ঋণদাতার যাকাতের বিধান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৪৩ পিএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ১১:৫৮ এএম, ১১ মে ২০১৯ শনিবার
ঋণদাতা নিসাব ও বছর পূর্তিসাপেক্ষে প্রদত্ত ঋণের যাকাত আলাদা অথবা যাকাতযোগ্য অন্যান্য অর্থের সঙ্গে মিলিয়ে যাকাত আদায় করবেন।
ঋণপ্রদত্ত অর্থ সন্দেহাতীতভাবে যাকাতবর্ষের মধ্যেই ফেরত পাবেন অথবা নিশ্চিতভাবেই কিছুদিনের মধ্যে ফেরত পাচ্ছেন, যদিও তা যাকাতের হিসাবের সময় পাওয়া যায়নি, তবে সেই ঋণের অর্থের ওপর যাকাত প্রযোজ্য হবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) এর একটি বর্ণনায় এসেছে, ‘আপনার যেসব ঋণ ফেরত পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন, বছরপূর্তিতে আপনার ওপর তার যাকাত প্রযোজ্য হবে।’ (ইসলামের যাকাত বিধান : ইউসুফ আল কারযাভী)
ঋণদাতার ঋণের অর্থ শীঘ্রই ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে বটে, কিন্তু কবে-কখন ফেরত পাবেন তা নিশ্চিত নয়। যেমন দেনাদার ঋণ স্বীকার করছে, ভবিষ্যতে অস্বীকার করার সম্ভাবনা নেই এবং তার থেকে উসুল করাও সম্ভব। এমন হলে তিনি অর্থ ফেরত না পেলেও নিসাব পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে প্রতিবছর বছরান্তে ঋণপ্রদত্ত অর্থের যাকাত দিয়ে যাবেন। আর যদি ঋণের অর্থের যাকাত দেয়ার মতো সামর্থ্য তার না থাকে, তবে ঋণপ্রদত্ত অর্থ ফেরত পাওয়ার পর বিগত বছরগুলোর যাকাত হিসাব করে দিয়ে দেবেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি কাউকে ঋণ প্রদান করল এবং সে তা ফেরত পাবে বলে নিশ্চিত, তাহলে তার ওপর ঋণের যাকাত দেয়া আবশ্যক’।
যদি ঋণের অর্থ ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, যেমন দেনাদার ঋণ অস্বীকার করছেন অথবা তিনি গরীব, ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ্য তার নেই অথবা ঋণ নিয়ে টালবাহানা করছেন, এসব ক্ষেত্রে ঋণের অর্থের ওপর যাকাত প্রযোজ্য হবে না। কারণ, ঋণ তার পূর্ণ আয়ত্তে নেই এবং সে তাতে কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা রাখে না। তবে ভবিষ্যতে কখনও ঋণের অর্থ ফেরত পেলে, উক্ত অর্থ ফেরতপ্রাপ্তির বছরের যাকাত প্রদান করবেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) বলেন, ‘তোমরা প্রতি বছরপূর্তিতে তোমাদের সম্পদের যাকাত দাও। যে ঋণ ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে তার যাকাত দাও। আর যদি সন্দেহপূর্ণ ঋণ হয়, তবে ঋণগ্রহীতা ফেরত দেয়ার পূর্বে তার যাকাত দিতে হবে না।’ (ইসলামের যাকাত বিধান : ইউসুফ আল কারযাভী)
তেমনিভাবে মানুষের কাছে যাদের বকেয়া রয়েছে, যেমন বকেয়া দেনমোহর যা স্বামী এখনও স্ত্রীকে প্রদান করেনি, কাস্টমারের কাছে থাকা দোকানির অবশিষ্ট কিস্তি, এছাড়া অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ওপরও যাকাত নেই, যতক্ষণ না মালিক তা হস্তগত করবে। হাতে পাওয়ার পর থেকে যখন এক বছর পূর্ণ হবে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে। অনুরূপভাবে চুরি যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সম্পদের যাকাত ওয়াজিব হবে না। কারণ, তার ওপর মালিকের পুরোপুরি কর্তৃত্ব নেই। তবে সম্পদ ফেরত পাওয়ার পর নিসাব ও বছর পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে তার ওপর এক বছরের যাকাত ওয়াজিব হবে।
তথ্যসূত্র : সেন্টার পর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)
এএইচ/এসি