ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

কাল ভারতের তৃতীয় ধাপের ভোট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩০ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

 

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। এই ধাপে ১১৫টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে। এর আগে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ করা হয় ১১ এপ্রিল এবং দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ করা হয় ১৮ এপ্রিল। এই দুই ধাপের ভোটে ব্যালট বাক্স ভাঙচুরসহ জাল ভোটের অভিযোগ উঠে। এছাড়াও সহিংসতা হয় এই দুই ধাপের ভোটে। তৃতীয় ধাপের ভোট নিয়ে ভারতজুড়ে দলগুলোর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আজ রামপুরহাট থেকে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর। রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও ওই সভায় হাজির ছিলেন। সেখান থেকে বাংলার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শাহ। তিনি বলেন, “বাংলায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। তাদের উপড়ে ফেলতে হবে।”

অমিত শাহ অভিযোগ করেন, মা-মাটি-মানুষ স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার। কিন্তু বাংলার উন্নয়নে কোনও কাজ করেনি তারা। একমাত্র বিজেপিই বাংলাকে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।

বাংলার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই টাকা ভারতের সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছয়নি বলেও অভিযোগ করেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, “ইচ্ছাকৃতভাবে মমতার সরকার বাংলাকে কাঙাল করে রেখেছে। নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত হতে হবে না।”

সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলেন মমতা ও রাহুল। কোনওভাবেই কি তা সম্ভব? সন্ত্রাসকে নির্মূল করাই মোদি সরকারের লক্ষ্য। পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

সারদা ও রোজভ্যালির টাকা খেয়েছে তৃণমূল। নরেন্দ্র মোদিকে ফের সরকার গড়তে দিন। ৯০ দিনের মধ্যে সব চোরকে জেলে পোরা হবে।

কলকাতা মেট্রোর জন্যও ১২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল—এতদিন যারাই ক্ষমতায় এসেছে বাংলাকে কাঙাল করে রেখেছে।

দরিদ্র মানুষের মাথার উপর ছাদ গড়ে দিতে ১৬ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল মোদি সরকার। কিন্তু দরিদ্র মানুষের মাথার উপর ছাদ গড়ে ওঠেনি।

এদিক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আজ মোট তিনটি সভা তৃণমূল নেত্রীর। প্রথম সভা করেন জামালপুরে। এর পর বর্ধমান শহর লাগোয়া দেওয়ানদিঘিতে নির্বাচনি জনসভা করেন। এর পর রায়নার সভায় যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আগের দুই সভায় বিজেপি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জামালপুরের সভায় তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী মোদি শুধু বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। দেশের জন্য কিছুই করেননি। উল্টে নোটবন্দি-জিএসটি-তে সাধারণ মানুষের সর্বনাশ করেছেন।’’

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে বার বার বলছেন, এ রাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী চালু করবেন। কিন্তু জামালপুরের সভা থেকে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘এ রাজ্যে কিছুতেই নাগরিকপঞ্জি চালু করতে দেব না।’’ বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধেও এ দিন পাল্টা আক্রমণ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

আগামী ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় রাজ্যের মোট ৮টি আসনে ভোট। এই দফাতেই বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ভোট নেওয়া হবে বহরমপুর, আসানসোল, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বীরভূম, বোলপুর, কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাট আসনেও।
‘চৌকিদার চোর হ্যায়’—রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রায় প্রতিটি জনসভায় এই ভাষাতেই মোদিকে আক্রমণ করছেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু সেই স্লোগান নিয়েই এ বার বিপাকে কংগ্রেস সভাপতি। নিজের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার অভিযোগে সোমবার শীর্ষ আদালতে দুঃখপ্রকাশ করতে হলো তাকে। বিজেপির দায়ের করা আদালত অবমাননার জেরে লিখিত বিবৃতিতে রাহুল আদালতে জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক প্রচারের উত্তেজনা’তেই এই ভুল করে ফেলেছেন।

রাহুলকে দুঃখপ্রকাশ করতে হল কেন? ঘটনার সূত্রপাত গত ১০ এপ্রিল। রাফাল চুক্তির আগের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় বিরোধীরা। রাফাল চুক্তির ফাঁস হওয়া নথিপত্রও জমা দেওয়া হয়। আদালত সেই সব নথি খতিয়ে দেখে সেগুলি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। রাহুল সে দিন অমেঠীতে ছিলেন। সেখানেই সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘এ বার সুপ্রিম কোর্টও কার্যত মেনে নিল, চৌকিদার চুরি করেছেন।’’ এই নিয়েই বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষী লেখি সুপ্রিম কোর্টে একটি আদালত অবমাননার মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, আদালতের রায়কে বিকৃত করেছেন এবং নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন রাহুল।

ভারতের এই নির্বাচন নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে ভারতজুড়ে। আর পাশের দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও এর প্রভাব কম নয়। তাই নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহ সবার মধ্যে।

এসএইচ/