ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

রানা প্লাজা দুর্ঘটনা

আহত শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ এখনও বেকার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:২৩ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার

রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের সুদিন ফেরেনি। তাদের মধ্যে ৫১ শতাংশ মানুষ এখনও বেকার হয়ে বসে আছে। এসব শ্রমিকের ৭৪ শতাংশ শারীরিক এবং ২৭ শতাংশ মানসিক দুর্বলতার কারণে আজও কাজে যোগদিতে পারছেন না। বাকি ৪৯ শতাংশ কর্মজীবনে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ পোশাক কারখানায় ফিরেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া প্রাতিষ্ঠানিক না হওয়ায় শ্রমিকদের এ অবস্থা। গতি কমেছে পুনর্বাসন উদ্যোগেও। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের ওপর পরিচালিত এক জরিপ থেকে এ তথ্য তুলে ধরেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা অ্যাকশনএইড।

রানা প্লাজা ধসের ৬ বছর পূর্তি সামনে রেখে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এই জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। দুর্ঘটনায় আহত এবং মৃত শ্রমিকের পরিবারদের সঙ্গে ২০১৩ সাল থেকেই কাজ করে আসছে অ্যাকশনএইড। ২০১৩ সালে প্রায় ১৪০০ আহত শ্রমিকের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে সংস্থাটি। পাশাপাশি এসব শ্রমিক পরিবারের অগ্রগতি লক্ষ্য করতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও ২০০ জনের ওপর জরিপ পরিচালনা করেছে অ্যাকশনএইড।

গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠানের শুরুতে সংস্থাটির ম্যানেজার নুজহাত জেবিন গবেষণার ফল তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আহত শ্রমিকদের ২০ দশমিক ৫ শতাংশের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। গত বছর এই হার ছিল ১২ শতাংশ। এবার ৫১ শতাংশ বলছেন, তাদের শারীরিক অবস্থা কোনোরকম স্থিতিশীল। আহত ২০ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের পারিবারিক উপার্জন সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা।

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্‌ কবির বলেন, ক্ষতিপূরণ একটি অধিকার। যদি সংঘবদ্ধভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতো তাহলে রানা পল্গাজায় আহত শ্রমিকদের বর্তমান চিত্রটা হয়তো ভিন্ন হতো। খণ্ড খণ্ডভাবে টাকা দেওয়ার ফলে ক্ষতিপূরণ কোনো উপকারেই আসেনি।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতির উন্নতির হওয়ার কথা থাকলেও অবনতি হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল তার গতি কমে গেছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টউমো পৌটিয়ানেন বলেন, অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু অনেক কিছু করার এখনও বাকি রয়েছে। বিশেষ করে উদ্যোগগুলো প্রাতিষ্ঠানিক করা খুবই জরুরি। সমন্বিত উদ্যোগের অনেক অভাব আছে।

সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো, বাসস্থান ও রান্নাঘর ইত্যাদি বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে মজুরি বাড়ালে বাড়িওয়ালারা সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এটা বন্ধে উদ্যোগ দরকার।

এসএ/