ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

বাংলাদেশে বেড়েছে নারীর কর্মসংস্থান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:০৪ পিএম, ১ মে ২০১৯ বুধবার

বাংলাদেশে নারীর কর্মসংস্থান হার গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেইসঙ্গে মজুরি ব্যবধানও কমে এসেছে। অর্থনীতিতে নারীর এই অগ্রগতির ফলে নারী-পুরুষ সমতায় বাংলাদেশ আরো এগিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক।

সংস্থাটির প্রকাশিত ‘ভয়েস টু চয়েস বাংলাদেশ জার্নি ইন ওমেনস্ ইকনমিক এমপাওয়ারমেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০০৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ ২৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই অর্জনের পরেও নারীরা বৈষম্যের শিকার বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সীমিত। পুরুষের তুলনায় কর্মসংস্থানে নারীর অবস্থান এখনও অর্ধেক। স্বাধীনভাবে কর্মসংস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণে এখনও পিছিয়ে রয়েছে দেশের নারীরা।

প্রতিবেদনের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর রবার্ট সওম উল্লেখ করেছেন, নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে অনেক সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ, বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। কিন্তু নারীদের অর্থনৈতিকভাবে আরো ক্ষমতায়ন করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। কর্মসংস্থানে নারীদের অবস্থান আগের চেয়ে বেশি হলেও নেপাল (৮০%) ও ভিয়েতনামের (৭৭%) চেয়ে অনেক কম। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে বাংলাদেশের শ্রমের দক্ষতা আরো বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

প্রতিবেদনে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে সঙ্গে সম্পদে অধিকারের বিষয়টিও উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্পদ নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে নারীরা পুরুষের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। নারীরা ভূমির মালিকানায় পুরুষের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। গড়ে কৃষিজমির মালিকানা নারীদের তুলনায় পুরুষের ছয়গুণ বেশি রয়েছে। অকৃষি জমির মালিকানায় ১২ গুণ বেশি রয়েছে পুরুষের। অবশ্য গ্রামের নারীরা এখন তাদের উত্তরাধিকার নিয়ে আগের চেয়ে বেশি সোচ্চার। এর পরেও নারীদের একটি বড় অংশ তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের অধিকার ত্যাগ করে দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সঞ্চয় ও ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের চেয়ে কম সুবিধা পাচ্ছে। শহুরে কর্মজীবী নারীদের আয়ের বড় অংশ ব্যয় হচ্ছে স্বামী ও সংসারের পেছনে। মাত্র ৩৬ ভাগ নারীদের ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে যেখানে পুরুষের রয়েছে ৬৫ ভাগ।

বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে এসএমই খাতে নারীদের অংশগ্রহণ তুলনামূল বেশি। এর পরেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাত্র ১.৭ শতাংশ নারীদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে, যা বিশ্বের অন্যদেশের তুলনায় সবচেয়ে কম।

সামাজিক এই বাধা দূর করতে নারীর সম্পত্তি রক্ষায় কঠোর আইনি কাঠামো ও প্রয়োগ ছাড়াও আর্থিক খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বাল্য বিবাহ নারীর এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম বাধা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি দশটি বিয়ের ছয়টি হচ্ছে ১৮ বছরের নিচে। উচ্চমানসম্পন্ন ও উচ্চ আয়ের চাকরিগুলোতে যদি আরো বেশি নারীদের নেওয়া হয় তবে বাংলাদেশ আরো দ্রুত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরকে//