সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাবিপ্রবি মজার স্কুলের ঈদ বস্ত্র বিতরণ
হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:০১ পিএম, ১৯ মে ২০১৯ রবিবার
পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদ উপলক্ষে এইচএসটইউ মজার স্কুলের আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিত শতাধিক গরীব ও দুস্থ শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে ।
রোববার (১৯ মে) বিকাল সাড়ে ৪টায় দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে এই ঈদ বস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম প্রধান অতিত্থি হিসেবে উপস্থিত উক্ত ঈদ বস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক, পরিকল্পনা ও কাজ উন্নয়ন শাখার পরিচালক প্রফসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. মফিজুল ইসলাম, জেনেটিক্স এন্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল গাফফার মিয়া, বায়োকেমিস্ট্র এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসিন প্রধান, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.হাসানুর রহমান রাজু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো.সাইফুদ্দিন দুরুদসহ হাবিপ্রবি মজার স্কুলের সদ্য বিদায়ী সভাপতি শহিদুল ইসলাম ফাহিম ও নবনির্বাচিত সভাপতি রাগিব হাসান সিফাত,সাধারণ সম্পাদক অনামিকা স্যানাল, কোষাধ্যক্ষ আসমাউল হুসনা মীমসহ মজার স্কুল কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ
ঈদবস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষে মজার স্কুলের সুবিধাবঞ্চিত ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন (টিএসসি) কেন্দ্র ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মজার স্কুল কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
প্রচার সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রনির সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম বলেন, এটি অনেক বড় একটি মহৎ কাজ। এ রকম কাজ দেশে কমই আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের নিয়ে যে কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি তাদের এই মহৎ উদোগের সার্বিক সফলতা কামনা করছি। সেই সঙ্গে যারা এই কাজটি পরিচালনার জন্য বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাদেরকে সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সর্বোপরি, তাদের যেকোন সহযোগিতায় আমি সর্বক্ষণ পাশে আছি।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বেটার টুম্যোরো,সুইডেন ও গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (GUK) ।
প্রসঙ্গত, সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদের চোখভরা স্বপ্নকে রাঙ্গিয়ে দিতে ও শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক উদ্যমী তরুণ শিক্ষার্থীর উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে হাবিপ্রবি (এইচএসটিইউ) মজার স্কুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে মজার স্কুলে নিয়ে আসা হয়। হাবিপ্রবি স্কুলে অস্থায়ীভাবে তাদের ক্লাস নেওয়া হয়। স্কুল ছুটির পর মজার স্কুলের ক্লাস শুরু হয়। বঞ্চনার শিকার কোনো শিশু একবার মজার স্কুলে এলে আর ফিরতে চায় না। মজার স্কুলের মমতাময়ী শিক্ষকদের মমতা আর মায়াময় পরিবেশে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে মমতার টানেই প্রতিদিনই ছুটে আসে ওইসব শিশু। মজার স্কুলে আসা সবশিশু বিনামূল্যে বই, খাতা, কলম, রাবার, স্কেল, পেন্সিলসহ যাবতীয় শিক্ষা উপকরণ ও টিফিন সরবরাহ করা হয়। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই নয়, মজার স্কুল শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিশুদ্ধতার জন্য সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা এবং খেলাধুলার সুযোগও করে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও বর্ষের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত হচ্ছে স্কুলটি। এ তরুণ শিক্ষার্থীরা তাদের পকেট খরচ থেকে কিছু অর্থ বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের বই,খাতা,কলম ও টিফিনের জন্য ব্যয় করছে। স্কুলটির শিক্ষক রয়েছে ৪০ জন। শিশুশ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান দেয়া হয় এখানে। শিক্ষকরা পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে ছয়দিন ক্লাস নেন। প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে পথ শিশুদের ক্লাস।
কেআই/