ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

যক্ষ্মা প্রতিরোধের উপায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৮ এএম, ২৪ মার্চ ২০১৯ রবিবার

আজ ২৪ মার্চ, বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। যক্ষ্মা মূলত একটি সংক্রামক রোগ। বলা হচ্ছে, সংক্রামক রোগের ভেতর সারা পৃথিবীতে যক্ষ্মাই ‘টপ কিলার’ বা ‘শীর্ষ খুনি’। মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামে এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ী। জীবাণুর সঙ্গে মিলিয়ে ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম রাখা হয়েছে ‘টিউবারকুলোসিস’। সংক্ষেপে টিবি নামেই সবাই চেনে। এককালে যক্ষ্মাকে ‘ক্ষয় রোগ’ বা ‘রাজ রোগ’ বলা হতো। কারণ, এই রোগে রোগী খুবই শীর্ণ হয়ে পড়ে, আর মৃত্যু ছিল প্রায় অবধারিত।

যক্ষ্মা এখন নিরাময়যোগ্য অসুখ। তবে এর কোনো প্রতিষেধক বা ভ্যাক্সিন নেই। যেকোনো বয়সে যক্ষ্মা হতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে এদের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুসফুসে। তবে যক্ষ্মা প্রায় যেকোনো অঙ্গে হতে পারে। হয় না কেবল হৃৎপিণ্ড, অগ্ন্যাশয়, ঐচ্ছিক মাংসপেশি ও থাইরয়েড গ্রন্থিতে।

সচেতনতা -

মাস্ক ব্যবহার করুন :

আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার সময় প্রতিরোধী মাস্ক ও গ্লাভস পরুন। রোগীর কাছ থেকে আসার পর জীবাণুনাশক পরিস্কারক দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিন। ভিড়, গুমোট পরিবেশ এবং অস্বাস্থ্যকর স্থান এড়িয়ে চলুন।

পরিচ্ছন্ন থাকুন :

বাইরে থেকে আসার পর বা কোন কিছু খাওয়ার পূর্বে ভালো করে হাত ধোয়াকে উপেক্ষা করেন অনেকেই। সুস্থ থাকার জন্য ও জীবাণুর সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য এই সহজ ও সাধারণ অভ্যাসটিকে অবহেলা করা উচিৎ নয়।

পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে :

অনেককেই ঘুমের সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। যদিও সুস্থ থাকার জন্য এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো প্রয়োজন।

ইমিউনিটির উন্নতি ঘটান :

আপনার খাদ্য তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করুন। প্রতিদিন তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খান। যদি এটা সম্ভব না হয় তাহলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করুন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেকোন ধরনের রোগ বা স্ট্রেসের কারণে সৃষ্ট ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে এবং কোষের মেরামতে সাহায্য করে।

 

পুষ্টি সম্পন্ন খাবার গ্রহণ করুন :

লো – কার্বোহাইড্রেট ডায়েট অনুসরণ করবেন না। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং ফ্যাট এর সমন্বয় করে খাদ্য গ্রহণ করুন। কারণ এদের প্রত্যেকেরই ভূমিকা আছে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে।

প্রোটিন গ্রহণ করুন :

নারীদের প্রতিদিন ৪৬ গ্রাম এবং পুরুষের ৫৬ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিৎ। প্রোটিন কোষের গঠনে এবং কোষের মেরামতে সাহায্য করে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন :

সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন। রক্ত সংবহনের উন্নতি হলে ইমিউনিটিরও উন্নতি হয়।

মেডিটেশন করুন :

প্রতিদিন কিছুটা সময় মেডিটেশন করুন। এর ফলে আপনার প্রাত্যহিক স্ট্রেস কমবে এবং আপনার ইমিউন সিস্টেমের উপরও প্রভাব ফেলবে।

 

শিশুদের টিকা দিন :

যেহেতু নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ করাই ভালো। তাই আপনার সন্তানকে বিসিজি (Bacillus Calmette-Guerin) টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করুন TB এর হাত থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য।

ঔষধের কোর্স সম্পন্ন করুন :

যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসকের নির্দেশিত ঔষধ গ্রহণ করা মাঝ পথে বন্ধ করে দিলে যক্ষ্মা সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধী রুপ তৈরি হয়। এই রেজিস্টেন্ট ব্যাকটেরিয়া যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের শরীরে যায় এবং মাল্টিপল ড্রাগ রেজিস্টেন্ট টিবি (MDR TB) তে আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তাই টিবিতে আক্রান্তদের ঔষধের নির্ধারিত কোর্স সম্পন্ন করা উচিৎ।

স্ট্রেসকে দূরে রাখুন :

যক্ষ্মা সহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাকে বৃদ্ধি করে স্ট্রেস। তাই যতটা সম্ভব স্ট্রেস থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

এসএ/