কুরআন ও হাদীস আলোকে তওবা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৪৫ পিএম, ১৩ মে ২০১৯ সোমবার
তওবা শব্দের অর্থ প্রত্যাবর্তন করা, ফিরে আসা, ক্ষমা প্রার্থনা, অনুতাপ করা প্রভৃতি। আর পরিভাষায় কোন অন্যায় কাজ হয়ে যাবার পর অনুতাপ অনুশোচনা করে সেই কাজের জন্যে ক্ষমা চাওয়া এবং সেই অন্যায় কাজ ছেড়ে ভাল কাজে ফিরে আসাকেই তওবা বলা হয়।
তওবা ও তওবাকারীর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা কুরআন শরীফে বলেন- ‘কিন্তু যারা তওবা করবে, ঈমান আনবে এবং ভাল কাজ করবে আল্লাহ তাদের খারাপ কাজসমূহকে ভাল কাজ দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আর যারা তওবা করে এবং নেককাজ করে আল্লাহর প্রতি তাদের তওবাই সত্যিকারের তওবা।’ (ফুরকান ৭০-৭১)
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা সবাই তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আস, যাতে করে তোমরা সফল হতে পার।’ (নূর ৩১)
‘অতঃপর তারা কি আল্লাহর দিকে তওবা করে কি ফিরে আসবে না এবং তাদের গোনাহসমূহের জন্যে ক্ষমা চাইবে না? অথচ আল্লাহ তো ক্ষমাশীল এবং মেহেরবান।’ (মায়েদা ৭৪)
‘আল্লাহর কাছে তাদের তওবাই সত্যিকারের তওবা যারা অজ্ঞতাবশত খারাপ কাজ করার সঙ্গে সঙ্গেই তওবা করে। আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করেন। আল্লাহ তো মহাজ্ঞানী ও হেকমতওয়ালা।’ (নিসা ১৭)
‘কিন্তু যারা তওবা করে ও নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করে নিবে এবং যা গোপন করছিল তা প্রকাশ করে তাদেরকে আমি মাফ করে দিব, প্রকৃতপক্ষে আমি তওবা গ্রহণকারী ও দয়ালু।’ (বাকারা ১৬০)
তওবা সম্পর্কে হাদীস : হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা গুণাহ করার পর ক্ষমা ভিক্ষার জন্যে যখন আল্লাহর দিকে ফিরে যায় তখন আল্লাহ সে ব্যক্তির তওবার দরুন ওই ব্যক্তির চেয়েও অধিক খুশী হন, যে ব্যক্তি নিজের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উট কোন ময়দানে হারিয়ে যাবার পর হঠাৎ তা পেয়ে যায়।’ (বুখারী, মুসলিম)
হযরত আসরার ইবনে ইয়াসার আলমাজানী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে লোক সকল, তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আমি প্রতিদিন একশত বার তওবা করে থাকি।’ (মুসলিম)
হযরত আবু আবদুর রহমান আবদুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হতে বর্ণিত তিনি রাসূল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, মৃত্যুর যন্ত্রণা শুরু না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাঁর বান্দার তওবা কবুল করেন। (তিরমিযি)
হযরত আবু মুসা আবদুল্লাহ ইবনে কায়েস আশয়ারী (রা.) হতে বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেছেন, পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা দিনের অপরাধীদের ক্ষমা করার জন্য রাতে এবং রাতের অপরাধীদের ক্ষমা করার জন্য দিনে ক্ষমার হাত প্রসারিত করে রাখেন। (মুসলিম)
(কুরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ থেকে)
এএইচ/