মন ও দেহের যত্নে কী করবেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪৭ পিএম, ২৭ মার্চ ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১১:৩৬ পিএম, ২৭ মার্চ ২০১৯ বুধবার
বলা হয় মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সৃষ্টির সকল জীব থেকেই সে আলাদা। আলাদা তার পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের কারণে। মানুষ অনুভব করতে পারে, আলাদা করতে পারে কোনটা খারাপ কোনটা ভালো। অন্যকোনো প্রাণী যা করতে পারে না। ধরুন, অপরাধ করার পর এক সেকেন্ডের জন্যেও আপনার অনুশোচনা হয়, অন্যায় করার সময় আপনার সত্তা একবার হলেও জানান দেয়, এ-তো অন্যায়। মানুষের একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে যা তাকে বুঝতে শেখায়, ভাবতে শেখায় জীবনবোধ সম্পর্কে।
মানুষকে যদি বাহ্যিকভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হয়, তাহলে একটা বাউন্ডারির মাধ্যমে করতে হবে। একটা আকার, একটা অবয়ব, একটা সীমারেখা। যার ভেতরে অনেকগুলো নাড়িভুঁড়ি, হাড়, মাংস! শুধু কি তাই? বিচিত্র সব কোষ, হাড়, ধমনী, গ্ল্যান্ড, অরগান, হরমোন, এনজাইম, আরো কত কী! আমরা ভাবছি শতাব্দীর সবচেয়ে বড় এবং ক্ষমতাশীল টেকনোলোজি হলো আইফোন এক্স, রোবট কিংবা নিত্য নতুন সব উদ্ভাবন। কিন্তু এই মানব দেহ? মুহূর্তের মধ্যে কত সব কেমিকেল রি-অ্যাকশন যে ঘটছে কল্পনাও করতে পারবেন না! একটা কোষ তার ভেতর মাইটোকন্ড্রিয়া, তাতে উৎপন্ন হয় শক্তি, কিংবা ঘণ্টায় ৮-১০ লিটার রক্ত কিডনি অনায়াসেই পরিশোধন করছে, আর দিনে ১৪৫ গ্যালন। কিন্তু আমরা আশ্চর্য হই ডায়ালাইসিস মেশিন দেখে, নিজের দেহে যে অটোমেটিক ডায়ালাইসিস চলছে লক্ষ করি না। আমরা কি জানি যে, চোখের অক্ষিপটে রয়েছে ১০টা লেয়ার? লিভার বা কিডনি অপারেশনের (কেটে ফেলার) পর আবার আগের সাইজে চলে আসে, শরীরের ৫-৬ লিটার রক্ত প্রতি মিনিটে তিন বার পুরো দেহ ভ্রমণ করে, হিসাবে দাঁড়ায় প্রায় ১৯০০০কিমি। শ্বেত রক্তকণিকা আপনাকে পাহারা দিচ্ছে কড়া শাসনে, নতুবা আর ডিএনএ-র কথা কী বলব? আপনার দাদার দাদার দাদার দাদা, যাকে আপনি কোনোদিন দেখেন নাই, তার ইনফরমেশনও আছে তাতে-হয়তো আপনার কোনো অঙ্গ কিংবা আচরণ নিয়ন্ত্রণ করছে সেই ইনফরমেশন।
কখনো ভেবেছি কি এই শরীর নিয়ে? একটা বাউন্ডারিতে ঘেরা এই অবয়ব, কত নিখুঁত করে সৃজন করা হয়েছে। ব্রেন নিয়ে আর নাই বা বলি! কিন্তু আমরা ভাবি, কী নাই আমার। আক্ষেপ হয় কেন আমার ওই ফোনটা নেই, গাড়িটা নেই, বাড়ি হলো না, ব্যাংক ব্যালেন্স কম! কিন্তু নিজের দেহের দিকে তাকাই না আমরা!
