বার্সাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৫৬ পিএম, ৮ মে ২০১৯ বুধবার
এবার লিভারপুল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর প্রত্যাবর্তনের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রিমিয়ার লিগ জায়ান্টরা ৪-০ গোলে বার্সেলোনাকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে লিভারপুলের হয়ে দুটি করে গোল করেছেন বিকল্প স্ট্রাইকার ডিভোক ওরিজি এবং বদলী খেলোয়াড় জিওর্জিনিও উইজনালডাম।
প্রথম লেগের ০-৩ গোলের পরাজয় নিয়ে এদিন মাঠে নেমেছিল লিভারপুল। সেই সঙ্গে ইনজুরির কারণে একাদশে ছিলেননা দলের আক্রমনভাগের দুই গুরুত্বপুর্ন খেলোয়াড় মোহাম্মদ সালাহ ও রবার্তো ফিরমিনো। কিন্তু শুরুতেই ওরিজি দারুন এক সুচনা এনে দেন লিভারপুলকে। আর দ্বিতীয়ার্ধে উইজনালডাম বদলী হিসেবে নামার পর বার্সাকে একেবারেই কোনঠাসা করে লিভারপুল আদায় করে আরো তিনটি গোল। ওই অর্ধেও ওরিজি একটি গোল করেছেন। বাকী দুই গোল এসেছে উইজনালডামের কাছ থেকে। ফলে প্রথম লেগে ৩-০ গোলের লিড পাওয়া সত্বেও কাতালানদের বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পৌছে লিভারপুল।
খেলা শেষে লিভারপুলের কোচ জার্গেন ক্লপ বলেন, ‘অন্য কোন দল হলে আমি কোন ভাবেই এটিকে সম্ভব বলতাম না। ছেলেরা আসলেই মানসিক ভাবে জায়ান্ট। আমরা এবার অকল্পনীয় একটি মৌসুম পার করছি। হাতে এখনো আরো ম্যাচ যেমন রয়েছে, তেমনি ইনজুরিতেও আমরা আক্রান্ত। তারপরও মাঠে নেমে এমন একটি পারফর্মেন্স প্রদর্শন করার কথা ভাবাই যায়না। এমন একটি দলের কোচ হতে পেরে আমি সত্যিই গর্ববোধ করছি। আজ রাতে তারা যা করে দেখিয়েছে, তা সত্যিই স্পেশাল। আমি আজীবন এটি মনে রাখব।’
এই জয়ের ফলে আগামী ১ জুন মাদ্রিদে ফেভারিট হিসেবেই ফাইনালে অংশ নিবে লিভারপুল। রেডসদের এমন ঘুরে দাঁড়িয়ে সফলতার ইতিহাস এই প্রথম নয়। ২০০৫ সালেও এমন ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপা জয় করেছিল লিভারপুল। ইস্তাম্বুলে এসি মিলানের বিপক্ষেও ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর এভাবেই লড়াইয়ে ফিওে এসে সফলতা অর্জন করেছিল ইংলিশ ক্লাবটি।
তারপরও ক্লাবের নিজস্ব ইতিহাসে ক্লপের নামটি আলাদা ভাবে খোদাই করে রাখা হবে। কারণ ঘরোয়া ফুটবল প্রিমিয়ার লিগেও ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে শিরোপার লড়াইয়ে পাল্লা দিয়ে যাচ্ছে ক্লাবটি। ২৯ বছরের শিরোপা খরা দুর করতে এখনো হাল ছাড়েনি তারা। ক্লপ বলেন, আমরা এই ঘটনার সঙ্গে ইস্তাম্বুলের ঘটনা বা অন্য কোন ঘটনার সঙ্গে তুলনা করতে চাইনা। তবে আমরা বিশ্বাস করি সুযোগের সন্ধানে থাকলে তা আসে। আমরা আমাদের মত করেই নতুন ইতিহাস রচনা করতে চাই। আমাদের অবশ্যই নতুন ইতিহাস রচনা করতে হবে। আশা করি ছেলেরা সেটি করতে পারবে।’
সালাহ ও ফিরমিনোর অনুপস্থিতি সত্বেও ক্লপের শিষ্যদের মধ্যে ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসের কোন ঘাটতি দেখা যায়নি। সালাহ ও ফিরমিনো সুস্থ থাকলে ওরিজি হয়তো একাদশের হয়ে মাঠে নামারই সুযোগ পেতেননা। ২৪ বছর বয়সি এই বেলজিয়ানই শুরুতে গোল করে দলকে আত্মবিশ্বাস এনে দেন। লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লীগে গুরুত্বপুর্ন মুহূর্তে গোল করে অবশ্য বারবারই ভুমিকা রেখেছেন তিনি। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই ম্যাচেও সপ্তম মিনিটে গোল করে প্রথমবারের মত একই ভুমিকা পালন করলেন তিনি। জর্ডান হেন্ডারসনের প্রথমিক প্রচেস্টার বলটি বার্সার গোল রক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান ফিরিয়ে দিলে ফিরতি বলটি দারুন দক্ষতায় জালে জড়িয়ে দেন ওরিজি (১-০)। এরপর প্রথমার্ধে আর কোন গোল না হলেও বিরতির পর মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে আরেক দফা বার্সার উপর চড়াও হয় লিভারপুল। ৫৪ ও ৫৬ মিনিটে পরপর দুই গোল করে লিভারপুরকে বার্সার সমতায় পৌছে দেন উইজনালডাম। এরপর ৭৯ মিনিটে ফের গোল করে লিভারপুলকে ফাইনালে খেলার নিশ্চয়তা এনে দেন ওরিজি।
এসএ/