কোরআন ও হাদীসের আলোকে জান্নাত
অধ্যাপক মাওলানা আতিকুর রহমান ভূঁইয়া
প্রকাশিত : ০১:৩২ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০১:৫৬ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার
পরকালীন জীবনে মুসলমানদের অন্যতম একটি চাওয়া হচ্ছে জান্নাত। জান্নাত লাভের আশায় মুসলমানরা ইহকালীন জগতে তাদের এবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকেন, আল্লাহকে সর্বদা স্মরণ করেন। আসুন জেনে নেই জান্নাত কী?
জান্নাত শব্দের অর্থ উদ্যান, বাগান, সুখময় স্থান ইত্যাদি। পার্থিব ক্ষণস্থায়ী জীবনের অবসানের পর মুমিনের অনন্ত সুখময় চিরস্থায়ী জীবনের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে সুসজ্জিত আবাস প্রস্তুত করে রেখেছেন তাই হলো জান্নাত বা বেহেশত।
কোরআনের আলোকে জান্নাত
জান্নাত সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে বলেন- ‘তোমরা তোমাদের প্রভু পরওয়ারদিগারের ক্ষমা লাভের প্রতি দ্রুত ধাবিত হও এবং সে জান্নাতের প্রতি যার আয়তন আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সমান।’ (আল ইমরান-১৩৩)
‘হে মুহাম্মদ! আপনি সুসংবাদ প্রদান করুন যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে নিশ্চয় তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে।’(বাকারা-২৫)।
‘আল্লাহ মুমিন নর-নারীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জান্নাতের। যার নিম্ন দেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান সেথায় তারা চিরদিন থাকবে। এই চির সবুজ শ্যামল জান্নাতে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র পরিচ্ছন্ন বসবাসের স্থান। আল্লাহর সন্তোষ লাভ করে তারা হবে সৌভাগ্যবান আর তা হবে তাদের জন্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য।’(তাওবা-৭২)
‘জান্নাতে তোমাদের মন যা চাইবে তাই দেয়া হবে এবং তোমরা সেখানে যা চাইবে তাই পাবে।’(হা-মীম সিজদা- ৩১)
‘মুত্তাকী লোকদের জন্য ওয়াদাকৃত জান্নাতের নমুনা হলো এই যে, তাতে রয়েছে স্বচ্ছ পানির ঝর্ণাসমূহ, চির সুস্বাদু দুধের প্রবাহ এবং পানকারীদের জন্য বিশেষ স্বাদযুক্ত পানীয়ের প্রবাহ এবং বিশুদ্ধ নহরসমূহ। ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হবে স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন মধুর।’ (মুহাম্মদ-১৫)
হাদিসের আলোকে জান্নাত
হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য জান্নাতে এমন সব নিয়ামত তৈরি করে রেখেছি যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শুনেনি এবং কোনো অন্তঃকরণও তা সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখে না। (বুখারী, মুসলিম)
হযরত জাবির (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অবশ্যই জান্নাতবাসীরা জান্নাতে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করবে। কিন্তু তাদের থুথু ফেলার, পেশাব-পায়খানা করার কিংবা নাক ঝাড়ার প্রয়োজন হবে না। সাহাবীরা প্রশ্ন করলেন, তাদের ভক্ষ্যবস্তুর (পেটে) কি দশা হবে? হুজুর (সা.) বললেন, ঢেকুর ও পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে বের হবে। কিন্তু মেশকের সুগন্ধ বের হবে। আর জান্নাতবাসীর অন্তরে আল্লাহর তাসবীহ ও তাহমীদ এমনভাবে বেধে দেয়া হবে যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস। (অর্থাৎ জান্নাতিরা শ্বাস-প্রশ্বাসের ন্যায় সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করতে থাকবে। (মুসলিম)
জান্নাত নিয়ে আরও অসংখ্য হাদীস রয়েছে যা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি।
জান্নাতের ৮টি স্তর
১. জান্নাতুল ফিরদাউস, ২. দারুল মাকাম, ৩. জান্নাতুল মাওয়া, ৪. দারুল কারার, ৫. দারুস সালাম, ৬. জান্নাতুল আদনে, ৭. দারুন নায়ীম ও ৮. দারুল খুলদ।
(কোরআন ও হাদীস সঞ্চয়ন গ্রন্থ)
এএইচ/