ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

বাংলায় মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কারা এগিয়ে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪৬ পিএম, ২৫ মে ২০১৯ শনিবার | আপডেট: ০৯:৪৮ পিএম, ২৫ মে ২০১৯ শনিবার

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। তাই নতুন সরকার গঠন করা নিয়ে ব্যস্ত এখন বিজেপি। এই মন্ত্রিসভা নিয়ে ইতোমধ্যে চলছে না আলোচনা-সমালোচনা। টানা দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর পদ পেতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। আর গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর মন্ত্রিত্ব নিয়ে চলছে বেশ আলোচনা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তৃণমূলের ঘাটি হিসেবে পরিচিত পশ্চিমবঙ্গে এবার খুব ভালো করেছে বিজেপি। আর এই রাজ্যে এবার বিজেপি থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেতে পারে। এই রাজ্যে কে কে মন্ত্রিত্ব পাচ্ছে তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই।

এ মাসের শেষে শপথ নেবে মোদি মন্ত্রিসভা। কারা থাকছেন স্বরাষ্ট্র-অর্থ-প্রতিরক্ষা-বিদেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। বিজেপির কেউ, না শরিক দলের? জল্পনায় উত্তাল বিজেপির অন্দরমহল। গুজগুজ, ফিসফাস, কানাকানি ছেঁকে যে নামগুলি উঠে আসছে তার মধ্যে বিগ ফোরে নুতন মুখ আসারই সম্ভাবনা। যেমন অমিত শাহ। বিজেপি সভাপতি এত দিন রাজ্যসভার সংসদ সদস্য থাকলেও এ বার
পেতে পারের গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয়। বিজেপির একাংশের মতে, অমিত শাহ হতে চলেছেন আগামী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রে রাজনাথ সিংহ যাবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু বিজেপিরই অন্য অংশের মতে, অমিত শাহ দলের সভাপতি। গোটা দল চলে তাঁর নির্দেশে। সুতরাং সেই ক্ষমতা ছেড়ে তিনি কেবল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে ফাইল নাড়াচাড়া করে সময় কাটাবেন, এমন ভাবা যুক্তিহীন। যেখানে দলের সংবিধান অনুযায়ী, তিনি দ্বিতীয় বার দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বে থাকতে পারেন ২০২৪, অর্থাৎ আগামী লোকসভা পর্যন্ত। তাই সরকার না দল— অমিত শাহ কী বেছে নেন, তাই দেখার। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত সুষমা স্বরাজের। এ বারের নির্বাচনে লড়েননি তিনি। যদিও তাঁকে রাজ্যসভা থেকে জিতিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে।

প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে অরুণ জেটলিকে নিয়ে। শারীরিক অসুস্থতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় দু’সপ্তাহের বেশি তিনি ঘর থেকে বেরোননি। আজ সচিবদের সঙ্গে বাড়িতে বৈঠক করলেও পরবর্তী মন্ত্রিসভায় তার থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। জেটলির অনুপস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পীযূষ গয়ালের নাম সে ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর দৌড়ে রয়েছে। যদিও দলের একাংশ সংস্কারমুখী নিতিন গডকড়ীকে অর্থমন্ত্রী দেখতে চাইছেন। সে ক্ষেত্রে বিগ ফোরে অন্তর্ভুক্ত হবেন কোনও নতুন মুখ।

অমেঠীতে রাহুল গান্ধীকে হারানো স্মৃতি ইরানি যে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেতে চলেছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত অনেকেই। সূত্রের মতে, গ্রামোন্নয়ন বা নগরোন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন তিনি। অতীতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হিসেবে স্মৃতি মিডিয়ার উপর নজরদারি চালিয়ে অযথা বিতর্ক বাধানোয় তাঁকে ওই পদে না বসানোর পক্ষেই বিজেপির একাংশ। পদোন্নতি হতে পারে মুখতার আব্বাস নকভির। তাঁকে তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয় কিংবা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে পারেন মোদি।

আর এবার একাধিক মন্ত্রীর দাবিদার পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে আশাতীত ভালো ফল করেছে বিজেপি। একে ১৮টি আসন, তায় দু’বছর বাদেই বিধানসভা ভোট। সুতরাং অন্তত দুটি পূর্ণমন্ত্রী ও একাধিক প্রতিমন্ত্রীর দাবি রয়েছে রাজ্যের। পূর্ণমন্ত্রীর দৌড়ে আছেন আগের মন্ত্রিসভার দুই জয়ী প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় এবং এস এস অহলুওয়ালিয়া। তবে সূত্র বলছে, দুজনের মধ্যে অন্তত একজনের মন্ত্রিত্ব যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অন্য ক্যাবিনেট মন্ত্রী হতে পারেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু বিধানসভার আগে রাজ্য ছেড়ে দিল্লিতে মন্ত্রিত্ব সামলানো তার পক্ষে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সদ্য সংসদ সদস্য জগন্নাথ সরকার এবং সুভাষ সরকারের মধ্যে একজনকে প্রতিমন্ত্রী করা নিয়ে ভাবনা চলছে। তালিকায় নাম রয়েছে দীনেশ ত্রিবেদীকে হারানো অর্জুন সিংহ এবং দুবারের সংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁর। দৌড়ে সামান্য হলেও এগিয়ে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সৌমিত্র। পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে ভাবা হচ্ছে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নাম।

আজ বিকেলে সাউথ ব্লকে বিদায়ী সরকারের শেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে জয়ের জন্য সতীর্থদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তার পরেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র দিয়ে আসেন।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার।

এসএইচ/