আল্লাহ বান্দার রিজিক কমান এবং বাড়ান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:১৮ পিএম, ২৩ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার
কুরআনের প্রথম আয়াত নাজিল হয় ৬১০ সালে আর শেষ আয়াত ৬৩২ সালে। ধাপে ধাপে খণ্ডে খণ্ডে দীর্ঘ ২৩ বছরে পরিপূর্ণতা পায় কুরআন। প্রথম আয়াত নাজিল হওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে ওঠে এর আকর্ষণীয় ক্ষমতা। অবিদ্যা বা জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত মানুষগুলো আলোর সন্ধান পায়। সেই আলোয় বদলাতে শুরে করে তারা।
এই কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘বান্দার প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি রিজিক বা জীবনোপকরণ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।
আল্লাহ তাঁর বিবেচনামতো জীবনোপকরণ বরাদ্দ করে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রয়োজন ভালো করেই জানেন এবং সে অনুযায়ী দিয়ে থাকেন। আল্লাহই মানুষের রিজিক বা জীবনোপকরণ কমান এবং বাড়ান। তার দেয়া রিজিক থেকে দানের কথাও বলেছেন।
কুরআনে রিজিক বা জীবনোপকরণ নিয়ে আল্লাহ যা বলেন : ‘আমি জমিনকে বিস্তৃত করেছি। এতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি। প্রকৃতিতে সবকিছুর বিকাশেই এনেছি ভারসাম্য। প্রকৃতির মধ্যেই জীবনোপকরণের ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্যে এবং এমন সকল সৃষ্টির জন্যে, যাদের জীবনোপকরণ তোমাদের ওপর নির্ভরশীল নয়। সবকিছুরই অফুরন্ত মজুদ আমার কাছে রয়েছে এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমাণই সরবরাহের ব্যবস্থা করি।’ (সূরা হিজর ১৯-২১)
‘মনে রেখো, তোমার প্রতিপালক যাকে ইচ্ছা পর্যাপ্ত জীবনোকরণ দেন, যাকে ইচ্ছা সীমিত জীবনোপকরণ দেন। অবশ্যই তিনি বান্দাদের প্রয়োজন সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন এবং তাদের সবকিছুই দেখেন।’ (সূরা বনি ইসরাইল ৩০)
‘আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাকে উপচে পড়া জীবনোপকরণ দিলে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। তাই তিনি তাঁর বিবেচনা মতো জীবনোপকরণ বরাদ্দ করে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রয়োজন ভালো করেই জানেন, তাদের সবার প্রতিই নজর রাখেন।’ (সূরা শুরা ২৭)
‘আল্লাহ তোমাদের জন্যে জমিনকে বিস্তীর্ণ করেছেন। চারদিকে ছড়িয়ে পড়। তাঁর দেয়া জীবনোপকরণ থেকে আহার করো। কিন্তু সবসময় মনে রেখো, পুনরুত্থানের পর তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে।’ (সূরা মূলক ১৫)
‘আল্লাহ যদি কারো রিজিক বা জীবনোপকরণ বন্ধ করে দেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের রিজিক দিতে পারবে? কিন্তু ওরা সত্য অস্বীকারে অটল রয়েছে ও আল্লাহর বাণীর অবাধ্যতায় একগুঁয়েমি করেই চলছে।’ (সূরা মূলক ২১)
হালাল রিজিক আহারের নির্দেশ : ‘(অতএব হে বিশ্বাসীগণ!) আল্লাহ তোমাদের যে হালাল ও পবিত্র জীবনোপকরণ দিয়েছেন, তা থেকে আহার করো। আর তোমরা যদি (সত্যি সত্যিই) শুধু তাঁরই ইবাদত করো, তবে আল্লাহর অনুগ্রহের শুকরিয়া আদায় করো।’ (সূরা আন-নহল ১১৪)
আল্লাহ রিজিক কমান, বাড়ান : ‘তোমাদের মধ্যে কে আল্লাহকে ‘কর্জে হাসানা’ (অর্থাৎ উত্তম ঋণ) দেবে? আল্লাহ বহুগুণ প্রবৃদ্ধিসহ তা ফেরত দেবেন। আল্লাহই মানুষের রিজিক বা জীবনোপকরণ কমান এবং বাড়ান। তোমাদেরকে তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে।’ (সূরা বাকারা ২৪৫)
‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা জীবনোপকরণের প্রাচুর্য দেন এবং যাকে ইচ্ছা সীমিত জীবনোপকরণ দেন। (যাদের জীবনোপকরণের প্রাচুর্য দেয়া হয়) তারা পার্থিব ভোগবিলাসেই মত্ত হয়ে ওঠে, যদিও পরকালীন জীবনের তুলনায় পার্থিব জীবন এক পুতুলখেলা মাত্র।’ (সূরা রাদ ২৬)
রিজিক থেকে দান :
‘আল্লাহ তোমাদের কাউকে কাউকে অন্যদের চেয়ে বেশি জীবনোপকরণ দিয়েছেন। যাদের অতিরিক্ত জীবনোপকরণ দেয়া হয়েছে, তারাও (সাধারণত) নিজেদের জীবনোপকরণ থেকে তাদের অধীনদের এমন কিছু দেয় না, যাতে ওরা তাদের সমকক্ষ হতে পারে। এর মাধ্যমে তারা কি আল্লাহর নেয়ামতকে অস্বীকার করছে না?’ (সূরা আন-নহল ৭১)
‘আল্লাহ দুজন মানুষের দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন : একজন অন্যের অধীন। কোন কিছুর ওপরই তার কোন কর্তৃত্ব নেই। (অপরদিকে) দ্বিতীয় জন, যাকে আমি উত্তম জীবনোপকরণ দিয়েছি, যা থেকে সে প্রকাশ্যে ও গোপনে (অন্যের জন্যে) মুক্তভাবে ব্যয় করে। এরা দু’জন কি কখনো সমান হতে পারবে? সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য! অথচ অধিকাংশ মানুষই একথার মর্ম বোঝে না।’ (সূরা আন-নহল ৭৫)
এএইচ/