উচ্চ রক্তচাপ হলে যা করবেন
ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত : ১২:২০ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ১২:২২ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার
দেশে উচ্চ রক্তচাপ আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আগে বয়স্কদের মধ্যে রক্তচাপের প্রবণতা বেশি থাকলে তরুণরাও এই নীরব ঘাতকের শিকার হচ্ছেন। অনেকেই জানেনই না যে, তিনি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অনেকেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে দেড় শ’কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। এই রোগে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
মনে রাখা উচিত, উচ্চ রক্তচাপ প্রায়ই একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত, অর্থাৎ একবার আক্রান্ত হলে আর ভাল হয় না, তবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এর জন্য চিকিৎসা ও প্রতিরোধ দুটোই জরুরি। তা না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি হঠাৎ করে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে।
একবার উচ্চ রক্তচাপ হয়ে গেলে তা আর ভাল হয় না। একে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং অবশ্যই তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধপত্র সেবন করতে হবে। অনেক রোগী কিছুদিন ওষুধ খাবার পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এলে ওষুধ বন্ধ করে দেন।
মনে করেন, রক্তচাপ তো ভাল হয়ে গেছে, কাজেই ওষুধ খাওয়ার দরকার কি? এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কোনক্রমেই ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া ওষুধ পরিবর্তন বা সেবন বন্ধ করা যাবে না।
অনেকেই আবার উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত জানার পরেও ওষুধ খেতে অনীহা প্রকাশ করেন বা খেতে চান না। কারও কারও ধারণা একবার ওষুধ খেলে তা আর বন্ধ করা যাবে না, তাই ওষুধ নিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
আবার কেউ কেউ এমনও ভাবেন যে, উচ্চ রক্তচাপ তার দৈনন্দিন জীবন প্রবাহে কোনো সমস্যা করছে না বা রোগের কোনো লক্ষণ নেই, তাই উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে চান না বা প্রয়োজন মনে করেন না। মনে করেন, ভালই তো আছি, ওষুধের কি দরকার? বলাবাহুল্য, এই ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভুল এবং অযৌক্তিক।
এই ধরনের রোগীরাই হঠাৎ করে হৃদরোগ বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, এমনকি তাদের মৃত্যুর ঝুঁকিও অমূলক নয়। তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে এবং নিয়মিত চেক আপ করাতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রতিরোধই সর্বোত্তম। উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের শৃঙ্খলা মেনে চলাই সবচেয়ে জরুরি।
লেখক: সাবেক ডিন ও চেয়ারম্যান, মেডিসিন অনুষদ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়