অধ্যক্ষের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৫৯ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:২৩ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৯ বৃহস্পতিবার
অধ্যক্ষের আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন একসপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ২ টার সময় ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে থেকে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে পরিবহন সংকট নিরসনসহ ৫ দফা দাবিতে আজ সকাল ১১ টায় ঢাকা কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন তারা।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ১০ থেকে ১৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লার সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কলেজ ক্যাস্পাসে নতুন বাস সংযুক্তের আশ্বাস দেন। অধ্যক্ষের এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে।
আন্দোলনের আহ্বায়ক মুশফিকুর রহিম বলেন, বাস সমস্যা সমাধানের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি আমরা। সর্বশেষ এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আমাদের অধ্যক্ষের কার্যালয় অবরোধের মতো কর্মসূচি দিতে হয়েছে। শিগগিরই সমস্যা সমাধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লাহ বলেন, বাসের জন্য অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে আবেদন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বিআরটিসির কাছে ভাড়ায় ২টি ডাবল বাস চেয়েছি। আশা করছি শিগগিরই বাস সমস্যার সমাধান হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২০ বছর যাবৎ কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বাস দেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাদুরঝোলা হয়ে কলেজে বাসে করে যাতায়াত করছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের বাস সংকট থাকলেও তা সমাধানে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কলেজ প্রশাসন।
এবিষয় জানতে চাইলে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির রানা বলেন, ঢাকা কলেজের ২৪ হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতের জন্য বাস রয়েছে মাত্র চারটি। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো শিক্ষার্থীকে। তাই আমি মনে করে এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা উচিত।
এবিষয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফুহাদ হাসান জানান, শিক্ষার্থীর যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া উচিত। আমরা কলেজ প্রসাশনের কাছে দাবি জানিয়েছি শিক্ষার্থীদের আবেদন মেনে নিতে।
ছাত্রলীগের সদস্য কাওছার হাসান বলেন, কলেজে পরিবহন সংকটের কারণে বাসে ধারণ ক্ষমতার অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। ফলে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই আমি মনে করি শিক্ষার্থীর দাবি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে আবাসিক হলের ব্যবস্থা আছে ২ হাজারেরও কম। বাস আছে মাত্র ৪টি। ফলে ক্লাস করতে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া, ক্যান্টিনে উচ্চ মূল্যের খাবার, ক্যাম্পাসে যথাযথ গ্রন্থাগার না থাকা, জরাজির্ণ আবাসিক হল, রিডিং রুম সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের আন্দোলনে নামতে হয়েছে।
টিআর/