সরকারের ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড উদ্যোগ-উচ্ছ্বাসহীন: সিপিডি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩৫ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার
সরকারের ১০০ দিনের পরিকল্পনা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও সময় দিতে হবে বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। তবে বিবেচ্য বিষয় হলো-একটি সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, পেছনের অভিজ্ঞতার আলোকে নতুনভাবে কিছু উদ্যোগ নেয়। আর সে উদ্যোগের প্রাথমিক বিন্দু হলো তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।
সরকারের ১০০ দিনের কর্মকাণ্ডের ওপর মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশকালে সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশে এ পর্যন্ত যত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি এসেছে, তার মধ্যে আওয়ামী লীগের এবারের প্রতিশ্রুতি সবচেয়ে বেশি সুচিন্তিত। সে কারণে সরকার ও শাসকদলের এটির ব্যাপারে সমানভাবে নিষ্ঠাবান হওয়া উচিত। আশা করা হয়েছিল শুরুটা বড় ধরনের একটি উত্থানের মধ্য দিয়ে হবে। কিন্তু গত ১০০ দিনে সরকারের ব্যাপারে সার্বিক মূল্যায়ন হলো, ‘আমরা উৎসাহহীন, উদ্যোগহীন, উচ্ছ্বাসহীন এবং একটি উদ্যমহীন সরকার দেখেছি।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হিসাবে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশের বেশি। কিন্তু প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য চলকগুলোতে এর প্রতিফলন নেই। বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগ, পুঁজির আমদানি, কর আদায়, ব্যাংকের ঋণপ্রবাহ, মূল্যস্ফীতি এবং শ্রমের উৎপাদনশীলতার তথ্যের সঙ্গে উচ্চ প্রবৃদ্ধির মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন। এ অবস্থায় কী কী তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধির এই হিসাব করা হয়েছে, তা প্রকাশ করা হোক।
তারা আরও বলেন, একটি প্রথিত গোষ্ঠী সরকারকে প্রভাবিত করে নীতিনির্ধারণ করছে। এর ফলে ঋণখেলাপিসহ অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সামষ্টিক অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আয়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে প্রবৃদ্ধিনির্ভর অর্থনৈতিক পর্যালোচনা প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী যে আলোচনা হচ্ছে, তার মূল কথা প্রবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ, তবে যথেষ্ট নয়। এ কারণে মানব উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সূচকের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ যে বৈশ্বিক ঐকমত্য হয়েছে, তা হলো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি। এটি প্রবৃদ্ধির বাইরে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নের ধারণাকে সামনে নিয়ে এসেছে। এ কারণে প্রবৃদ্ধি নিয়ে যখন আলোচনা হবে, তখন পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নের বিষয়টি যাতে আমাদের ধারণার বাইরে চলে না যায়, তা বিবেচনায় রাখতে হবে।