বছরে ১০০ কোটি মানুষ চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৩:৪০ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০১৯ রবিবার
প্রতিবছর সারাবিশ্বে ১০০ কোটি মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়েছে, এদের মধ্যে প্রায় ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে এবং তারা দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে চার কোটি ৮০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে এবং প্রতি বছর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্রতার শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টের হিসাব অনুযায়ী, যে কোনো পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য ৬৭ শতাংশ ব্যয় ব্যবহারকারীর নিজেরই বহন করতে হয়। সরকার ২৬ শতাংশ এবং এনজিও, প্রাইভেট সেক্টর ও ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি অবশিষ্ট ব্যয় বহন করে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, `টাকার অঙ্কে বড় হলেও প্রতি বছর বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে সরকারি বরাদ্দ হ্রাস পাচ্ছে। চলতি বছর মোট বাজেটের মাত্র ৫ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে জনপ্রতি স্বাস্থ্যসেবার জন্য সরকারিভাবে ৩৭ ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজন ৮৫ থেকে ১১২ ডলার। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত জনপ্রতি স্বাস্থ্যসেবার জন্য ৬১ ডলার, থাইল্যান্ড ২৮৫ ডলার, মালয়েশিয়া ৪১০ ডলার ব্যয় করে। বাংলাদেশের আশপাশে নেপালে ৩৬ ডলার এবং পাকিস্তানে ৩৯ ডলার ব্যয় করা হয়। এ বিষয়ে সরকারকে চিন্তা করতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, দেশের সমস্ত জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে ২০১২ সালে `সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা` কর্মসূচি চালু করা হয়। ২০১২ থেকে ২০৩২ সালের মধ্যে সমস্ত জনগোষ্ঠীকে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত পাঁচ বছর ধরে এই কর্মসূচি চলছে। কর্মসূচির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ডা.শাহাদত হোসেন মাহমুদ বলেন, `২০১২ সালে বলা হলেও কর্মসূচিটি মূলত চালু করা হয় ২০১৫ সালে।
সমস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিনটি ক্যাটাগরি করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার একটি রোডম্যাপ হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম ধাপ ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। এরই অংশ হিসেবে ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজের আওতায় টাঙ্গাইলের তিন উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে চালু করা হয় পাইলট প্রকল্প। এটি সফল হলে ধাপে ধাপে সারাদেশে এই প্রকল্প ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণও করা হয়। কিন্তু ওই প্রকল্পের যে ধরনের অগ্রগতি প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তেমন হয়নি। কর্মসূচি মূল্যায়ন করা হয়নি এখনও। মূল্যায়ন করে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।
টিআর/