ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলা, এমপি তুহিনের কিছু প্রশ্ন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৫৩ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় ইস্টার সানডে চলার সময় কয়েক দফা বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে পৌঁছেছে। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরী (৮) নিহত হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন তার জামাতা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্সও।

গত রোববার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যখন ইস্টার সানডে পালন করছিল তখন এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রথম হামলা হয় স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টায়। তিনটি গির্জায় অন্তত ছয়টি বিস্ফোরণ হয়েছে। এছাড়া রাজধানী কলম্বোতে অবস্থিত তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিস্ফোরণ হয়েছে।

ওই দিন একটি হোটেলের নিচতলার রেস্তোরাঁয় সকালের নাস্তা করতে গিয়েছিলেন প্রিন্স ও তার বড় ছেলে জায়ান চৌধুরী। ছোট ছেলে জোহানকে নিয়ে শেখ সোনিয়া ওই সময় হোটেলের কক্ষে ছিলেন। বোমা হামলায় শেখ সেলিমের আট বছর বয়সী নাতি জায়ান চৌধুরীর মৃত্যুর খবর রাতে পরিবারের একটি সূত্র নিশ্চিত করে। জায়ানের বাবা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হলেও তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।

সংসদ সদস্য শেখ সেলিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই। সেলিমের মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া তার স্বামী মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স ও দুই ছেলেকে নিয়ে শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে গেছেন। তারা কলম্বোর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছিলেন।

ওই ঘটনায় শিশু জায়ানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার একটি ছবি পোস্ট করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। পোস্টটি হুবহু (বানান পরিমার্জিত) তুলে ধরা হল-

সেহরি খেলাম, এক ঘণ্টা ঘুমাবো ভাবছিলাম কিন্তু ঘুম আসছে না। কী কারণে ছোট্ট শিশু জায়ানকে জীবন দিতে হল? পৃথিবীকে আজ কারা অবাসযোগ্য করে তুলছে? কী চায় তারা? কেন এত রক্তপাত? মানুষ মেরে একদল ধর্মের কাজ করছে বলছে? কেউ হোটেল গির্জায় বোমা মারছে, কেউ একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার শরীক হতে পেরে গর্বিত হচ্ছে। যারা আজ পৃথিবীকে নরক বানাচ্ছে তাদেরতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখতে হবে বিশ্বের শান্তি কামনার মানুষদের। মা-বাবা পরিবার কী করে সহ্য করবে? আহারে কষ্ট পেয়েছি নিষ্পাপ মাসুম জায়ান, এমনি জায়ানের মত দু’শর অধিক মানব সন্তান কত যন্ত্রনায় ছটফট করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেছে। কোন ধর্মে কি মানুষ হত্যাকে সমর্থন করে? মানুষের রক্তের রঙ লাল, সকলের অনুভূতি এক; তবে কেন হানাহানি?

আমরা কি যে যার ধর্ম শান্তিতে পালন করতে পারি না? যে কোন বিষয়ে সব ধর্মের কিছু গোঁড়ামির মানুষ আছে তারা নিজ ধর্মে যা লেখা আছে তা পালন করে না, তারা মানব সেবায় থাকে না, তাদের আরাম আয়েশের জীবন, এ ধর্ম ব্যবসায়ীরা হানাহানি লাগাতে উসকানি দেয়। পহেলা বৈশাখ নিয়ে বক্তৃতা করে রমনায় বটমূলে কত রক্তপাত করা হয়েছিল দেশের শিল্পী গোষ্ঠীর উপর, এরা মানুষের হাসি দেখতে পারে না, গরুর মাংস খাওয়াতে ভারতে জঘন্য নির্যাতন করছে মৌলবাদী গোষ্ঠী। মসজিদে হামলা করে কত প্রাণ ঝরে গেছে কিন্তু কেন এ হামলা?

সারা বিশ্বের এ মৌলবাদীদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখতে হবে। বারুদের গন্ধে রক্তপাতের বিশ্ব কাম্য না, আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য শান্তিময় বিশ্ব চাই। পচাত্তরে শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) আপা শেখ সেলিম ভাইয়ের পরিবার দেখেছে সে বর্বরতা আবার দেখলো, আমরা কোথায় নিরাপদ? মৌলবাদ কি নিপাত করতে আমরা সকলে মাঠে থেকে রুখতে পারবো? আমরা কি হাসতে পারবো?