পুরো বিশ্বের সকল অলৌকিকতাকে হার মানায় আমাদের এই দেহ, এর সবকিছুই হচ্ছে কোনো কমান্ড ছাড়া, অটোমেটিক। নিরলসভাবে আপনার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করছে, আপনার হুকুম দিতে হচ্ছে না। একটু ভেবে দেখুন যদি কন্ট্রোল আপনার হাতে থাকত? হার্ট চালাতে গিয়ে হয়তো কিডনি ভুলে যেতেন, ব্রেন চালাতে গিয়ে হরমোন রিলিজ! দশভুজা, দশমাথা হলেও সম্ভব হত না এতকিছু সুনিপুণভাবে মেইনটেইন করা, এত কিছু মনে রাখা! অথচ এই শরীরের মূল্য দিতে ভুলে যাই, এমন এক দেহ যাকে আমার চালাতে হয় না, আমি বলার আগেই সব করে রাখে। কৃতজ্ঞতা জানাতে পারি না এই হাত, পা, চোখের জন্যে। কৃতজ্ঞতা জানাতে পারি না এই কণ্ঠের জন্যে, যে বলিষ্ঠ স্বরে কাউকে বকতে পারছি, মা বলে ডাকতে পারছি। এই কানের জন্যে, যেখানে সব শুনতে পাচ্ছি। এই চোখের জন্যে, যা ডি-এসএলআর ক্যামেরা থেকেও শক্তিশালী, যার বদৌলতে এই পুরো বিশ্ব দেখতে পারছি।
মাঝে মাঝে অনেকেই হয়তো ভাবি-স্রষ্টা এত বড় বিশ্ব ব্রক্ষ্মাণ্ড করেছেন অথচ আমাকে বানিয়েছেন কত ক্ষুদ্র! হয়তো আমাকে দিয়ে বড় কিছু হবে না! এই শরীর যেখানে এত কিছু ঘটছে যা সকল আবিষ্কারকেও হার মানাতে সক্ষম, এই আমি! তাহলে আমি কেন পারব না? আমরা চাইলেই এখন দেহের কেমিকেল রি-অ্যাকশন বাইরে থেকে চালাতে পারব না! চাইলেই ১৪৫ গ্যালন রক্ত একটা কৃত্রিম চেম্বারে সারকুলেট করতে পারব না! কিন্তু আমরা ভুলে যাই কী নিয়ে হাঁটছি আমরা! কী বহন করছি! এই দেহ যদি ভালো না থাকে, তাহলে আমরা ভালো থাকব না। ভেতরে আনন্দ থাকলে, আমরাও চারপাশে আনন্দ ছড়াতে পারব। আর যদি কষ্ট থাকে, তাহলে চারপাশে দুঃখ, ক্লেশ, সংঘাত! তাই নিজের ভেতরে দেখুন, এই দেহের ভেতরে তাকান, তাকে পরম মমতায় অবলোকন করুন। দেহকে কখনো কি ধন্যবাদ দিয়েছি? মমতায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি? জীবন তখনই সার্থক হবে যখন আমরা এই দেহটাকে নিয়ে ভাবব, দেহটাকে জানব, তাকে বুঝব, কৃতজ্ঞতা জানাব দেহের প্রতি, স্রষ্টার প্রতি-এই অসাধারণ টেকনোলজির জন্যে।
একসময় একজন ভিক্ষাজীবি সন্ন্যাসী ছিল। তার পানি খাওয়ারও কোনো পাত্র ছিল না। তার কিছুই ছিল না। তিনি খালিপায়ে হাঁটতেন। থাকার কোনা জায়গা ছিল না। তাই তিনি একজন কুমারের কাছে গেল এবং বার বার তার কাছে চাইতে লাগল।
দয়া করে আমাকে একটি পাত্র দিন, আমি এটিকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করব। দশমাস ধরে চাওয়ার পর কুমার একটি পাত্র তৈরি করে তাকে দিল। সেই সন্ন্যাসী পাত্রটি গ্রহণ করলেন এবং তিনি এটিকে দেখতে লাগলেন। মনে মনে ভাবছিলেন, আমি এতদিনে একটি পাত্র পেয়েছি! তিনি আনন্দে নাচতে শুরু করলেন। নাচতে নাচতে যখন তিনি পাত্রটিকে উপড়ে ছুঁড়লেন, আনন্দের আতিশয্যে এটিকে ধরতে ভুলে গেলেন। এটি দক্ষিণ ভারতের একটি গল্প। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে যে, আমাদের দেহটিও একটি পাত্র। আমরা দশ মাস ভিক্ষা করার পর এই দেহটি পেয়েছি। গর্ভাবস্থায় নয় মাস এবং যখন দশ মাস শেষ হয় তখন আমরা বেরিয়ে আসি। কিন্তু যখন আমরা এই দেহটি পাই তখনই এমনি এমনি পাওয়ায় আনন্দের আতিশয্যে দেহের ওপর অত্যাচার শুরু করি।
