ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

উপকারের বিনিময়ে কৃতজ্ঞতা

ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরী :

প্রকাশিত : ০১:২৪ পিএম, ২২ মে ২০১৯ বুধবার

একজন মানুষ তার জীবনে যাদের কাছ থেকে উপকার অনুগ্রহ বা আশ্রয় পায় তাদের প্রতিদান না দিয়ে বা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পূর্ণ হয় না। তবে কোন মানুষ যাতে স্রষ্টার চেয়ে পূজনীয় না হয়ে যায়, তা খেয়াল করতে হবে।

এমন অনেক মানুষ আছেন যারা পিতামাতাকে শ্রদ্ধা করতে করতে পূজনীয় পর্যায়ে নিয়ে যান ও তাদের স্রষ্টার বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দেন। তা অবশ্যই গর্হিত কাজ। কেননা মূল নীতি হলো স্রষ্টার অসন্তুষ্টি করে সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না।

‘আমি মানুষকে তার পিতামাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। মাতা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং দু’বছরে তার দুধ ছাড়ানো হয়। সুতরাং কৃতজ্ঞ হও আমার ও পিতামাতার প্রতি। অবশ্যই আমার কাছে ফিরে আসতে হবে।’ (সূরা লোকমান ৩১/২৪)

একজন মানুষ জন্ম থেকে বড় ও শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ পরিক্রমায় মা-বাবা, আত্মীয় স্বজনসহ যাদের কাছ থেকে সেবা-যত্ন-উপকার গ্রহণ করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও তাদের দায়বদ্ধতা শোধ করার ভিত্তির ওপরই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতার সৌধ তৈরি হয়।

আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, ‘রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করে না, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করে না।’ (আবু দাউদ)

সুহান ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যখন কাউকে কিছু দেওয়া হয় আর সে তার বিনিময় করতে সক্ষম হয় তার উচিত তার বিনিময় দেওয়া। আর যদি সে বিনিময় দেওয়ার ক্ষমতা না রাখে তখন তার উচিত দাতার প্রশংসা করা। তবে যে তার দাতার প্রশংসা করলো সে যেন তার কৃতজ্ঞতা আদায় করল। আর যে ব্যক্তি কারো অনুদানকে গোপন রাখে সে যেন না শোকরী করল।’ (আবু দাউদ)

তাই প্রতিটি মানুষের উচিত পুরো জীবনকে সামনে নিয়ে আসা এবং জীবনের চলার পথে কোন কোন সূত্র থেকে সে উপকার পেয়েছে তা অনুধাবন করা। যাদের বিনিময় দেওয়া সম্ভব তাদের উপকারের বিনিময় দিতে সচেষ্ট থাকা। যাদের উপকারের বিনিময় দেওয়া সম্ভব নয়, তাদের প্রশংসা করা ও তাদের জন্য দোয়া করা।

(শোকরিয়া, প্রশান্তি ও প্রাচুর্যের রাজপথ গ্রন্থ)

এএইচ/