অর্পিতার পাশে মমতা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৬ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার
ভারতের গত লোকসভা ভোটে বালুরঘাট থেকে অর্পিতা ঘোষ জেতার পর থেকে তৃণমূলের ভাগ্যে খরা চলছে। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মাত্র দু’টি আসন জেতে তারা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিপ্লব মিত্র অবধি হেরে যান। এর পরে অর্পিতার অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
মঙ্গলবার বালুরঘাট লোকসভা আসনের দুই শহরে সভা করে দ্বিমুখী কৌশল নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক দিকে তিনি ২০১৬ সালে জয়ীদের গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। অন্য দিকে অর্পিতা কেন দীর্ঘদিন বালুরঘাট আসেননি, তার ব্যাখ্যাও দিলেন। সব শেষে তার একটাই বার্তা, কাজের মানুষ পেতে ভোট দিন তৃণমূলকে।
বিরোধীরা বলছেন, অর্পিতার দীর্ঘ অনুপস্থিতি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং আদিবাসী ভোট হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে তৃণমূল নেত্রী পাল্টা আক্রমণের পথ নিয়েছেন। কিন্তু এই সব কারণেই ভোটাররা ২০১৬ সালে মুখ ফিরিয়েছিলেন। সেই জায়গা মেরামত করতে পরের তিন বছর তৃণমূল কী করেছে, প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
বস্তুত, এর জবাবই যেন রয়েছে মমতার এ দিনের বক্তৃতায়। তিনি জানান, আসন হাতছাড়া হওয়ার পরেও জেলার উন্নয়নে কার্পণ্য করেনি তার সরকার। তবে তার আগে তিনি মেনে নেন, এর আগে তাঁদের কিছু ভুলভ্রান্তি ছিল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের নিশ্চয়ই কিছু ভুল-ভ্রান্তি ছিল। সেবার আমরা মাত্র দু’টি আসন পেয়েছি। আপনারা আমাদের ভোট দেননি।’’
কৌশলী মমতা তার পরেই উপস্থিত জনতার প্রতি বলেন, ‘‘ঠিক আছে, সে বার আমাদের ভোট দেননি। কিন্তু যাঁদের ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা কি কোনও কাজ করতে পেরেছেন?’’ উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী কী করেছেন, এর পরে তিনি তার তালিকা দিতে থাকেন।
একই সঙ্গে অর্পিতার অনুপস্থিতির প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আপনারা জিজ্ঞাসা করতে পারেন অর্পিতাকে আমরা জিতিয়েছিলাম। কী করেছে?’’ এর পর নিজেই জবাব দেন, ‘‘মাঝে অর্পিতার বড় দুর্ঘটনা হয়েছিল। হিলিতে হয়েছিল। বাঁচার কথা ছিল না। অনেকে জানেন না। বিধানসভা ভোটের সময়। ও প্রায় বছর খানেক হাসপাতালে ছিল। অনেক কষ্ট করে লাঠির উপর ভর দিয়ে আস্তে আস্তে আবার কাজে নামে।’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অর্পিতা খুব লড়াকু মেয়ে। আমি যা বলি তাই শোনে। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে সংসদে সরব হয়। বালুরঘাটের জন্য আমার সঙ্গে প্রায় রোজ ঝগড়া করে। ইটাহারের জন্য, তপনের জন্য, গঙ্গারামপুরের জন্য, বুনিয়াদপুরের জন্য আমার সঙ্গে তর্কাতর্কি করে। তর্ক করুক কিন্তু জনগণের কাজ যাতে হয় সে দিকে নজর রাখুক।’’
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার
এমএইচ/