যত্নায়ন বা মনযোগ দেওয়া এ শব্দটির অর্থ হলো, দেহ-মনের সুস্থতা ও প্রশান্তির জন্যে যথাযথ মনোযোগ ও বিজ্ঞানসম্মত যত্ন। আমাদের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্যে এটি হতে পারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর একটি অনুশীলন। দৈনন্দিন জীবনযাপনে নানা ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সচেতন-অসচেতনভাবে আমাদের দেহ-অভ্যন্তরে এবং মনের গভীরে নানারকম স্ট্রেস ও টক্সিন বা বিষাণুর সৃষ্টি হয়, যা আমরা বের করে দিতে পারি এই যত্নায়নের মাধ্যমে। যত কার্যকরভাবে এটা আমরা করতে পারব ততই বাড়বে আমাদের সুস্থতার শক্তি ও প্রশান্তির স্থায়িত্ব।
এ জন্য কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে যা আমরা অনুসরণ করতে পারি:
১. দম : সঠিকভাবে দম নেয়া ও ছাড়ার মাধ্যমে আমরা দেহকে অক্সিজেন-সমৃদ্ধ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডমুক্ত করতে পারি। তাই দম যত সঠিক হবে তত আমাদের এনার্জি লেভেল বাড়তে থাকবে। সারাদিন পরিশ্রম করেও দেহ থাকবে ক্লান্তিহীন ও কর্মক্ষম। এজন্যে দিনে অন্তত পাঁচ বার উজ্জীবন বা বিশেষ নিয়মে বুক ফুলিয়ে দম নেয়ার অভ্যাস করুন। দিন কয়েকের মধ্যে একটা চনমনে পরিবর্তন নিজেই অনুভব করবেন।
২. সঠিক খাদ্যাভ্যাস : সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। কারণ খাবারের মধ্য দিয়ে যাতে দেহে টক্সিন প্রবেশ না করে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তাই সবসময় রাসায়নিকমুক্ত প্রাকৃতিক ও তাজা খাবার এবং মৌসুমি ফলমূল খেতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হবে একটাই-স্বাস্থ্যের জন্যে যা ভালো সেটাই খাব। আর টক্সিনযুক্ত খাবার ও পানীয়, যেমন : সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত তৈলাক্ত-ভাজাপোড়া ও অধিক চিনিযুক্ত খাবার, এলকোহল, কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংকস, ধূমপান অবশ্যই বর্জন করতে হবে।
৩. ব্যায়াম : সব ধরনের ব্যায়ামের মধ্যে সবচেয়ে সহজ, আধুনিক ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যায়াম হচ্ছে কোয়ান্টাম ব্যায়াম। যা আমাদের শরীরের হরমোনাল, বায়ো-ইলেক্ট্রিক্যাল ও নার্ভাস সিস্টেমসহ দেহের সবগুলো সিস্টেমের মধ্যে আন্তঃপারস্পরিক ভারসাম্য বজায় রাখে দারুণভাবে। এর পাশাপাশি প্রতিদিন (সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন) ২০ থেকে ২৫ মিনিট হাঁটা সুস্থতার জন্যে অত্যন্ত সহায়ক। সুস্বাস্থ্যের জন্যে হাঁটা ও ব্যায়ামের বহু রকম উপকার তো আছেই, এ-ছাড়াও এতে ঘামরূপে ত্বকের মধ্য দিয়ে অনেক ক্ষতিকর টক্সিন দূরীভূত হয়ে যায়।
