ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

লিভার চিকিৎসার উন্নয়নে স্বপ্নীল স্যারের ভূমিকা

শওকত হোসাইন রোমেল

প্রকাশিত : ১০:২৭ এএম, ৮ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ১২:০৩ পিএম, ১৬ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার

প্রফেসর মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান। আমার শিক্ষক।

এই নামটি কোন সাধারণ নাম নয়। বাংলাদেশের চিকিৎসা জগতে এক অনন্য সাধারণ নাম। একজন অসাধারণ চিকিৎসক, অসাধারণ শিক্ষক, একজন অসাধারণ ব্যাক্তিত্ব এবং বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত একজন মানুষ। আমি আমার ক্ষুদ্র ডাক্তারি জীবনে এত মেধাবী মানুষ এখন পর্যন্ত দেখিনি। আমি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে, ছাত্র হিসাবে তাঁর মত একজন মেধাবী মানুষের সংস্পর্শ ও সহচর্যে আসার সুযোগ আমার হয়েছে। এদেশের লিভার চিকিৎসাকে স্যার এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। প্রচলিত লিভারের চিকিৎসার (Conventional Hepatology) বাহিরে যুগোপযোগী, অত্যাধুনিক লিভারের চিকিৎসার (Interventional Hepatology) যাত্রা স্যারের হাত দিয়েই এদেশের মাটিতে শুরু হয়েছে। বলতে দ্বিধা নেই `He is the father of interventional Hepatology in Bangladesh`। তাঁর অসামান্য দক্ষতা ও নৈপুণ্যের ফলশ্রুতিতে আজ বাংলাদেশেই বিশ্বমানের লিভারের চিকিৎসা সূচিত হয়েছে। লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় TACE (Trans arterial chemoembolization), RFA (Redio-frequency ablation) পদ্ধতি স্যারের হাত দিয়েই এদেশে শুরু হয়েছে। লিভার সিরোসিসের প্রচলিত চিকিৎসার বাহিরে Stem cell therapy এবং সর্বশেষ Liver dialysis in hepatic failure স্যারের এক অনন্য অবদান। ডঃ শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর স্যার এবং প্রফেসর মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) স্যারের যৌথ গবেষণায় আবিষ্কৃত ন্যাসভ্যাক (NASVAC) ঔষধটি বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের উপর প্রয়োগ করে অত্যন্ত আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। তাই বলতেই পারি হয়তবা আমরা হেপাটাইটিস বি ভাইরাস জয়ের দ্বারপ্রান্তে অবস্হান করছি। দেশের সীমানা পেরিয়ে আজ বাংলাদেশের হেপাটোলজী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহুলভাবে সমাদৃত। আর এটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) স্যারের জন্য। ১৬৬ টি আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্রের লেখক এবং হেপাটোলজীর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গাইডলাইন কমিটির সন্মানিত সদস্য আমাদের স্বপ্নীল স্যার।

স্যার হচ্ছেন সেই মানুষ যিনি শুধুমাত্র নিজের কথা চিন্তা না করে সবসময় উনার হেপাটোলজি পরিবারটির কথা চিন্তা করেন। আমরা আমাদের স্যারের কাছে মন খুলে সব সুবিধা অসুবিধার কথা বলতে পারি। নবীণ লিভার বিশেষজ্ঞদের আরও দক্ষ ও যুগোপযোগী করে তৈরি করার জন্য স্যার স্ব উদ্যোগে নিজের অবস্হানকে কাজে লাগিয়ে তাদের জন্য দেশে বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করে চলেছেন।

দেশের লিভার চিকিৎসার সার্বিক উন্নয়নে এই মানুষটি দিন-রাত প্রাণান্তকর পরিশ্রম করে চলেছেন। আমি স্যারকে দেখি আর ভাবি আমি কবে স্যারের মত এত বিশাল হৃদয়ের মানুষ হব ? কিংবা আদৌ কোনদিন হতে পারব কিনা ?!!

ছাত্র হিসাবে নিজের শিক্ষককে মূল্যায়ণ করে কিছু লেখা নিতান্তই ধৃষ্টতার শামিল। কিন্তু মনের আবেগ উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারলাম না বিধায় লিখে ফেললাম।

ভাল থাকবেন স্যার। মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট আপনার সুস্হতা কামণা করছি।