কৃতজ্ঞতা ইবাদতের প্রাণরস
ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরী
প্রকাশিত : ০৫:০০ পিএম, ১৩ মে ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ১১:১০ এএম, ১৬ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার
যখন একটি গাছ মাটি থেকে প্রাণরস সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়, তখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই গাছ সতেজ সবুজ ও ডালপালা সমৃদ্ধ করে দৃষ্টিনন্দনভাবে বেড়ে ওঠে। যার মন স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতাবশত সিক্ত তার ইবাদত হয় প্রাণবন্ত, সতেজ। কৃতজ্ঞতার শুরু হয় অন্তরে আর পরিণতি লাভ করে স্রষ্টার প্রতি দাসত্বে। দাসত্ব যদি হয় বহিরঙ্গ তাহলে কৃতজ্ঞতা হলো প্রাণ।
প্রাণহীন দেহের যেমন কোন দাম নেই, তেমনি অন্তরে কৃতজ্ঞতাবিহীন দাসত্ব আনুষ্ঠানিকতার বহর মাত্র। স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতায় দ্রবীভূত হৃদয় ছাড়া নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, দান-খয়রাত ইত্যাদি উপাসনা প্রাণ পায় না, পূর্ণতা পায় না, সৌন্দর্যমণ্ডিত হয় না।
তাই আল্লাহতায়ালা, যারা তার দাসত্ব স্বীকার করেছে তাদেরকেও কৃতজ্ঞ হতে বলেছেন-‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যদি বাস্তবিকই একমাত্র আল্লাহর বান্দা হয়ে থাক, তবে যেসব পবিত্র দ্রব্য আমি তোমাদের দান করেছি তা নিঃসঙ্কোচে খাও ও আল্লাহর শোকর আদায় কর।’ (সূরা বাকারা ২/১৭২)
‘তোমরা খাও সেসব জিনিস থেকে যা আল্লাহ তোমাদেরকে দান করেছেন হালাল ও পবিত্ররূপে এবং আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর যদি তোমরা কেবল তারই ইবাদত কর।’ (সূরা নাহল ১৬/১১৪)
অর্থাৎ স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, আল্লাহতায়ালা কৃতজ্ঞতা প্রকাশকেও তার দাসত্বের প্রমাণস্বরূপ পেশ করেছেন। যারা নিয়মিত ইবাদত করে অথচ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, তারা সত্যিকার অর্থে আল্লাহর প্রতি দাসত্বকে সঠিক মানে উন্নীত করতে ব্যর্থ হয়। কেননা স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রেরণা ছাড়া ইবাদত বা উপাসনা প্রাণহীন আনুষ্ঠানিকতায় রূপান্তরিত হয়।
তাই বিপদে-আপদে, অভাবে-প্রাচুর্যে, ঘরে বাইরে, কর্মে বা বিশ্রামে সর্বাবস্থায় শোকরিয়াকে জীবনের অংশ করে নিন। আল্লাহ আপনার অন্তরের খবর রাখেন, প্রয়োজনের খবর রাখেন, সমস্যার খবর রাখেন এবং সমস্যা থেকে মুক্তি বা প্রয়োজন পূরণের পদ্ধতি তার নখদপর্ণে। আপনি তার শোকরিয়ায় নিমগ্ন থাকুন। তিনিই আপনার সবকিছু দেখবেন ও আপনার প্রয়োজন পূরণ করবেন সর্বোত্তম পন্থায়।
সূত্রঃ (শোকরিয়া, প্রশান্তি ও প্রাচুর্যের রাজপথ গ্রন্থ থেকে)
এএইচ/