ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কুরআনের আলোকে রোযা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০৫ পিএম, ৬ মে ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৪:২৬ পিএম, ৮ মে ২০১৯ বুধবার

রোযা ইসলামের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সব নবীদের শরীয়তে রোযা ফরজ ছিল। উম্মতে মোহাম্মদীর ওপর রমজানের রোযা ফরজ হয় দ্বিতীয় হিজরীতে। রোযাকে আরবী ভাষায় সাওম বলা হয়। এর অর্থ দহন, জ্বলন। সাওমের আরেক অর্থ কোন কিছু থেকে বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা। শরীয়তের পরিভাষায় সাওমের অর্থ সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খানাপিনা ও যৌন ক্রিয়া থেকে বিরত থাকা। প্রত্যেক মুসলমান বালেগ বিবেকসম্পন্ন নর-নারীর ওপর রমজানের রোযা ফরজ।

রমজানের রোযা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন- ‘হে ঈমানদারগণ। তোমাদের জন্য রোযা ফরজ করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পর্ববর্তী নবীদের উম্মতের ওপর। আশা করা যায় তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণ ও বৈশিষ্ট্য জাগ্রত হবে।’ (বাকারা ১৮৩)

‘রমজান মাসেই কুরআন মজীদ নাযিল হয়েছে, তা গোটা মানবজাতির জন্য জীবন-যাপনের বিধান এবং তা এমন সুস্পষ্ট উপদেশাবলিতে পরিপূর্ণ যা সঠিক ও সত্য পথ প্রদর্শন করে এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য পরিষ্কাররূপে তুলে ধরে।’ (বাকারা ১৮৫)

‘রোযার সময় রাতেরবেলা স্ত্রীদের সঙ্গে সঙ্গম করা তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে। তারা তোমাদের পক্ষে পোশাকস্বরূপ আর তোমরাও তাদের জন্য পোশাকস্বরূপ।’ (বাকারা ১৮৭)

‘আর রাতের খানাপিনা কর যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমাদের সামনে রাতের বুক হতে প্রভাতের শেষ আভা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। তখন এসব কাজ পরিত্যাগ করে রাত পর্যন্ত তোমরা রোযা পূর্ণ করে লও।’ (বাকারা ১৮৭)

‘আজ হতে যে ব্যক্তিই এ মাসের সম্মুখীন হবে, তার পক্ষে পূর্ণ মাসের রোযা রাখা একান্ত কর্তব্য। আর যদি কেউ অসুস্থ হয় কিংবা ভ্রমণ কাজে ব্যস্ত থাকে তবে সে যেন অন্য দিনে এ রোযা পূর্ণ করে লয়।’ (বাকারা ১৮৫)

রোযা সম্পর্কে হাদীস- হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করীম (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘যে লোক রমজান মাসের রোযা রাখবে ঈমান ও চেতনা সহকারে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’ (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযি, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করীম (সা.) বলেছেন, ‘রোযা ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ কোনদিন রোযা রাখলে তার মুখ থেকে যেন খারাপ কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে গালমন্দ করে বা বিবাদে প্ররোচিত করতে চায়, সে যেন বলে আমি রোযাদার।’ (বুখারী, মুসলিম)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা এবং তদানুযায়ী আমল পরিত্যাগ করতে পারলো না, তবে এমন ব্যক্তির পানাহার পরিত্যাগ করার আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ (বুখারী)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলে করীম (সা.)কে বলতে শুনেছি, যে লোক একদিন আল্লাহর পথে রোযা রাখবে, আল্লাহ তার মুখমণ্ডল জাহান্নাম হতে সত্তর বছর দূরে সরিয়ে রাখবেন। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযি, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)

(অধ্যাপক মাওলানা আতিকুর রহমান ভূঁইয়ার কুরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ থেকে নেয়া)

এএইচ/