ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মোদী-মমতার বাকযুদ্ধে জয়ী হবে কে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৫৫ পিএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:০৩ পিএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র দুটি পর্ব বাকী। আসন বাকী রয়েছে ১১৮টি। আগামী ২৩ মে হবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা। এরপরই জানা যাবে কে হতে চলছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

আর এ নির্বাচনকে ঘিরে মোদী-মমতা বাকযুদ্ধ চলছেই। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পুরুলিয়ার এক সভায় তৃণমূলের নেতাদের কয়লা মাফিয়া বলে অভিযোগ করেন। 

এর প্রতি উত্তরে পুরুলিয়ার সভা থেকে  মোদীকে তুলোধোনা করেন মমতা। তিনি মোদীকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কয়লা মন্ত্রণালয় কার অধীনে? কেন্দ্রের।’

এ রাজ্যের কয়লা খনিগুলি যে কেন্দ্রীয় পাহারায় থাকে, তা উল্লেখ করে মমতার তির, ‘কয়লা তো সিআইএসএফ পাহারা দেয়। রাজ্য পুলিশ পাহারা দেয় না। নরেন্দ্র মোদী আপনার পুলিশ, আপনার দফতর পাহারা দেয়। আপনার ক্যাডাররা তো করে খায়। আর বলছেন তৃণমূলের লোক মাফিয়া!’

মমতা বলেন, তৃণমূলের কোনও প্রার্থী কয়লা মাফিয়া, এটা প্রমাণ করতে পারলে দলের ৪২ জন প্রার্থীকেই তিনি প্রত্যাহার করে নেবেন বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানায় মমতা। একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘যদি প্রমাণ না-হয়, আপনাকে সবার সামনে ১০০ বার কান ধরে ওঠবোস করতে হবে।’

এবারের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সব চেষ্টাই করে যাচ্ছেন। এ জন্য মমতাকে আক্রমণ করে পশ্চিমবঙ্গে তার দলের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চাচ্ছেন।

অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসন নিজের দখলে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিজেদের রাখতে চাইছেন মমতা।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, মোদীর বিরুদ্ধে মমতার সুর চড়া থাকলে পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ভোট সহজেই মমতার  পক্ষে আসবে।

কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করতে গেলে দেশব্যাপী সংগঠন ছাড়াও বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হয়।

এক্ষেত্রে মোদীর থেকে মমতা অনেকটাই পিছিয়ে। কারণ বিজেপি জাতীয় দল। অন্যদিকে নিজেদের সর্বভারতীয় দাবি করলেও তৃণমূল কংগ্রেস আসলে আঞ্চলিক। তই এই ঘাটতি দূর করতেই পশ্চিমবঙ্গের সবগুলো আসন নিজের করতে চায় মামতা।

এদিকে প্রশ্ন উঠতে পারে, কথার লড়াইয়ে ভোটারদের মনে কী কোনো প্রভাব ফেলে? হয়তো সাময়িক উত্তেজনা বাড়ে! দিনের শেষে বাজার দর, বেকারত্ব, ধর্মীয় আগ্রাসন, বেকারত্ব, শিল্পদ্যোগ অকেটাই প্রভাব ফেলে ভোটবাক্সে।

তাই কটাক্ষ-পাল্টা কটাক্ষে ভোটের বাজার গরম হলেও জনগণের মতামত গড়ে ওঠে সমসাময়িক পরিস্থিতির ওপর।

এদিকে গত এপিলে অক্ষয় কুমারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদী বলেন, বছরে দুই থেকে তিনবার মমতা নিজে পছন্দ করে তার জন্য কুর্তা পাঠান। এমনকি বাংলা থেকে ভালো ভালো মিষ্টিও পাঠান মমতা।

এ কথা ফাঁস করে ভোটারদের কাছে মমতাকে খাটো করতে চেয়েছেন মোদী। এটা বোঝানো যে, ঝগড়াটা তাদের ওপর-ওপর। সরকার গড়তে প্রয়োজনে মমতার দ্বারস্থ হতে তিনি প্রস্তুত।

তাদের এ বাকযুদ্ধে কে জয়ী হবে তা দেখা যাবে আগামী ২৩ এপ্রিল নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার মাধ্যমে। তাই এ পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

এমএইচ/