পুঁজিবাজারে বেড়েছে সূচক ও লেনদেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৭ পিএম, ২ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার
সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার চাঙ্গাভাব ফিরে এসেছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬১ বেড়েছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৪৮ পয়েন্ট। শতকরা হিসাবে যা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। সূচকের পাশাপাশি এদিন দুই বাজারে বেড়েছে লেনদেনও।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুঁজিবাজার নিয়ে ‘ইতিবাচক’ বক্তব্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসায় বাজারে তেজিভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৪৭৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মে দিবসে সরকারি ছুটির কারণে বুধবার লেনদেন বন্ধ ছিল। আগের দিন মঙ্গলবার ডিএসইতে ৪১৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। লেনদেনের এই অংক সোমবারের চেয়ে লেনদেন ১১৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বেশি।
অন্যদিকে সিএসইতে বৃহস্পতিবার ২১ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। মঙ্গলবার লেনদেনের অংক ছিল ১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে টানা দরপতন ঠেকাতে সোমবার প্লেসমেন্ট শেয়ার বন্ধের ঘোষণা দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি। ঐ ঘোষণায় ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। মঙ্গলবার ডিএসইএক্স বাড়ে ২৭ পয়েন্ট। সিএএসপিআই বাড়ে ৪৩ পয়েন্ট।
ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, আস্থার সঙ্কটের কারণে বাজারে দরপতন হচ্ছিল।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজার নিয়ে ‘ইতিবাচক’ বক্তব্য দেওয়ায় সেই আস্থা ফিরে এসেছে। যে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন; তারা আবার বাজারমুখি হয়েছেন।
এছাড়া বিএসইসি প্লেসমেন্ট শেয়ার বন্ধ এবং আর কোন আইপিও’র আবেদন না নেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে তাতেও বাজারে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন শাকিল।
বাজার নিয়ে সরকারের আন্তরিকতা ষ্পষ্ট হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা শক্ত হয়েছে। এতে আবার প্রমাণিত হলো বিনিয়োগকারী আসলেই মার্কেট ঠিক হয়। টাকা দিয়ে ঠিক করা যায় না। আস্থাই আসল।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে তাদের শঙ্কিত না হতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পুঁজিবাজার ভালো করতে সব ধরনের পদক্ষেপ সরকার বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, আমি বলব, খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা কীভাবে ঠিক করা যায়, আমি এই পার্লামেন্টে বসেই কয়েকদিন আগে প্রায় রাত ১০টা পর্যন্ত সভা করেছি।
বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি প্লেসমেন্ট শেয়ার বন্ধ এবং নতুন আর কোন আইপিও’র আবেদন গ্রহন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
বাজার পরিস্থিতি
সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার উর্ধ্বমুখি প্রবণতা নিয়ে শুরু হয় লেনদেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূচকও বাড়তে থাকে। লেনদেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৪৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৭৫টির, কমেছে ৪৯টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টি কোম্পানির শেয়ার দর।
ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ৮৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৮৬ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১৯ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ২২৪ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ ২৩ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮৭০ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট।
আপর বাজার সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৩৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৪টির, কমেছে ৩২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির দর।
সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪৭ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ১৬০ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে।
আরকে//