প্রবাসী জামাল হত্যার খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:৪১ পিএম, ২০ মে ২০১৯ সোমবার
যশোরের বেনাপোলে প্রবাসী জামাল হোসেনের খুনিদের আটক ও দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পরিবারের সদস্যরা ও গ্রামবাসীরা। সোমবার দুপুরে বেনাপোল পোর্ট থানার ধান্যখোলা মাদ্রাসার সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্ত্রীর পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে খুনের শিকার প্রবাসী জামালের ছোট ভাই মামলার বাদী বাবলুর রহমান জানান, ভাইয়ের তিন হত্যাকারীর নাম উল্লেখ্য করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরও তাদের নামে মামলা হলো না। এখন শুনছি আমার ওই মামলায় সব অজ্ঞাত আসামী হয়েছে। তখন আমি পুলিশের কাছে মামলার কপি চেয়েছিলাম। তারা বলেছিল পরে দেব। এখন বুঝতে পারছি আসামীদের বাঁচানোর জন্য আমাকে মামলার কপি দেয়নি। আমরা এ মামলা মানি না, প্রয়োজনে আদালতে মামলা করবো।
এদিকে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত মামলা দায়ের হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রতিবেশিরাও। গ্রামবাসীরা জানান, অভিযুক্তদের তিনদিন থানায় আটকে রেখে পুলিশ দেন দরবার করে। এত বড় একটা ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবে? রাতে জামাল তার স্ত্রীর সঙ্গে ঘরে ছিল। গভীর রাতে তাকে বাড়িতে কুপিয়ে খুন করা হয়। পুলিশ বাড়ি থেকে স্ত্রী, শশুর-শাশুড়িকে আটক করে। অথচ এই মামলায় আটকরা সকলে অজ্ঞাত আসামী কিভাবে হয়?
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, তদন্ত শেষ না হওয়ায় আটকদের নামে হত্যা মামলা হয়নি। অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ওটা ওদের কথা।
এর আগে প্রতিবেশি রেজাউল টুকির মেয়ে আয়েশার সঙ্গে বিয়ে হয় জামালের। বিয়ের পর সে সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে মালয়েশিয়া যায় জামাল। সেখানে থাকাকালীন সময়ে টাকা-পয়সা সব শশুর বাড়িতে পাঠাতো। ইতিপূর্বে সে তিন বার বাড়িতেও এসেছে। কিন্তু স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল না। এর আগেও জামালকে একবার হত্যা করার চেষ্টা করে স্ত্রী।
গত ১৪ মে জামাল বিদেশ থেকে বাড়ি ফেরে। এদিন সে উপহার সামগ্রী নিয়ে শশুর বাড়িতে যায়। হঠাৎ রাত ১২টায় শশুর বাড়ির লোকজন চিৎকার করে রোহিঙ্গারা জামালকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে।পরে জামালের স্বজনরা শশুর বাড়িতে গিয়ে দেখে ঘরের সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ পড়ে আছে। পরে তারা বুঝতে পারে স্ত্রী, শশুর-শাশুড়ি মিলে জামালকে খুন করে রোহিঙ্গা নাটক সাজিয়েছে। এ সময় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বাড়ি থেকে স্ত্রী, শশুর-শাশুড়িকে আটক করে জামালের লাশ নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে এদিন পোর্ট থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) সৈয়দ আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তারা অভিযুক্ত মনে করে জামালের স্ত্রীসহ তিন জনকে আটক করেছেন।
কেআই/