ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আইনগত সহায়তা পাওয়া কোনো করুণা নয়: প্রধান বিচারপতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ৬ মে ২০১৯ সোমবার

সরকারি ব্যবস্থাপনায় আইনগত সহায়তা পাওয়া কোনো দান বা করুণা নয়; এটা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের অধিকার, আর রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

রোববার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে `উচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সেবা: চলমান প্রক্রিয়া ও প্রত্যাশা` শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, সমাজের সবচেয়ে নির্যাতিত-নিপীড়িত ব্যক্তি, বিশেষভাবে নারী ও শিশুরা যেন লিগ্যাল এইড থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আইনগত অধিকার রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি বলেন, আইনজীবীরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বিনা ফি অথবা নামমাত্র ফিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আইনি সেবা দিতে পারে। আমার বিশ্বাস- বিচারক, আইনজীবীসহ সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুপ্রিম কোর্টে সরকারি আইনি সেবা কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।

অনুষ্ঠানে লিগ্যাল এইড সংক্রান্ত আইন, বিধি ও সার্কুলার যথাযথভাবে অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, লিগ্যাল এইড বিষয়ক আইন-কানুনকে প্রতিটি ল স্কুলের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যেন শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ের ওপর বিস্তৃত জ্ঞান লাভ করতে পারে। পাশাপাশি সরকারি খরচে পরিচালিত মামলাগুলো অত্যন্ত যত্ন এবং দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তির ব্যাপারে সংশ্নিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আরও বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. জাকির হোসেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীনা আনাম। সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। সভায় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম নিয়ে তিনটি ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম সত্যিকারভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্যানেল আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাদের আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে। আশা করি, সরকারি স্টিকার সংবলিত মামলাগুলো দায়ের থেকে নিষ্পত্তি পর্যন্ত জড়িত সব পক্ষ সর্বোচ্চ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নিষ্পত্তির চেষ্টা করবেন, যাতে অসহায় মানুষ অযথা হয়রানির শিকার না হন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। এমন দিন নেই কাগজে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন এগুলো ছাপা হচ্ছে না। এসব বিষয় ন্যায়বিচারের স্বার্থে লিগ্যাল এইডের আওতায় আনা যেতে পারে।

সভাপতির বক্তৃতায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম লিগ্যাল এইড কার্যক্রম আরও এগিয়ে নিতে এডিআর ব্যবস্থায় `ইনসেনটিভ` চালুর প্রস্তাব তুলে ধরেন।

আরকে//