নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ মমতার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫৪ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার
চলছে দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯। এ অবস্থায় রাজ্যকে ‘অন্ধকারে’ রেখে দিল্লি থেকে লোক পাঠিয়ে বাংলায় সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা চলছে বলে নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য করে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিলেন, বাংলায় যারা সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে, আমরা তার বদলা নেব। আগে দিল্লি থেকে ওদের তাড়াই।
গত শনিবারেই নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঙ্গে ১০-১৫ বছর আগের বিহারের তুলনা করেছিলেন। রাতেই তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ওই অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কমিশনকে চিঠি লেখে তৃণমূল। এ দিন সরাসরি নাম না করেও তারই জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন নদিয়ার গয়েশপুরে সভায় তিনি বলেন, দিল্লি থেকে দুটি লোক পাঠিয়ে সরকার চালাচ্ছেন। তারা রাজ্যের সব অফিসার বদলে দিচ্ছেন। চেষ্টা করছেন বিজেপিকে কীভাবে সাহায্য করা যায়। এটা অসাংবিধানিক। রাজনৈতিক কথা বলছেন অবসরপ্রাপ্ত অফিসারেরা (উল্লেখ্য অজয় নায়েকও অবসরপ্রাপ্ত)। গালাগালি দিচ্ছেন। বাংলা এ-সব গালাগাল সহ্য করে না।
মমতা বলেন, রাজ্যে একটা নির্বাচিত সরকার আছে। আপনারা ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচন করেছেন। রাজ্য সরকারকে বাদ দিয়ে দিল্লি থেকে লোক পাঠিয়ে সমান্তরাল একটা সরকার চালানোর চেষ্টা করছে। এটা অসাংবিধানিক। অগণতান্ত্রিক।
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, গত বিধানসভা ভোটেও রাজ্যের ১০০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। তা সত্ত্বেও তৃণমূল জিতেছিল।
এ দিন নদিয়ার হবিবপুরেও সভা করেন মমতা। সেখানে তার চ্যালেঞ্জ, দিল্লি থেকে পাঁচ কোটি পুলিশ আনলেও বাংলায় বিজেপি গোল্লা পাবে। অংক কষে তিনি দেখানোর চেষ্টা করেন, দেশের অধিকাংশ রাজ্যেই বিজেপির ফল ভাল হবে না। একই সঙ্গে তার দাবি, কংগ্রেসও একক শক্তিতে সরকার গড়তে পারবে না। আগামী দিনে সরকার গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে আঞ্চলিক দলগুলো।
শনিবার একাধিক মন্তব্য করলেও এ দিন অবশ্য সাংবাদিকদের সমস্ত প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন অজয়। তৃণমূল তার অপসরণ চেয়েছে, এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তার সংক্ষিপ্ত উত্তর- ‘নো কমেন্টস’। এ দিন হেলিকপ্টারে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় কপ্টার সেখানে নামতে পারেনি।
অন্যদিকে, বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে এ দিন মালদহে বলেন, তৃতীয় দফার ভোটে রাজ্যে ৯২ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তার পরেও বিভিন্ন দল একাধিক অভিযোগ করেছে ও দাবি জানিয়েছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে। শনিবারেই জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন।
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এ দিন কমিশনকে আক্রমণ করে বলেন, ‘সেনা ভোট করাতে আসছে, করবে। কিন্তু সেনা যদি ভাবে যে বিজেপির কাজ করবে, তাহলে ব্যবস্থা করে দেব। অন্যদিকে, বালুরঘাটে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, ‘ভোটারদের উপরে অত্যাচার করার জন্য সেনা পাঠানো হচ্ছে।’
সূত্র: আনন্দবাজার