ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

মে দিবস

সংগ্রামের অম্লান আলোকবর্তিকা

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

প্রকাশিত : ১১:২২ এএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ১১:২৯ এএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার

আজ মহান ‘মে দিবস’। এ দিবসটি হল শ্রমিক শ্রেণীর আন্তর্জাতিক সংহতির দিন। শ্রমিকের বিজয়ের দিন, আনন্দ ও উৎসবের দিন। নতুন সংগ্রামের শপথ নেয়ার দিন। 

‘মে দিবস’ সংগ্রামের একটি প্রতীকী দিন। এর প্রথম কারণ, সংগ্রামের মধ্য দিয়েই এর উদ্ভব এবং এর অগ্রগতি। এর দ্বিতীয় কারণ, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে ‘মে দিবস’ পালন করাটিই একটি সংগ্রামের বিষয় হয়ে আছে। 

১২৯ বছর ধরে এ দিবসটি পালনের অধিকারের জন্য শ্রমিকশ্রেণীকে সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে। সইতে হয়েছে ও হচ্ছে নানা মাত্রার পুলিশি নির্যাতন, জেল-জুলুম-হুলিয়াসহ দমনপীড়ন। আমাদের দেশেও দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মে দিবস উদযাপনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে। 

বেশ মনে আছে, ১৯৬৫ সালে আমি সর্বপ্রথম সচেতনতা সহকারে ও আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মে দিবস’ পালন করেছিলাম। সেবার তৎকালীন গোপন কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে ঢাকার উপকণ্ঠে কল্যাণপুরের একটি নিভৃত বাসায় (সে সময় ঢাকা থেকে কল্যাণপুরের কোনো বাসায় যেতে হতো মিরপুর যাওয়ার বাস থেকে নেমে ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে হেঁটে) ‘মে দিবস’ উপলক্ষে গোপন সভার আয়োজন করা হয়েছিল। 

সেখানে আমরা অর্ধশতাধিক ছাত্র-তরুণ কমিউনিস্ট উপস্থিত ছিলাম। সে সময় আত্মগোপনে থাকা পার্টি নেতাদের মধ্যে কমরেড আজাদ (মণি সিংহ), কমরেড আমিন (অনিল মুখার্জি), কমরেড করিম (জ্ঞান চক্রবর্তী), কমরেড কবির (মোহাম্মদ ফরহাদ) প্রমুখ সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন। এসব প্রবাদতুল্য নেতাকে স্বচক্ষে দেখতে পেয়ে আমরা অভিভূত হয়েছিলাম। আরও বেশি অভিভূত হয়েছিলাম তাদের বক্তৃতা শুনে। 

পাকিস্তান আমলে এভাবেই আমাদের গোপনে মে দিবস উদযাপন করতে হতো। পার্টির গোপন ‘সেল’গুলো কোনো বাসার ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে হারিকেন জ্বালিয়ে, পেছনে লাল পতাকা টানিয়ে ‘মে দিবস’ পালন করত। 

প্রবল প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও কমিউনিস্ট কর্মীরা প্রতিবছর কোনো না কোনোভাবে মে দিবস পালনের মধ্য দিয়ে শ্রমিকশ্রেণীর শোষণ-মুক্তির সংগ্রাম অব্যাহত রাখার শপথ নিত। 

কোনো কোনো ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের উদ্যোগে অবশ্য মে দিবসের প্রকাশ্য অনুষ্ঠানের আয়োজনও সেসময় হতো। এসব ট্রেড ইউনিয়ন ছিল মূলত সরকারের দালাল বা সংস্কারবাদী ধারার। তবে সাধারণ শ্রমিকরা সেখানে উপস্থিত হতো। 

শিল্পাঞ্চলগুলোতেই সেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন হতো। আদমজী বালুর মাঠ, ডেমরার পুকুরপাড়ের খেলার মাঠ, ঢাকেশ্বরী কটন মিল, লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলের সেসব অনুষ্ঠানে আমরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীরা দলবেঁধে শ্রমিক নেতাদের বক্তৃতা শুনতে এবং শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে গল্প-গুজব করতে যেতাম। 

১৯৬৯-৭০ সালের দিকে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল। সেসময় থেকে মে দিবসের অনুষ্ঠান গোপন অবস্থার বদলে প্রকাশ্যে আয়োজন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রণাঙ্গনেই মে দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। 

স্বাধীনতার পর মে দিবস পালনের সুযোগ ‘শৃঙ্খলমুক্ত’ হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে মে দিবস রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ করে। এ দিনটিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে মে দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে অনেকটা মুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। 

মে দিবস আমাদের দেশে এখন শ্রমিকদের একটি উৎসবের দিনে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর এই দিনে গার্মেন্ট, পরিবহন, ট্যানারিসহ বিভিন্ন কারখানা ও শিল্পের ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলো জাঁকজমকের সঙ্গে মে দিবস পালন করে থাকে। ইনফরমাল সেক্টরের অসংগঠিত শ্রমিকরাও নিজেদের মতো করে দিবসটি পালন করেন। 

