ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বেনাপোলে শিশু পাচার আতঙ্ক

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:৪৫ পিএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৫৭ পিএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার

কয়েক দিন ধরে যশোরের বেনাপোল ও শার্শা এলাকায় শিশু পাচারকারী আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি শিশুকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে বেশ কিছু নারী ও পুরুষ। ধরা পড়া নারী ও পুরুষের মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা বলে সাধারণ মানুষ গুজব ছড়ালেও এরা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি পুলিশের। বিষয়টি কেউ কেউ গুজব বলে উড়িয়ে দিলেও বাস্তবে তা এখন ভয়াবহতায় রুপ নিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখতে থানার কর্মকর্তাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলেছেন।

ফুসলিয়ে শিশু নিয়ে যাওয়ার সময় গত দু‘দিনে বেনাপোলে চারজন নারী পুরুষকে আটক করে স্থানীয় জনতা। স্থানীয় কয়েকজন যুবক এদের রোহিঙ্গা বলে গুজব ছড়ায়। পরে ব্যাপকভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায় এরা বাড়ি থেকে পালিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। মানসিক ভারসাম্যহীন।

শুক্রবার সকালে বেনাপোল মাছ বাজারের পিছনে নাছিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া প্রদীপ দাসের ছেলে কুমার (৫) ও আলেক হোসেনের ছেলে মুনছুর (৪) নামে দুই শিশুকে বুলু (৪৮) নামে এক মহিলা মিষ্টি দিয়ে তাদের ভুলিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনগনের হাতে আটক হয়। প্রথমে তাকে রোহিঙ্গা বলে দাবি করা হলেও পরে জানা যায় সে মানসিকভাবে অসুস্থ। তার বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার শালবরাত গ্রামে। স্বামীর নাম অরবিন্দ। এর আগে জনতার হাতে আটক হয় সিলেটের ছাতক উপজেলার দক্ষিণসার গ্রামের জমসের আলীর ছেলে গিয়াসউদ্দিন (৩৩), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীকলস গ্রামের রুহুল আমিনের স্ত্রী হাফিনা বেগম (৪৪) ও গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার রামদিয়া গ্রামের সজ্ঞিতের স্ত্রী নমিতা(৩৫)।

ধরা পড়লে কারো কারো পিটিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে আবার কারো কারো পিটিয়ে আটকে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। পরে খোঁজ খবর নিয়ে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। 

এ ঘটনায় ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়। আতঙ্কে রয়েছেন শিশুদের পরিবার। ছোট ছোট শিশুসহ সব শ্রেণির মানুষের মাঝে এখন একটাই আলোচনা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ছেলে ধরা শিশু পাচারকারী বিষয় নিয়ে।

অভিভাবকের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, আমরা খুবই উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত বাচ্চাদের নিয়ে। সব সময় তাদেরকে নজরদারিতে রাখতে হচ্ছে। এভাবে কত সময় পাহারা দিয়ে রাখবো, একা একা ছাড়তে ভয় পাচ্ছি। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানান। পাশাপাশি সর্বত্র যেন মাইকিং এর ব্যবস্থা করে জনগনকে সচেতন করা হয়। 

শার্শা থানা পুলিশের এস আই হাসান আলী বলেন, শিশু পাচার বা ছেলে ধরা আতঙ্ক এখানে বিরাজ করছে। সকলকে সচেতন হতে হবে সজাগ থাকতে হবে। কোনো অপরিচিত নারী বা পুরুষকে দেখলে যেন তৎক্ষণাৎভাবে পুলিশের কাছে জানানো হয়।

বেনাপোল পোর্ট থানার এস আই আব্দুল লতিফ বলেন, যারা বাচ্চাদের চুরির সঙ্গে জড়িত তারা সকলে বাংলাদেশি, এরা রোহিঙ্গা না, ভুল তথ্য প্রকাশ করে সরকারকে যারা চাপে ফেলতে চাই তারায় এসব উল্টাপাল্টা কথাবার্তা ছড়াচ্ছে। যাদের কে ধরা হচ্ছে তারা মানসিক বিপদগ্রস্থ ভারসাম্যহীন। তারপরেও আইন শৃংখলার রক্ষায় এ ব্যাপারে পুলিশ সবর্দা সর্তকবস্থায় রয়েছে।

কেআই/