৪. হজম : এর জন্যে আমাদের খাবারটাই এমন সুপাচ্য হওয়া উচিত যেন সহজে হজম হয়। দ্বিতীয়ত, খাবার গ্রহণের পরিমাণ। এ ব্যাপারে নবীজী (স)-এর শিক্ষা হচ্ছে, খাওয়ার সময় পাকস্থলীর এক তৃতীয়াংশ শক্ত খাবার, এক তৃতীয়াংশ তরল এবং এক তৃতীয়াংশ ফাঁকা রাখো। অর্থাৎ একটু ক্ষুধাভাব থাকতেই খাওয়া শেষ করা। পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘ গবেষণায় দেখা গেছে, এমন খাদ্যাভ্যাসে হজম ভালো হয়।
৫. রেচন : রেচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্রাব-পায়খানার সাথে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন নির্গত হয়। সুস্থতার জন্যে এসব বর্জ্য পদার্থ প্রতিদিন বেরিয়ে যাওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে দেহের সার্বিক পরিচ্ছন্নতাও সুন্দরভাবে বজায় থাকে। সহজপাচ্য খাবার, ব্যায়াম ও হাঁটা সুরেচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
এই যে ব্যায়াম ও হাঁটা, অফিসের কাজের ফাঁকে প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট ব্যায়াম করার আহ্বান জানিয়েছেন পেশায় চিকিৎসক মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি বলেন, পারলে এয়ারকন্ডিশন রুম থেকে বেরিয়ে এসে ব্যায়াম করুন। তবে সবাই একসঙ্গে বেরিয়ে পড়বেন না, গ্রুপ গ্রুপ করে বের হন। ১৫ মিনিট পরে আবার কাজে ফিরে যান। তবে ব্যায়ামের পর কফি খাওয়া বা খোশ গল্পে মেতে উঠতে নিষেধ করেছেন ডাক্তার মাহাথির। তার মতে, এটি করলে ব্যায়াম কোনো কাজে আসবে না।
বর্তমান সময়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবাই একটানা কাজ করতে থাকে। এটিকে ক্ষতির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন মাহাথির। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে কোনো পেশি ব্যবহৃত না হলে সেটি দুর্বল হয়ে পড়ে। দীর্ঘজীবন লাভ করতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই একটিভ থাকতে হবে। মাহাথিরের পরামর্শ হলো, কয়েক মিনিটের জন্যে হলেও শরীরকে নাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে হাঁটা একটা কার্যকর উপায়।
আসলে পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকে যিনিই বলুন না কেন, স্বাস্থ্যসুরক্ষার ক্ষেত্রে এগুলো শাশ্বত সত্য কথা।
ফাস্টফুড ও চিনি দুটোই বিষ। চিনির উৎস হতে পারে ফল। বাংলাদেশের ওপর স্রষ্টার বিশেষ রহমত-আমাদের এত বিচিত্র ফল রয়েছে। এবং যে সময়ে যে ফল পাওয়া যায়, সেই ঋতুর প্রতিষেধকও থাকে সেই ফলে। আরো কী কী খাব বা খাব না, দেহের সুরক্ষায় আর কী কী করতে পারি এবং নিরাময়ের জন্যে কী কী করণীয় তার দিক-নির্দেশনা রয়েছে এই তিনটি কণিকায়।