শ্রমিকরা দলে দলে ঢাকঢোল বাজিয়ে, রং ছিটিয়ে এসব অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও এখন মে দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। মে দিবসে ঢাকা শহর আজকাল শ্রমিকের উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। 

মে দিবস পালনে জাঁকজমক আমদানি হলেও একাত্তরে অর্জিত ‘মুক্তির’ মতোই, এদেশে ‘মে দিবসের মুক্তিও’ হোঁচট খেয়েছে। মে দিবস হল শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে উজ্জীবিত হওয়ার দিন। শ্রমিকশ্রেণী ও মেহনতি মানুষের মুক্তির ইস্যুটিই হল ‘মে দিবসের’ মূল ইস্যু। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে মেহনতি মানুষের মুক্তির এ ইস্যুটিকে আড়ালে ঠেলে দেয়া হয়েছে। 

বস্তুত শোষণ-বঞ্চনা ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত হয়ে প্রত্যেক মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার, তথা সমাজতন্ত্র নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন হলেও আজ সেই স্বপ্নকে হত্যা করে ‘পুঁজিবাদী লুটপাটতন্ত্রের’ উল্টো পথে দেশ চালানো হচ্ছে। 

অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার পথে অগ্রসর হতে ১৯৭২-এর সংবিধানে ‘সমাজতন্ত্র’কে রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির অন্যতম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু নানা ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে দেশকে সে ধারা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। 

ফলে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রমিকশ্রেণী ও জনগণের অধিকার ও কর্তৃত্বের কথা স্বীকৃত থাকলেও তাকে কখনোই কার্যকর করতে দেয়া হয়নি। বরং জনগণের সম্পদ ও উৎপাদনব্যবস্থার কর্তৃত্ব এখন চলে গেছে ১ শতাংশ ‘অতি বিত্তবান’ লুটেরা শ্রেণীর হাতে। সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘উৎপাদনযন্ত্র, উৎপাদনব্যবস্থা ও বণ্টনপ্রণালিগুলোর মালিক বা নিয়ন্ত্রক হইবেন দেশের জনগণ।’ 

১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে মেহনতি মানুষকে- কৃষক ও শ্রমিকের এবং জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ হইতে মুক্ত করা।’ 

কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিক এঙ্গেলস রচিত কমিউনিস্ট ইশতেহার থেকে একটি বাক্যাংশ উদ্ধৃত চিহ্ন দিয়ে সংবিধানের ২০(১) অনুচ্ছেদে যুক্ত করে বলা হয়েছে, “কর্ম হইতেছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয় এবং ‘প্রত্যেকের নিকট হইতে যোগ্যতানুসারে ও প্রত্যেককে কর্মানুযায়ী’- এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেকে স্বীয় কর্মের জন্য পারিশ্রমিক লাভ করিবেন।’’ 

সংবিধানে এখনও এসব কথা বহাল থাকলেও তথাকথিত মুক্তবাজার নীতির নামে ‘উৎপাদনযন্ত্র, উৎপাদনব্যবস্থা ও বণ্টনপ্রণালি’র মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ জনগণের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বিশাল সম্পদের অধিকারী গুটিকয়েক মালিকের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করা হয়েছে। অসংখ্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তুলে দেয়া হয়েছে মুষ্টিমেয় লুটেরা ধনিকের হাতে। 

প্রতিষ্ঠিত এসব শিল্পকে তারা লুটপাট ও ধ্বংস করেছে। ‘কৃষক ও শ্রমিকের এবং জনগণের অনগ্রসর অংশের’ ওপর এখনও চলছে নানামাত্রিক শোষণ-নিপীড়ন। শ্রমিকদের তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। নারী শ্রমিকদের ওপর চলছে সর্বাধিক বঞ্চনা ও বৈষম্য। 

নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে মে দিবস পালিত হলেও বাংলাদেশে এখনও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টা শ্রমের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নিশ্চিত হয়নি তার ন্যায্য মজুরি। শুধু তা-ই নয়, একের পর এক কলকারখানা বন্ধ করে লাখ লাখ শ্রমিককে কর্মহীন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজীসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠিত বড় বড় শিল্পকারখানা। 

শ্রমিকদের ‘কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার’ ব্যবস্থা নেই। ‘রানা প্লাজা’, ‘তাজরিন’ কারখানায় ভবন ধসে পড়ে, আগুনে পুড়ে হাজার হাজার শ্রমিকের বিভীষিকাময় মৃত্যুর ঘটনাতেও এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেনি। আইএলও সনদ অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা তো দূরের কথা, শ্রমিকদের ন্যূনতম ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারও নানা কায়দায় খর্ব করে রাখা হয়েছে। 

