ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ডা. সামন্ত লাল সেন

‘সুবীর নন্দীর গান থেকে তরুণ শিল্পীদের অনেককিছু শেখার অাছে’

আলী আদনান :

প্রকাশিত : ০৬:২৩ পিএম, ১৫ মে ২০১৯ বুধবার

[ডা. সামন্ত লাল সেন। শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এন্ড সার্জারী- এর সমন্বয়ক। শুধু পেশাগত দিক থেকেই নয় বরং মানবিক দিক থেকে ছুটে যান যে কোন বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে। প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী সুবীর নন্দীর মৃত্যুকালীন সময়ে তিনি ছিলেন তাঁর পাশে। শিল্পী সুবীর নন্দীকে নিয়ে অনেক অজানা কথা জানালেন ডা. সামন্ত লাল সেন। যা একুশে টেলিভিশন অনলাইন পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।]

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘অামার সঙ্গে সুবীর নন্দীর পরিচয় অাশির দশকে। সুবীর নন্দী তখন দিল্লী রোডের একটা বাসায় থাকতেন। সেখানে মেট্রোপলিটন নামে একটা ক্লিনিক ছিল। সেখানে অামি চাকরী করতাম। সুবীর নন্দী প্রায় সেখানে অাসতেন। তার স্ত্রী তখন অন্ত:সত্ত্বা। সুবীর নন্দী শুধু তখন নয় বরং সবসময় অামাকে বড় ভাইয়ের মত সম্মান করতেন। এমনকী অনেক অনুষ্ঠানেও অামি থাকলে সুবীর অামাকে পা ছুঁয়ে প্রণাম করে মঞ্চে উঠতেন।’

‘২০১৩ সালে সুবীর নন্দীর একটা হার্ট অ্যাটাক হয়। তার নয়টা ব্লক ধরা পড়ে।  এরপর অামেরিকায় তার ওপেন হার্ট সার্জারী হয়। তখন দুইটা ব্লক সারানো হয়। বাকিগুলো ছিল।’

তিনি বলেন, ‘গত মাসে তিনি একটি পূজার অনুষ্ঠানে সিলেট গিয়েছিলেন। ফেরার সময় ট্রেনে তার প্রচন্ড শরীর খারাপ হয়। তখন সঙ্গে তার স্ত্রী, মেয়ে, মেয়ের জামাই সবাই ছিলেন। বাবার এই অবস্থা দেখে সুবীর নন্দীর মেয়ে গার্ড কে বললেন, অাপনারা ট্রেনটা একটু তাড়াতাড়ি চালান। কোথাও দাঁড়াবেন না, কারন অামার বাবার শরীর খুব খারাপ। ট্রেন কর্তৃপক্ষ হেড কোয়ার্টারের সঙ্গে কথা বলে ট্রেন অার কোথাও থামায়নি। ঢাকায় নিয়ে এসে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়। অামি এটা বলার উদ্দেশ্য হলো এর দ্বারা প্রমাণিত হয় সুবীর নন্দী কতোটা জনপ্রিয় ছিলেন।’

‘এরপর সিএমএইচ- এর ডাক্তাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করলেন। পনের দিন এভাবে চিকিৎসা হলো। তার হার্টের অবস্থা এতোটাই খারাপ ছিল বাংলাদেশী ডাক্তাররা অামাকে স্পষ্ট বলেছেন, তাকে কিছু করার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতির যে সাপোর্ট দরকার তা অামাদের দেশে নেই।  না ববললেই নয়, অামাদের লজিস্টিকস সাপোর্ট নাই। যদি লজিস্টিকস সাপোর্ট ম্যানেজ করতে পারি তাহলে অামাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক এগিয়ে যাবে।’

‘এরপর অামি পরামর্শের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট গেলাম। অামার সাথে রফিকুল অালম, তপন চৌধুরী, কুমার বিশ্বজিৎ এরা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন, তাকে অামি ১৯৯৬ সালেও একবার চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিলাম। বলেছিলাম, সাবধানে থাকতে। কিন্তু সে সাবধানে থাকলো না।’

‘অামি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাগজপত্র সিঙ্গাপুরে পাঠালাম। কিন্তু কাগজপত্রের অবস্থা দেখে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল রাজী হয়নি। পরে অাবার পাঠানোর পরে রাজী হল। সিঙ্গাপুরেও তারা যথেষ্ঠ চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।’

অামি একুশে টেলিভিশন অনলাইনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, সুবীর নন্দীর গানগুলো যেন রিজার্ভ করে রাখা হয়। সুবীর নন্দীর কাছ থেকে এখনকার শিল্পীদের অনেক কিছু শেখার অাছে।

আআা/এসএ/