দেশের শিক্ষাব্যবস্থা যুগোপযোগী নয়: জব্বার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৭ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা যুগোপযোগী নয় বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, এই শিক্ষাব্যবস্থা প্রথম শিল্প যুগের এবং শুধু কেরানি তৈরির উপযুক্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত দিনব্যাপী শিক্ষক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মোস্তাফা জব্বার।
সমাপনী অনুষ্ঠানের ‘ভবিষ্যৎ শিক্ষা-ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি’ শীর্ষক এই সেমিনারে তিনি বলেন, আমাদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে কর্মসংস্থানের অভাব। আমাদের দেশের যে শিক্ষাব্যবস্থা, তা প্রথম শিল্প যুগে ছিল। যা কেরানি তৈরির উপযুক্ত। এটিকে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলা উচিত। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মোকাবিলায় আমাদের এখনও দক্ষতার অভাব রয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের ডিজিটাল যুগের দক্ষতা দেওয়াই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। একটা শিশু ছয় বছর বয়সে স্কুলে গেলে এরও ১২ বছর পর হয়তো কর্মজীবন শুরু করবে। অর্থাৎ যে শিক্ষা এখন পেলে শিশুটি ১৮ বছর পর কর্মজীবনে ভাল করবে, সেই শিক্ষা তাকে দিতে হবে।
বাংলাদেশে এখনও সেভাবে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয়নি মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, শুধু কম্পিউটার ব্যবহার করা, পাওয়ার পয়েন্টে কিছু স্লাইড তৈরি করা অথবা পাঠ্যপুস্তককে পিডিএফ করে ই-বুক তৈরি করাই ডিজিটাল শিক্ষা নয়। এগুলো ডিজিটালের ট-ও না। ডিজিটাল শিক্ষার মধ্যে আমরা যেটি করতে পেরেছি, তা হলো কম্পিউটার নিয়ে মানুষের ভয় কমেছে।
এসময় শিক্ষকদের আরও বেশি জ্ঞান চর্চার এবং সৃজনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, স্বপ্নের পৃথিবী জ্ঞান নির্ভর; মেধা নির্ভর পৃথিবী। শিশুদের হাতে এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি। তাই শুধু ভালো শিক্ষকরা, সৃজনশীল শিক্ষকরা টিকে থাকবে। কেননা, আমাদের জ্ঞান কর্মী শিক্ষক দরকার।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলম বলেন, একটা ডিভাইস শিশুদের হাতে দিলে, তারা খুব আগ্রহ নিয়ে সেটি ব্যবহার করে। খুব দ্রুত সেগুলো সম্পর্কে শেখে শিশুরা। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই শিশুদের তৈরি করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আইটি ল্যাব ও ডিজিটাল ক্লাসরুমগুলো অনেক জায়গায় অবহেলায় পড়ে থাকে। এগুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আইসিটি বিভাগের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে হবে।
একসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক মোস্তফা আজাদ, ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রভাষক দিদারুল আলম প্রমুখ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআইয়ের যৌথ আয়োজনে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এই শিক্ষক সম্মেলন হয়।
আয়োজনের দ্বিতীয় ভাগে সমাপনী সেমিনার শেষে ৪৩ জন ডিজিটাল কনটেন্ট প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষকদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
আরকে//