ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

লোভ-ক্রোধ ঈমানদারকে বেঈমান করে দেয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৬ পিএম, ২০ মে ২০১৯ সোমবার

পৃথিবীতে যত অনর্থ তার প্রায় সবটার মূলেই রয়েছে লোভ। হাদিসে বলা হয়েছে, যারা লোভী আল্লাহ তাদের মনের শান্তি কেড়ে নেন। লোভ থেকে হিংসার জন্ম হয়। হিংসা থেকে জন্ম নেয় ক্রোধ। আর ক্রোধ মানুষকে অন্ধ করে দেয়। ক্রোধান্ধ মানুষ দুনিয়া এবং আখেরাত দুটোই হারায়। লোভ ঈমানদারকে বেঈমান করে দেয়। মানুষকে অমানুষ বানাবার এমন প্রায় অপ্রতিরোধ্য প্রবৃত্তি আর একটিও নেই।

বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যেই বেহেশতে যাবার প্রবল বাসনা থাকে। সেটাও কিন্তু এক ধরনের লোভ। আমি ভালো কাজ করবো, বিনিময়ে আল্লাহ বেহেশত দান করবেন। এ ধরনের মানসিকতার মধ্যেও রয়েছে ওই একই লোভ। নির্লোভ সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহকে ভালোবাসার বিনিময়ে আল্লাহর নৈকট্য কামনা করাটাও কিন্তু এক ধরনের লোভ। কিন্তু এই লোভ আর সেই লোভ কি বিপুল ব্যবধান।

জীবনই হচ্ছে মানুষকে দেওয়া আল্লাহর সবচেয়ে বড় দান বা দয়া। আর এই জীবনের গৌরব হচ্ছে যৌবন। যৌবন একটা অমূল্য ধন। আবার এই যৌবনই হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। যৌবন একটি শক্তির নাম। এ শক্তির তাড়নায় মানুষ বিপথগামী হয়-ধরাকে সরা জ্ঞান করে। ক্রমে ক্রমে সে ইন্দ্রিয়ের দাসে পরিণত হয়। আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি অপচয় করার পর সে যখন বুঝতে পারে তখন সময় থাকে না। যে তীর একবার নিক্ষিপ্ত হয় সে তীরকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে ভুল করে না। অথচ আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে মনুষ্যত্ব অর্জনের পথে এই যৌবনই হতে পারে সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। যৌবন জীবনের অনেক কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। মানব প্রেমে উদ্বুদ্ধ যৌবন অসাধ্য সাধন করতে পারে। এজন্যেই হবার সাধনা। যারা এই সাধনা করে না তারা মখলুক বা সৃষ্টি মানুষ নয়। মানুষ ওলী হতে পারে, মখলুক ওলী হতে পারে না। মখলুক আবদ হতে পারে না। আবেদও আবার চেষ্টা না করলে আরেফ হতে পারে না। আবেদ, আরেফ, ওলী এরাই আল্লাহর বন্ধু আর এই বন্ধুত্ব অর্জিত হয় শর্তহীন শর্তে-কোনরূপ শর্ত আরোপ না করে, আল্লাহকে একমাত্র প্রেমাস্পদ ভেবে।

তথ্যসূত্র: হযরত সৈয়দ রশীদ আহমদ জৌনপুরির (রহ) এর ‘সংলাপ সমগ্র’ বই থেকে সংগৃহীত।

 

এমএস/ এসএইচ/