ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

নবাবগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগ

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৮:১০ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার হলিকেয়ার এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারী হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় কবিতা রাণী ফকির (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত কবিতা রাণী ফকির  উপজেলার দক্ষিণ বালুখন্ড গ্রামের মৃত হরিচাঁন ফকিরের স্ত্রী।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলা কাশিমপুরে অবস্থিত হলিকেয়ার এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিহতের স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।

নিহতের মা অবলা বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। শুক্রবার সকালে হলিকেয়ার এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের নিয়ে আসি। হাসপাতালের মালিক জতিন্দ্র সরকারের পরামর্শের একজন জেনারেল ল্যাপারোস্কপিক এবং পাইলস বিশেষজ্ঞ দেখাই। ডাক্তার আলটাসনোগ্রাফিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা  দেয়। আমরা পরীক্ষা করে রির্পোট দেখালে আমাদের বলা হয় তার হার্নিয়া আছে।

অপারেশন না করলে যে কোনো সময় ফেটে গিয়ে ক্যান্সার হতে পারে। আমরা সেদিনই অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিলে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আমার মেয়েকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকানো হয়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও কবিতাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তাদের থেকে বলা হয় এতো পাগল হলে তো চলবে না। পরে দেখি হাসপাতালে মালিক যতিন্দ্র সরকার এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করছে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ধ্যার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কোনো আলাপ আলোচনা ছাড়াই কবিতাকে ঢাকা নেওয়ায় প্রস্তুতি নেয়। যখন ঢাকায় নেওয়ার জন্য অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে তখন মেয়েকে দেখে আমার সন্দেহ হয়েছিল। মনে হচ্ছিল ও আর নেই। অপারেশন থিয়েটারেই আমার মেয়েকে ওরা মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।  

নিহতের ছোট ভাই সুদেব বিশ্বাস বলেন, হলি কেয়ার হাসপাতালের পরামর্শে আমার বোনকে শুক্রবার রাতেই ঢাকার শেরে-বাংলা নগরের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার হলে সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউতে ঢুকানো হয়। তারপর শনিবার সকালে আমাদের জানানো হয় যে আমার বোন আর বেঁচে নেই।

নিহতের আরেক ভাই বরুন বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার বোনকে ওরা এখানেই মেরে ফেলে দায়ভার এড়ানোর জন্য এ নাটক সাজিয়েছে। এতটুকু একটি হার্নিয়ার অপারেশন করতে গিয়ে কি কোনো রোগীর মৃত্যু হয়। ওরা ডাক্তার না কসাই। আমরা এর বিচার চাই।

নিহতের মা অবলা বিশ্বাস আরও বলেন, ছয় মাস আগে আমার মেয়ের স্বামী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আমার মেয়ের আশিষ ফকির (১৬), নিরব ফকির (১৩) ও পায়েল ফকির (৮) নামে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এখন ওরা একেবারে এতিম হয়ে গেলে। ওদের আর কেউ রইলো না।

সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসা নবাবগঞ্জ থানার এস আই মো.আবুল হোসেন বলেন, নিহতের পরিবারের সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসপাতালে মালিক যতিন্দ্র সরকার বলেন, রোগীর মৃত্যু আমাদের হাসপাতালে হয়নি বলেই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার পর আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়েছে।

কেআই/