ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

৩০ বছর ধরে ফাঁকা পড়ে আছে এই গ্রাম!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:০১ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার

ছোট্ট একটি গ্রাম। গোটা গ্রামে সাকুল্যে রয়েছে মাত্র ৬টা পাথরের বাড়ি। দীর্ঘদিনের অযন্তে সেগুলিও রং হারিয়ে ধূসর হয়েছে। কিন্তু গোটা গ্রাম বিগত ৩০ বছর ধরে ফাঁকা পড়ে আছে। স্থানীয়দের মুখে মুখে পরিত্যাক্ত এই গ্রামটিকে ঘিরে নানা ‘ভূতুড়ে’ কাণ্ড কারখানার কথা শোনা যায়।

স্থানীয়দের মধ্যে বিশ্বাস, সন্ধের পর এই গ্রামে নেমে আসে অশরীরী, ভূত-প্রেতরা! চতুর্দিকের পরিবেশও কেমন যেন থমথমে। এ বার এই গ্রামটিকে বিক্রির জন্য একটি অনলাইন সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। দাম ৯৬ হাজার মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭ কোটি টাকার সমান)।

স্পেনের উত্তরে গ্যালিসিয়ায় রয়েছে ‘আকোরাদা’ নামের ছোট্ট এই গ্রাম। একটা সময় এখানে বসবাস করতেন ইগলেসিয়াস পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বিগত ৩০ বছর ধরে একেবারে ফাঁকা পড়ে আছে আকোরাদা গ্রাম।

শুধুমাত্র ইগলেসিয়াস পরিবারের এক ৫৭ বছরের সদস্য তাদের পৈতৃক ভিটেমাটির দেখভাল করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু কী এমন ঘটল যে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলেন ইগলেসিয়াস পরিবারের সদস্যরা?

জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক সংকটে উপার্জন হারিয়ে বেজায় ফাঁপড়ে পড়েন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এই সময় বেঁচে থাকার তাগিদে, উপার্জনের চেষ্টায় গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাস শুরু করেন অনেকে। আর্থিক সংকটের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা হলেও দায়ি এখানকার অনুন্নত যোগাযোগ আর চিকিৎসা ব্যবস্থা।

আধুনিক জীবনযাপনের তেমন সুযোগও ছিল না এখানে। তাই একে একে ‘আকোরাদা’র বেশির ভাগ মানুষ অন্যত্র চলে গিয়েছেন। স্পেনের ‘আকোরাদা’র মতো একের পর এক প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে ইউরোপের অনেক গ্রাম।

স্পেনের গ্রামোন্নয়ন দফতরের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ শহরাঞ্চলে বসবাস করবেন। গ্রাম ছেড়ে শহরে বসবাসের এই সংখ্যাটা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। একই সঙ্গে গ্রামীণ এলাকায় বসতি ক্রমশ ফিকে হচ্ছে।

আর ‘আকোরাদা’ গ্রামকে ঘিরে যে সব ভৌতিক গল্প বা জনশ্রুতি রয়েছে, সে বিষয়ে কী বলছেন এ গ্রামের বিক্রির বরাত পাওয়া ‘এস্টেট এজেন্সি এক্সপার্ট’ আলদেয়াস আবানদোনাদাস?

আসলে বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত থাকার ফলে গ্রামের চেহারাই বদলে গিয়েছে। লোকজনের বসবাস না থাকায় চতুর্দিকের পরিবেশও স্বাভাবিক ভাবেই থমথমে। তবে আবানদোনাদাস জানান, ইউরোপের এমন অন্তত ৪০টি পরিত্যক্ত গ্রাম বিদেশিরা কিনে নিয়েছেন।

জায়গাগুলির মালিকানা বদলের পর সেগুলির পরিবেশও অনেকটাই বদলে গিয়েছে। গ্রামগুলিতে ফিরেছে প্রাণের স্পন্দন! ‘আকোরাদা’র ক্ষেত্রেও এমনটাই আশা আবানদোনাদাসের।

তথ্যসূত্র: জি নিউজ

এমএইচ/