ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

জৌলুস হারাচ্ছে রাজধানীর পুরাতন মার্কেটগুলো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৪৯ পিএম, ১৮ মে ২০১৯ শনিবার

নতুনত্ব আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় জৌলুস হারাচ্ছে রাজধানীর পুরাতন মার্কেটগুলো। একটা সময় ঈদ কেনাকাটা আর মার্কেট বলতেই নাম শোনা যেত নিউ মার্কেট আর চাঁদনী চক সুপার মার্কেট, গুলিস্তানের পীর ইয়ামেনী মার্কেট, হাতিরপুলের নাহার প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা, ধানমন্ডির রাপা, মেট্রো ও প্রিন্স প্লাজা, মৌচাকের হোসাফ টাওয়ার, এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকা সুপার মার্কেটের নাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা আর নতুনত্বের বিপরীতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পুরাতন মার্কেটগুলো।

নব্বই দশকে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি মার্কেটই এখন ক্রেতা হারাতে হারাতে তাদের চরিত্রও পাল্টে ফেলেছে। একটা সময়ে যে শপিংগুলোতে বিক্রি হতো প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবীসহ বাহারি ধরনের পোষাক, বর্তমান সময়ে সেগুলোতেই চলছে বিভিন্ন ধরণের পণ্যের ব্যবসা।

রাজধানীর পুরাতন মার্কেটগুলোর এ সংকটের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, যমুনা ফিউচার পার্কের মতো বড় বড় শপিং মল হওয়ায় ক্রেতারা পুরাতন মার্কেটগুলোতে আসছে না, ফলে মার্কেটগুলো ক্রেতা সঙ্কটে পড়েছে। একই মার্কেটে সব ধরনের পণ্য ও অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকায় এ সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

রাজধানীর হাতিরপুল এলাকায় রয়েছে একসময়ে হাঁকডাক পেটানো বেশ কয়েকটি মার্কেট। তার মধ্যে নাহার প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা, মোতালেব প্লাজা অন্যতম। ব্যাপক প্রচার আর বিজ্ঞাপন দিয়ে এগুলো উদ্বোধন করা হলেও তা এখন মোবাইল ফোন ও অ্যাসসেসরিস মার্কেট হিসেবেই পরিচিত।

মৌচাকের হোসাফ টাওয়ারে নিচতলায় ফটোকপি, স্টেশনারিসহ বিভিন্ন পণ্যের কয়েকটি দোকান রয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মার্কেটটির চলন্ত সিঁড়িগুলো অধিকাংশ সময় থাকে বন্ধ; বন্ধ থাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রও। বর্তমানে এর ওপরের কয়েকটি তলা নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এ টাওয়ারের নিচতলার স্টেশনারি ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, ১০ বছর আগে গার্মেন্ট আইটেমের দোকান হিসেবেই আমি দোকান ভাড়া নিয়েছিলাম। প্রথম দিকে ভালোই চলেছে। এসি মার্কেট, আশপাশে তেমন কোনো মার্কেট না থাকায় কাস্টমারও বেশি ছিল। শান্তিনগরে ইস্টার্ন প্লাস, কনকর্ড মার্কেট হওয়ার পর এ মার্কেটে ভাটা পড়ে। বাধ্য হয়েই ব্যবসা পাল্টে ফেলেছি। অনেকে অন্য মার্কেটে চলে গেছেন বলেও জানান তিনি।

গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের জনপ্রিয় একটি মার্কেট ছিলো অভিনেতা আবদুল কাদেরের পীর ইয়ামেনী মার্কেট। বর্তমানে এ মার্কেটে শাড়ি-পাঞ্জাবির কয়েকটি পাইকারি দোকান থাকলেও খুচরা পর্যায়ে সেখানে আর ক্রেতা সমাগম ঘটছে না। মার্কেটটির ওপরে আবাসিক হোটেল ও কয়েকটি বণিক সমিতির কার্যালয় রয়েছে।

ধানমন্ডিতে কাছাকাছি এলাকায় রয়েছে রাপা প্লাজা, মেট্রো প্লাজা, এআর প্লাজা ও প্রিন্স প্লাজা। গত তিন বছর ধরে প্রিন্স প্লাজার পুরোটাই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকিগুলোয় বিভিন্ন নিত্যপণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলেও তা আগের মতো নেই।

টিআই/এসএইচ/