ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

‘রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি হলে দায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৫ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৯ শুক্রবার

ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করতে বাধা দেওয়ায় কক্সবাজারে বর্ষায় ভূমিধসসহ কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারালে তার দায় আন্তর্জাতিক সস্প্রদায়কে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতিসংঘের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসংঘ শরনার্থী সংস্থার হাই কমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক অ্যান্টনিও ভিটোরিনো এবং জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ভাসানচরে দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে রোহিঙ্গাদের জন্য সাময়িক বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছে সরকার। তবে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তরে জাতিসংঘসহ আরো কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বাধা দিচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী বর্ষায় কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা ভূমিধসসহ অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারালে তার জন্য বাংলাদেশ নয় বরং জাতিসংঘসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো দায়ী থাকবে।

জোর করে কাউকে ভাসানচরে নেওয়া হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা জোর করে কাওকে ভাষানচরে নিতে চাই না। তবে যারা যাবে তাদের জন্য একটি ভালো অবস্থান হবে। আমরা নিজের পয়সায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। ওখানে গেলে রোহিঙ্গারা কাজকর্ম করতে পারবে। মাছ ধরতে পারবে, গরু পালন করতে পারবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের তিন সংস্থার প্রধানকে মিয়ানমারে কাজ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বলেছি আপনাদের এখানে কাজ নাই, মিয়ানমারে যান। আমি বেশ শক্তভাবে বলেছি। আপনারা ওখানে বেশি জোর দেন, এখানে না। আমি জিজ্ঞাসা করেছি আপনারা কতবার সেখানে গিয়েছেন, সেখানে আপনাদের কতজন কাজ করে। এখানে এক হাজারের বেশি লোক কাজ করে। ওখানে বেশি কাজ করেন, এখান থেকে বিদায় হোন। আপনারা মিয়ানমারকে কনভিন্স করেন, যাতে তারা তাদের লোক নিয়ে যায় এবং ওখানে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে কাজ করেন।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে যুদ্ধে জড়াতে চাই না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে, সমাধানও তাদের করতে হবে। আমরা যুদ্ধ করবো না, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে চাই। আমাকে কেউ কেউ বলেছে তোমরা যদি চাও তবে আমরা সেখানে কিছু একটা মহড়া করতে পারি। আর এটা অত্যন্ত পাওয়ারফুল লোক বলেছেন।

এটি ব্যক্তি না দেশ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশ। আমরা খুব একটা পাত্তা দেই নাই। তারা বলেছেন তোমরা চাইলে আমরা তোমাদের হয়ে ক্ষমতা দেখাতে পারি। আমরা বলেছি না, কারণ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে চাই। মিয়ানমার এর আগে লোক নিয়ে গেছে এবং আমরা আশাবাদী।

মিয়ানমারের অস্ত্রের যোগানের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি তাদের বলেছি রাখাইনে কে বা কারা অস্ত্র সরবরাহ করেছে? ওখানে মারামারি হচ্ছে কে অস্ত্র সরবরাহ করছে আপনারা সেটি বের করেন। বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটছে এবং বিভিন্ন তথ্য আমরা পাই। কিন্তু মিডিয়াতে কখনো আসে না অস্ত্র কোন দেশের তৈরি, কোন কোম্পানির তৈরি বুলেটে বা শ্রাপনেলে লোকটা মারা গেছে। এখন এটি জানার সময়, কারা এইসব অস্ত্র সরবরাহ করছে। এগুলো জানা গেলে সন্ত্রাস কমে যাবে।

আরকে//