আমরা আসলে অধিকাংশ সময়ই সুস্থ থাকি। অসুস্থ হই কখনো কখনো। আমাদের ৭৫ ভাগ রোগের কারণ হলো শরীরের ভেতরে সৃষ্টি হওয়া টক্সিন, যার উৎস হতে পারে নেতিচিন্তা, অস্বাস্থ্যকর খাবার, অসুস্থ বিনোদন, মাত্রাতিরিক্ত আবেগীয় সম্পর্ক ও শখ, ভ্রান্ত জীবনদৃষ্টি ইত্যাদি। বাকি ২৫ ভাগ রোগের কারণ হতে পারে ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসজনিত, যথাযথ পুষ্টির অভাব ও ভুল ওষুধ বা সার্জারির জটিলতা।
সাধারণত দুভাবে আমরা এ বিষাণুতে আক্রান্ত হতে পারি। প্রথমত, মন অসুস্থ হলে টক্সিন তৈরি হতে পারে। যেমন : দুশ্চিন্তা রাগ ক্ষোভ ঘৃণা ঈর্ষা গীবত থেকে টক্সিন সৃষ্টি হতে পারে। আবার বস্তুগত কোনো অস্তিত্ব নেই এমন কিছু অর্থাৎ দৃষ্টিভঙ্গিগত ভুল থেকেও টক্সিন সৃষ্টি হতে পারে।
তথাকথিত বিনোদনের ফলেও দেহ-মনে স্ট্রেস ও টক্সিন সৃষ্টি হতে পারে। যেমন : টিভিতে অধিকাংশ সময়ই আমরা দেখছি ভায়োলেন্স হিংসা সন্ত্রাস মারামারি চক্রান্ত ষড়যন্ত্র পরকীয়া। টিভিতে দেখা এসব ঘটনা এবং চরিত্র আমাদেরকে নেতিবাচকভাবে যথেষ্ট প্রভাবিত করে। বাস্তব জীবনেও অবচেতনভাবে প্রলুব্ধ করে এসব ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে। ফলে আমাদের ভেতরে সৃষ্টি হয় টেনশন হতাশা আসক্তি আর অন্তর্দ্বন্দ্ব। এসব থেকেও দেহের ভেতরে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ টক্সিন।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন কারণেও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে আমাদের শরীরে টক্সিন প্রবেশ করতে পারে নানাভাবে। যেমন : আমরা এখন প্রতিনিয়ত টিভি, মোবাইল ও স্মার্টফোনসহ ঘরে-বাইরে ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের রেডিয়েশনের সম্মুখীন হচ্ছি। মোবাইল টাওয়ার থেকে প্রতিনিয়ত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষতিকর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রশ্মি। বিজ্ঞানীরা একে বলছেন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্টর্ম, যা মানবদেহের জন্যে ক্ষতিকর এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
আমরা লক্ষ করলে দেখব, দেহে টক্সিন বেশি হলে এসিডিটি বেড়ে যায়। এসিডিক অবস্থার বিপরীত হচ্ছে এলকালাইন অবস্থা। এলকালাইন হচ্ছে দেহের এমন এক অবস্থা যখন আমরা প্রশান্ত থাকি, সুস্থ থাকি। আর দেহকে সবসময় এই এলকালাইন অবস্থায় রাখার জন্যেই প্রয়োজন মনের প্রশান্তি। মন স্থির না হলে, মনে প্রশান্তি না এলে দেহে প্রশান্তি আসবে না। এলকালাইন বা প্রশান্ত অবস্থা একজন মানুষকে স্ট্রেস ও টক্সিনসৃষ্ট ৭৫ ভাগ রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, মন যখন প্রশান্ত থাকে, তখন মস্তিষ্কও মনের নির্দেশ অনুসরণ করে।
এসি