বায়োপিকে জানা যাবে মমতা কেন অবিবাহিত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৪৪ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেশটির পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণ করে বলেছিলেন, “নিজের স্ত্রীকে কোনওদিন ঠিক করে দেখেছেন? আপনি কী করে জানবেন ঘরের মেয়েদের কথা, ঘরের বোনেদের কথা, ঘরের মায়েদের কথা, ঘরে স্বামীদের কথা?”
সংসার না করলেও পরিবারকে সব সময়েই তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন। দাবি করেন , রাজ্যের মা বোনেদের কথা তিনি জানেন, বলেন। কিন্তু তার বাংলার প্রত্যেকটি মা বোনের মতো নিজের ব্যক্তিগত একান্ত আপন কথা কাউকে বলেছেন কি? হয়তো বলেছেন। হয়তো বা না। তার জীবনের আদলে তৈরি হওয়া বাংলা ছবির টিজার যেন সেই সমস্ত জল্পনাকে উসকে দিয়েছ জনতা জনার্দনের কাছে।
কি দেখানো হয়েছে টিজারে? টিজারের ১৪ থেকে ২০ সেকেন্ডে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদলে তৈরি হওয়া চরিত্র ইন্দিরা তার এক পরিচিত যুবককে বলছে , “তুমি বিয়ের কথা বলছো তো, কিন্তু আমার জীবনের লক্ষ্যটা যে মানুষের জন্য কিছু করা।” এখানেই আম জনতা মনে প্রশ্ন জাগছে। মুখ্যমন্ত্রীর জীবনের আদলে তৈরি হওয়া ছবির নাম ‘বাঘিনী’।
২০১৬ সাল থেকে মুক্তির সামনে এসেও আটকে ছিল। ২০১৯ সালের মে মাসে শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেতে চলেছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক স্বয়ং। ছবির গল্প স্ক্রিপ্ট লিখেছেন পিঙ্কি পাল। প্রযোজনাও করছেন তিনি নিজে।
সদ্য মুক্তি পাওয়া ওই টিজারের আদ্যপান্ত কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক না থাকলেও একটি সাধারণ মেয়ের জীবনে প্রেমের ছোঁয়ার মতো ছবির মূল চরিত্র ইন্দিরার ব্যক্তিগত জীবনে প্রেম বিবাহের হালকা আভাস যেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রেম জীবন ছিল বা কোনও এক সময় বিবাহের দিকেও গিয়েছিল তার জীবন, এমন বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
পরিচালক নেহাল ছবিটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন নিয়ে তৈরি বলতে রাজি নন, কিন্তু টিজার যেন এই বিষয়কেই বেশি করে সামনে এনে দিচ্ছে। পরিচালক না মানলেও বছর তিনেক আগে এই ছবির পোস্টার লঞ্চের সময় ছবির প্রধান চরিত্র রুমা চক্রবর্তী অবশ্য বলেছিলেন , “এই ছবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের আদলে তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে আমার নিজের গর্ববোধ হচ্ছে।”
বিতর্কিত টিজারের অংশ প্রসঙ্গে পরিচালকের বক্তব্য, “আমি মনে করি প্রত্যেকটি সাধারণ মেয়ের জীবনে প্রেম, বিবাহ এই বিষয়গুলি আসে। আমার ছবির চরিত্রেও এসেছে। তা বলে সেটা যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবনের কথা বলছে তা কিন্তু নয়। এটা সমাজের একজন আইকনের আদলে তৈরি একটি মেয়ের চরিত্রের সাধারণ দিক। সেটাই আমি দেখাতে চেষ্টা করেছি।”
একই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই নারী স্বাধীনতার কথা বলে, আমার ছবিও সেই কথা বলেছে। ছবির চরিত্র ইন্দিরা মানুষের জন্য লড়তে রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে। এটাই মুখ্যমন্ত্রীর জীবনের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। আমি মনে করি নারী সমাজের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই তাঁকে আইকন করে দিয়েছে। সমাজের একজন আইকনের সঙ্গে আমার ছবির চরিত্রের মিল থাকা অবশ্যই সুখের বিষয়।”
মিম বানাতে ওস্তাদ সোশ্যাল মিডিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক কাঁটাছেঁড়া করেছে। ফল না মিললেও চেষ্টা চরিত্রের ত্রুটি ছিল না। বেশ কিছু মানুষের বিশ্বাস এবং অনেকেই এও আলোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না কি কোনও এক সময় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। পুরো বিষয়টি লোক মুখে চাউর হয়ে যাওয়া ছাড়া কিছুই নয় বলেই মত রাজনীতিবিদদের। কিন্তু ‘বাঘিনী’র টিজার যেন ভোটের গরম বাজারে সেই সমস্ত বিষয়গুলিকেই আবারও উসকে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: কলকাতা টুয়েন্টিফোর
এমএইচ/