যৌন হয়রানির প্রতিবাদে শ্রমিকদের আমরণ অনশন
সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:০৩ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার
রাজধানী ঢাকার অদুরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কারখানা কর্মকর্তা কর্তৃক নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ ও অন্যায়ভাবে ছাঁটাইকৃতদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে আমরণ অনশন করছে একটি পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক।
শনিবার সকাল থেকে আশুলিয়ার ইউনিক এলাকায় ডং লিয়ন ফ্যাশন বিডি: লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার ছাঁটাইকৃত শ্রমিক ও তার সহকর্মীগণ এই অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
অনশনরত শ্রমিকরা জানান, গত ১৮ মার্চ কারখানাটির সহকারি উৎপাদন ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলাম এক নারী শ্রমিকের স্পর্শকাতরস্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানির করেন। পরে শ্রমিকরা এর বিচার চাওয়ায় গত ৯ এপ্রিল কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ভুক্তভোগী ওই নারী শ্রমিকসহ ১৭ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এরপর কয়েকবার বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে পুলিশ ও স্থানীয় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখনো হয়। নির্যাতনে বিচার চাওয়ার পর শ্রমিকদের অন্যায়ভাবে ছাটাইয়ের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শ্রমিকরা আমরণ অনশনে বসেছেন।
ডং লিয়নের আরিফা বেগম নামের একনারী শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কারখানা অভ্যন্তরে বিভিন্ন সময়ই নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমাদের এক সহকর্মীকে যৌন হয়রানির বিচার দাবি করলে আমাদের অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করা হয়। আমরা কারখানার সেই কর্মকর্তার বিচার চাই ও আমাদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি করছি। আমাদের এসব দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।
বাংলাদেশ বস্ত্র পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. সারোয়ার হোসেন বলেন,আমি পুলিশ ও কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি বিষয়টি সমাধানের জন্য। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই এই সমস্যাটি সমাধান করতে পারেন, কিন্তু কি কারণে তারা এই সমস্যার সমাধানে গড়িমসি করছেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে হতাশা।
শনিবার সকাল থেকে বেশ কয়েকজন নারী শ্রমিক তাদের দাবি পূরণের লক্ষ্যে অনশন করছে। অনশনরত কয়েকজন শ্রমিক প্রচন্ড গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনশণরত শ্রমিকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হলেও তারা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত না যাওয়া ঘোষণা দিচ্ছেন।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সানা শামীনুর রহমান বলেন, নারী শ্রমিককে শ্লীলতাহানির বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী নারী শ্রমিক থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে। তবে শিল্প পুলিশের কাজের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ইচ্ছে করলেই কোন শ্রমিকের অভিযোগে তাকে আটক কিংবা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। এছাড়া যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানাটির সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কেআই/