সড়কের জঞ্জাল সরাতে সময় চাইলেন মেয়র আতিক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫৮ পিএম, ৪ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:৩৮ পিএম, ৪ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ঢাকায় নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে ‘অনেক জঞ্জাল’ সরাতে হবে মন্তব্য করে এর জন্য সময় চেয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসহ (বিইউপি) কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে একথা বলেন তিনি।
গত ১৯ মার্চ রাজধানীর নদ্দায় প্রগতি সরণির বসুন্ধরা গেইট এলাকায় বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে ফের রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। মেয়রের আশ্বাসে রাস্তা ছেড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।
সে বিষয়গুলোতে অগ্রগতি জানাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মেয়রের এই বৈঠক হয়। সেখানে বিইউপি ছাড়াও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অংশ নেন।
সড়কে যানবাহনের ফিটনেস টেস্টে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নে বিআরটিএকে নিয়মনীতি মেনে চলা, ঢাকা মহানগরের পরিবহন ব্যবস্থাকে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে নিয়ে আসা, চালকদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা, শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া, নগরে ওভারব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন নিয়ে সভায় আলোচনা করেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের উদ্দেশে মেয়র আতিকুল বলেন, তোমাদের দাবি-দাওয়ার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না। তবে এসব দাবি পূরণ সময়ের ব্যাপার। আমাদের আরো সময় দিতে হবে। আমরা সব দাবি দাওয়াই ধীরে ধীরে পূরণ করব। আমাদের দেখতে হবে কোথায় দ্রুত কাজ করতে হবে। আর কিছু ক্ষেত্রে তো লংটার্ম চিকিৎসা দিতে হবে। পারসেপশন বুঝতে হবে আমাদের।
শিক্ষার্থীদের মতো সাধারণ জনগণকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অনেক জঞ্জাল সরাতে হবে নিরাপদ সড়ক পেতে গেলে। লেটস মুভ টুগেদার।
মালিবাগ রেলগেইট থেকে প্রগতি সরণির কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সড়ককে ‘মডেল রোড’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা জানান মেয়র।
তিনি বলেন, বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট এই সড়ক নিরাপদ করতে তাদের পরামর্শ দেবে। তারপর এই সড়কে কোথায় কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে, তা ঠিক করা হবে।
ঢাকার সড়কে যত্রতত্র বাস থামালে দণ্ডের বিধান করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হয়েছে। বাসগুলো যদি এই যাত্রী ছাউনিতে গিয়ে না দাঁড়ায় তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বিআরটিএর নানা দুর্নীতি নিয়ে সভায় তোপের মুখে পড়েন এই বিভাগের কর্মকর্তারা।
তাদের সতর্ক করে আতিকুল ইসলাম বলেন, জবাবদিহি নিশ্চিৎ করতে হবে। পুরো সিস্টেমটাকে ইমিডিয়েটলি একটা অটোমেশনের মধ্যে আনতে হবে। হালকা যানবাহনের লাইসেন্স নিয়ে কেউ যেন ভারী যানবাহন চালানোর অনুমতি না পায়।সেই সাথে ভারী যানবাহনের লাইসেন্স পেতে যে জটিলতা আছে, তাও নিরসন করতে হবে।
সভায় বাস মালিক সমিতির প্রতিনিধিরাও এসেছিলেন।মেয়র মালিকপক্ষকে চুক্তিভিত্তিক চালক নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার অনুরোধ জানান।
নিরাপদ সড়কের দাবিগুলো নিয়ে বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে মে মাসের শুরুতে আবারও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাই, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, ট্রাফিক উত্তরের ডিসি প্রবীর কুমার রায়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ পরিচালক নিয়াজ আহমেদও এসেছিলেন।
আরকে//