অধিকন্তু শ্রমিক আন্দোলন দমন করার জন্য মালিকদের যোগাযোগ ও সহায়তায় কুখ্যাত ‘শিল্প পুলিশ’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ‘জাতীয় স্বার্থের’ কথা বলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দেয়ার অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের ‘কম মজুরি ও শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রিত রাখা’ হচ্ছে। 

শ্রমিক স্বার্থের অনুকূল প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা নিয়ে একাত্তরে স্বাধীন দেশের যাত্রা শুরু হলেও গত প্রায় ৪৮ বছরে বাংলাদেশ সেখান থেকে সম্পূর্ণ উল্টো ধারায় সরে এসেছে। মে দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রেও এ পশ্চাদপসরণের ঘটনা ঘটেছে। 

মে দিবসের অনুষ্ঠানাদি এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রদর্শনবাদ, রাজনৈতিক শোডাউন, চাটুকারিতা, নেতা-নেত্রীভজন ইত্যাদির মধ্যে বন্দি হয়ে গেছে। এক কথায়, মে দিবস পরিণত হয়েছে অনেকটাই স্থূল আনুষ্ঠানিকতায়। এ দিনটি যে শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ধারাবাহিকতার অংশ, ক্রমশ সে বিষয়টি ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

মে দিবস তার জন্মলগ্ন থেকেই ‘সংগ্রামের’ এক জ্বলন্ত অগ্নিমশাল। ১৮৮৬ সালের মে মাসে আমেরিকার শিকাগো শহরের শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের মূল দাবি ছিল ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা। ১ মে সফল ধর্মঘটের পর সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৪ মে ‘হে-মার্কেট স্কোয়ারের’ বিশাল সমাবেশে মালিক ও সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে শ্রমিকের রক্তে লাল হয়ে উঠেছিল হে-মার্কেট চত্বর। 

আমেরিকার শ্রমিকদের এই আন্দোলনের ঢেউ বিশ্বের দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলস্বরূপ ক্রমেই বিভিন্ন স্থানে মালিকরা ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবি মেনে নিতে শুরু করেছিল। শ্রমিক শ্রেণীর আন্তর্জাতিক সংহতি ও ঐক্যের শক্তির ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছিল। 

১৮৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রেডেরিক এঙ্গেলসের নেতৃত্বে প্যারিসে ‘দ্বিতীয় কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরই ‘সোশ্যালিস্ট লেবার ইন্টারন্যাশনালের’ সম্মেলনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জার্মান কমিউনিস্ট নেত্রী ক্লারা জেটকিন ১৮৯০ সাল থেকে প্রতিবছর ১ মে দিনটিকে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা করেন। 

এভাবেই আন্তর্জাতিকভাবে মে দিবস পালনের সূচনা হয়। অর্থাৎ, মে দিবসের সামগ্রিক ইতিহাসই শ্রমিকশ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক-সামাজিক শোষণ থেকে মুক্তি অর্জন এবং আন্তর্জাতিক সংহতির লক্ষ্যে ধারাবাহিক সংগ্রামের ইতিহাস। 

ফলে মে দিবসকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে বন্দি করার অর্থই হল এ দিবসটির মূল চেতনাকে উপড়ে ফেলে শ্রমিকশ্রেণীকে তার শোষণমুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত সংগ্রাম থেকে বিচ্যুত করা। আমাদের দেশের সরকার ও বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলো সুপরিকল্পিতভাবে তা-ই করছে। 

কিন্তু এদেশের শ্রমিকরা বসে নেই। প্রবল প্রতিকূলতার মাঝেও তারা এগিয়ে নিচ্ছে শোষণমুক্তির সংগ্রাম। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে মানবমুক্তির সংগ্রাম। শত নির্যাতন-নিপীড়ন, জেল-জুলুম মোকাবেলা করে তারা এগিয়ে নিচ্ছে তাদের ন্যায্য ও মানবিক দাবিগুলো আদায়ের জন্য সংগ্রামের ধারা। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই এ সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। 

বিশ্বব্যাপী চলমান এ সংগ্রামকে শ্রমিকশ্রেণীর মহামুক্তির সংগ্রামে পরিণত করার মধ্য দিয়েই কেবল মে দিবসের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। সেই সংগ্রামে শামিল হওয়ার চেয়ে জীবনের বড় সার্থকতা আর কিসে থাকতে পারে? তাই কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথায় বলতে হয়- 

‘চিমনির মুখে শোনো সাইরেন- শঙ্খ, 

গান গায় হাতুড়ি ও কাস্তে,

তিল তিল মরণেও জীবন অসংখ্য 

জীবনকে চায় ভালোবাসতে। 

শতাব্দী লাঞ্ছিত আর্তের কান্না 

প্রতি নিঃশ্বাসে আনে লজ্জা; 

মৃত্যুর ভয়ে ভীরু বসে থাকা, আর না- 

পরো পরো যুদ্ধের সজ্জা।’ 

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম : সভাপতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি

selimcpb@yahoo.com