যাশন, মিথিলা ডাইং, কোর্নি অ্যাপারেল, আমির শার্ট, ম্যাক্সকোন ইন্টারন্যাশনাল বিডি, ফ্রেন্ডস নিটিংস, লিরিক্সস ইন্ডাস্ট্রিজ, নিট এশিয়া, বিসমিল্লাহ আরএমজি প্রোজেক্ট, এনএইচটি ফ্যাশন, অ্যাসপেয়ার গার্মেন্টস, ডিভাইন গার্মেন্টস, রেনেসাস বেরিন্ড, আয়েশা ক্লথিং, প্রেটি সোয়েটারস, আরগোন জিন্স, কুন টং অ্যাপারেলস, প্রাইড ক্লথিং, ব্র্যান্ডডিক্স বাংলাদেশ গ্রিন প্রজেক্ট, যাই যাই মিলস বিডি, সি ব্লু টেক্সটাইল ও সি টেক্স লিমিটেড। এসবের মাঝে কোনো কোনো গ্রুপের ৪-৫টি কারখানা সবুজ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।   

এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আমাদের এ শিল্পে এক নীরব সবুজ বিল্পব ঘটেছে। বাংলাদেশ এখন পরিবেশবান্ধব গ্রিন তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপনে নেতৃস্থানীয় অবস্থানে রয়েছে।