ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

ইবির সিন্ডিকেট সভায় ৪ শিক্ষকের শাস্তি

ইবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৮:৩৭ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৪১ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০১৯ শুক্রবার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৪ তম সিন্ডিকেট সভায় ৪ শিক্ষকের শাস্তি প্রদানসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকায় এক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত এবং একজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠনো হয়েছে। একই সাথে সভায় আরও দুই শিক্ষককে পদ অবনমন করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের বাসভবনে এ সিন্ডিকেট সভা শরু হয়ে শেষ হয় বিকেল সাড়ে ৫টায়। সিন্ডিকেট সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আব্দুল লতিফ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন কানাডায় অবস্থান করায় ইনফরমেশন কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারিকুজ্জামানকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আব্দুল লতিফ জানান, চাকুরিচ্যুত এই শিক্ষককে ক্লাসে নিয়মিত হওয়ার জন্য বারবার চিঠি পাঠিয়েও কোন সদুউত্তর না পাওয়ায় তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

একই সাথে সিন্ডিকেট সভায় আইন বিভাগের অধ্যাপক গাজী ওমর ফারুককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন কানাডা প্রবাসী এবং সেখানকার নাগরিক। তার জন্য করা তদন্ত কমিটিকে তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পর্যন্ত দেখাতে সক্ষম হননি। তাই বিধি অনুযায়ী কোন বিদেশি নাগরিক এখানে চাকুরির সুযোগ পাবেন না। 

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ড্রাইভার মনসুর আহমেদকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। তেল চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে গত সিন্ডিকেটে ১৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়াও তার বড় অঙ্কের ব্যাংক লোন থাকায় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট সভা। তার অবসর ভাতার অর্থ দিয়ে এসব ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় দুই শিক্ষককের পদ অবনমনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। তারা হলেন ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন আজাদ এবং বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাকী বিল্লাহ বিকুল। তাদেরকে পদ অবনমন করে যথাক্রমে সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে যাদের নিকট থেকে অর্থ নেওয়া হয়েছে তাদের নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হলে তারাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট লিখিত আবেদন জানান। তবে প্রশাসনের নিকট আবেদনের আগেই তাদের টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন ওই দুই শিক্ষক।

এছাড়াও এক ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের ফলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারকে ওই ছাত্রীর সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সিন্ডিকেট সভা।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জানায়, এবিষয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তদন্তে কোন যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ওই শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীর সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আশকারী বলেন, আজকের সিন্ডিকেট সভায় ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ জন উপস্থিত ছিলেন। এ সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কিছু যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি।

কেআই/