‘আইএমএফ-এর টাকায় চীনের ঋণ শোধ করতে পারে পাকিস্তান’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ৯ এপ্রিল ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:১১ এএম, ৯ এপ্রিল ২০১৯ মঙ্গলবার
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছিল পাকিস্তান। ছেয়েছিল মোটা অঙ্কের আর্থিক সহায়তা। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে মার্কিন সরকার। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের তিনজন প্রভাবশালী নেতা।
তাতে পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিরোধিতা করতে আর্জি জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, চীনের কাছে প্রচুর টাকার দেনা পাকিস্তানের। আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের টাকায় ওই দেনা মেটানো হতে পারে।
আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার থেকে পাকিস্তানকে অর্থ সাহায্য দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত ৫ এপ্রিল মার্কিন ট্রেজারি দফতরের সচিব স্টিভেন মনুচিন এবংমার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়োর উদ্দেশে চিঠি লেখেন কংগ্রেসের তিন নেতা, টেড ইয়োহো, অমি বেরা এবং জর্জ হোল্ডিং।
তারা জানান, ‘চীন-পাকিস্তান করিডরের প্রকল্পের আওতায় পাকিস্তানে প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে চীন। অথচ কিভাবে ওই টাকা শোধ হবে, করিডর থেকে আয়ের টাকাই বা কার ভাগে কতটা যাবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অন্য দিকে চীনের কাছে দেনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে পাকিস্তানের। তাই আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের টাকায় পাকিস্তান সরকার চীনের দেনা শোধ করতে পারে বলে আশঙ্কা আমাদের।’
এর আগে, হামবানতোতা বন্দর প্রকল্পের নামে দেনার ফাঁদে শ্রীলঙ্কাকে আটকে ফেলে চীন। উপায় না দেখে বন্দর সংলগ্ন ১৫০০ একর জমি বেজিংকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিতে বাধ্য হয় কলম্বো। চিঠিতে ট্রাম্প সরকারকে তাও স্মরণ করিয়ে দেন মার্কিন কংগ্রেসের ওই নেতারা।
তাদের কথায়, আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আগে সব কিছু খতিয়ে দেখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, ওই টাকা যেন কোনও ভাবেই যাতে দেনা শোধ করার কাজে না ব্যবহৃত হয়।
অবশ্য মার্কিন নেতাদের চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। ১৯৮০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের কাছ থেকে ১২বার আর্থিক সাহায্য আদায় করেছে পাকিস্তান। ২০১৩ সালে নওয়াজ শরিফের আমলে ৩৬ মাসে ৬৬০ কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক সাহায্য পায় তারা।
তা সত্ত্বেও আর্থিক সংস্কার ঘটাতে সফল হয়নি তারা। তাই চাহিদা মতো অর্থের জোগান না দিয়ে, চিনের কবল থেকে কীভাবে পাকিস্তানের মতো দেশগুলিকে উদ্ধার করা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারকে সেই রাস্তা খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন ওই তিন নেতা।
সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ১৯৪৫ সালে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার গঠিত হয়। প্রায় সবদেশই আইএমএফ-এর তাদের সদস্য হলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারী সকলের চেয়ে বেশি। বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে তাদের হাতে, যার আওতায় চাইলে কোনও দেশকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করতে পারে তারা।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার
এমএইচ/