ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

রমজানে জন্ডিস রোগীদের করণীয় (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১২ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৪:৪৮ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার

এবারের রমজানে আবহাওয়া গরম থাকার কারণে জন্ডিস দেখা দিতে পারে। পূর্বে যাদের জন্ডিস ছিল তাদের জন্ডিস আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই রমজানে যেন জন্ডিস না হয় এবং জন্ডিস রোগীরা কিভাবে রোজা রাখবেন এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে একুশে টিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘সিয়াম ও আপনার স্বাস্থ্য’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে।

জন্ডিস নিয়ে আলোচনা করেছেন- অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ (পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজী বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পরিচালক শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল)। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন- ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ। যা একুশের টিভি অনলাইন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :

অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, জন্ডিস হচ্ছে সবার কাছে একটি পরিচিত সমস্যা। জন্ডিস কোনো রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

জন্ডিস সাধারণত দুইভাবে হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবাণুবাহিত জন্ডিস সাধারণত বিশুদ্ধ খাবার গ্রহণ না করার কারণে হতে পারে। অন্যদিকে দূষিত রক্ত গ্রহণ করার মধ্যমেও জন্ডিস হয়। তাই খাবার ও রক্ত গ্রহণে আমাদের সচেতন হতে হবে।  

তিনি বলেন, সাধারণ জন্ডিস হিসেবে পরিচিত ‘এ’ ও ‘ই’ মূলত খাবারের দূষণের কারণে হয়ে থাকে। তাই খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। পরিবারের সবাইকে বিশুদ্ধে খাবারের গ্রহণে সচেষ্ট থাকতে হবে।

অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, গরমের সময় সাধারণত জন্ডিস বেশি হয়ে থাকে। গরমের সময় রাস্তার খাবার, খোলা বাসি খাবার, পঁচা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে জন্ডিস হয়ে থাকে।

এই ধরুন রাস্তার পাশে আখের রস বিক্রি হচ্ছে বা লেবুর পানি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এখন দেখার বিষয় হচ্ছে যারা এগুলো বিক্রি করছেন তারা কতটুকু হাইজিন মেনে চলছেন।

একটা রেস্তোরায় খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এরমধ্যে তাদের পানিটা বিশুদ্ধ নয়। ফলে এ রোস্তোরায় যতজন লোক খাবার খাবেন তাদের সবারই ক্ষতি হবে। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বর্তমানে আমাদের সরকার বিশুদ্ধ পানি এবং পয়:নিষ্কাষণের বিষয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,  পূর্বে বিশুদ্ধ পানি এবং পয়: নিষ্কাষণের যে ব্যবস্থা ছিল তা প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। তবে বর্তমান সরকার এ বিষয়ে জোড়ালো পদক্ষেপ নিচ্ছে।

নেশাগ্রস্ত লোকের রক্ত গ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন,  নেশাগ্রস্ত  ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাস বেশি দেখা যায়। তাই তাদের রক্ত গ্রহণ করার ব্যপারে সচেতন হতে হবে। তবে আশার দিক হচ্ছে আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক হাসপাতালে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়ার আগে পরীক্ষা করে নিচ্ছে।

ভেজাল খাবার সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, ভেজাল খাবার, মেয়াদউত্তীর্ণ খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কেউ যেন এ সমস্ত খাবার বাজারে বিক্রি করতে না পারে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কেননা ভেজাল খাবার গ্রহণের কারণে জন্ডিসসহ অন্যান্য মরণরোগ হতে পারে।  

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শরীরে যত প্রকার রোগ হয় তার মধ্যে অধিকাংশই খাবারের সাথে সম্পর্কিত। তাই আমরা যদি সঠিক খাবারটা গ্রহণ করতে পারি তাহলে আমরা অনেকগুলো রোগ থেকে মুক্তি পাব।

জন্ডিস রোগীদের জন্য সুচিকিৎসা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জন্ডিস রোগীদের অন্যতম চিকিৎসা হচ্ছে বিশ্রাম নেওয়া। খাবার গ্রহণে সচেতনতা।

স্বল্প মেয়াদী জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীর সাধারণত জ্বর হয়। পরে তার চোখ ও পস্রাব হলুদ হয়ে যায়। ক্ষুদা কমে যায়। পেটে ব্যথা হয়। বমি বমি ভাব হয়। শরীর দূর্বল হয়ে যায়।

জন্ডিস রোগীদের রোজা রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, জন্ডিস রোগীদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে রোগের মাত্রার ওপর নির্ভর করবে। যদি কারো বেশি জন্ডিস থাকে, শরীর দূর্বল হয় এবং ঠিক মতো খাবার খেতে না পারে সে ক্ষেত্রে রোজা না রাখা যেতে পারে। তবে রোগী যদি ক্ষেতে পারে সেক্ষেত্রে রোজা রাখতে পারে।

পরিশেষে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক কার্ক্রম শুরু হয়েছে। তবে এখনো বড় পরিসরে কাজ শুরু হয়নি। আশা করছি অচিরেই এখানে লিভার ক্যান্সারের রোগীসহ পেটের নানা সমস্যার চিকিৎসা দেওয়া হবে।

(শ্রুতি লিখন : মাহমুদুল হাসান)

বিস্তারিত দেখেনু ভিডিওতে :

এমএইচ/