শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে আরো কয়েকটি খাত: এনবিআর চেয়ারম্যান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০০ পিএম, ৫ মে ২০১৯ রবিবার
চামড়াজাত পণ্য, এগ্রো প্রসেসিং, পেপার, কেমিক্যালসহ আরো কয়েকটি খাতকে বন্ড বা শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। ফলে এসব শিল্পে ব্যবহারের জন্য কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বর্তমানে শুধুমাত্র শতভাগ রপ্তানিমূখী তৈরি পোশাক খাত শুল্কমুক্ত বা বন্ড সুবিধার আওতায় কাঁচামাল আমদানির সুবিধা পাচ্ছে।
রোববার রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘ইমপ্রুভ ট্রেড অ্যান্ড বন্ডেড ওয়্যারহাউস পলিসিজ’ বিষয়ক কর্মশালায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এ তথ্য জানান।
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বেসরকারি খাত বিশেষজ্ঞ নুসরাত নাহিদ বাবি, এনবিআরের কাস্টমস্ বন্ড কমিশনারেটের জয়েন্ট কমিশনার মো. মসিউর রহমান, ইআরএফ সহসভাপতি সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইআরএফ ও বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
প্রধান অতিথির ভাষণে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তৈরি পোশাক খাতে এত প্রবৃদ্ধির পেছনে বন্ড সুবিধাসহ বিভিন্ন প্রণোদনার ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে দেশের মোট রফতানি আয়ের ৮৫ ভাগ আসে তৈরি পোশাক থেকে। পাশাপাশি আমরা অন্যান্য পণ্যের রফতানিও বাড়াতে চাই। এজন্য এগ্রো প্রসেসিং, চামড়াজাত পণ্য, পেপার, কেমিক্যালসহ আরো কয়েকটি খাতকে বন্ডেড ওয়্যারের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অবশ্য এক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বন্ড সুবিধার আওতায় কাঁচামাল এনে পণ্য তৈরি করে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে প্রকৃত উদ্যোক্তা যেমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে কঠোর নজরদারি করেছে রাজস্ব বোর্ডের কাস্টম বন্ড কমিশনারেট।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ইতিমধ্যে তারা ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল ও স্থগিত করেছে। অদূর ভবিষ্যতে বন্ড সুবিধার পুরো সিস্টেম অটোমেশনের আওতায় এনে মনিটরিং করার চিন্তা করছে এনবিআর। এতে এর অপব্যবহার রোধ অনেকাংশে সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে এনবিআর এর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, দেশের শতভাগ রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে কাঁচামাল আমদানিতে বন্ড (শুল্কমুক্ত) সুবিধা দেয় সরকার। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বন্ড লাইসেন্সের সুবিধা নিয়ে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেন। এতে দেশীয় শিল্প হুমকির মুখে পড়ছে পাশাপাশি সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শুল্কমুক্ত পণ্যের অপব্যবহার করে আসছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। বন্ড কর্মকর্তারা একাধিকবার সতর্ক এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিলেও অপব্যবহার ঠেকানো যাচ্ছে না। অনিয়মে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হচ্ছে। এরপরও আইনের ফাঁকে নানা বন্ড সুবিধায় আনা কাঁচামাল খোলা বাজারে বিক্রি করছে। এসব বন্ধ করতে এনবিআর উদ্যোগ নিয়েছে। পুরো ব্যবস্থা অটোমেশনের আওতায় আনার পর এ ধরনের বেআইনি কাজ আর তারা করতে পারবে না।
আরকে//