ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

চুরির অভিযোগে ইউনাইটেড গ্রুপের ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৫১ পিএম, ২৬ মে ২০১৯ রবিবার

রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় চৌধুরী ইন্টার লাইনিং ইন্ডাষ্ট্রিজের ৩০ কোটি টাকার মালামাল চুরির অভিযোগে ডিইপিজেড এলাকার ইউনাইটেড গ্রুপের এস্ট্রো এস্টেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ১৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় ৭১ নং মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। গত ২০ মে সোমবার এ মামলাটি গ্রহণ করেন আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রিজাউল হক দীপু।

মামলার আসামীরা হলো, ডিএমপি’র গুলশান-২ থানার বাসিন্দা মৃত. মমতাজ উদ্দিনের ছেলে আবুবক্কর সিদ্দিক (৬২), শাহাবুদ্দিন (৬০), গিয়াস উদ্দিন (৫৮), নাজিমুদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন, গুলশান সেন্টার পয়েন্টের বাড়ি নং ২৩-২৬ রোড নং-৯০, গুলশান-২, ঢাকা মালিকানাধীন এর ইউনাইটেড গ্রুপের এস্ট্রে এস্টেড লি. প্রতিষ্ঠানটির সিকিউরিটি ইনচার্জ আবিদ (৪৭), রাশেদ (২৬), আব্দুল হাইসহ অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে বিবাদী করা হয়।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী মহিউদ্দিন চৌধুরী মাসুদ (৫২) সিআর মামলা ৩৪০ এ উল্লেখ করেন, এ বছরের গত ১৯ মার্চ ও ১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা হতে ভোর ৫টায় আশুলিয়ার গণকবাড়ি মৌজার চৌধুরী ইন্টার লাইনিং ইন্ডাষ্ট্রিজ নামক প্রতিষ্ঠানের ৩০ কোটি টাকার মেশিনারীজ, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ উল্লেখিত বিবাদীরা তাদের অনুপস্থিতিতে রাতের আধাঁরে চুরি নেয়।

এ বিষয় জানতে পেরে তিনি পহেলা এপ্রিল ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান ঢাকা মেট্রো ট-২০-৭৫৩৯ ট্রাকযোগে ওই প্রতিষ্ঠানের কিছু মেশিনারীরজ যন্ত্রপাতি ও মালামাল চুরি করে নিতে দেখেন। তিনি আশপাশের লোকজন ও টহলরত পুলিশের সহায়তায় তার প্রতিষ্ঠানের কিছু মালামালসহ উক্ত ট্রাকটি আটক করে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেন।

উপরোক্ত বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে আসামীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান হওয়ায় থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে তার নিকট থেকে ২ এপ্রিল একটি জিডি নং ৯৪ গ্রহণ করেন। ট্রাক ভর্তি চোরাইকৃত মালামালসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের থানায় সোপর্দ করা হলেও থানা পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তাদের ছেড়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, মামলার আসামীগণ পরষ্পরের যোগসাজসে ১৯ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল তারিখ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তার প্রতিষ্ঠান হতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার মেশিনারীজ, কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায়। বিবাদীরা পরষ্পর যোগসাজসে তার প্রতিষ্ঠানের তালা ভেঙ্গে এসকল মালামাল নিয়ে যায়। এমনকি তার স্থাপনার বিভিন্ন মালামালও তার চুরি করে নেয়। এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে আশুলিয়া থানা পুলিশ ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি গ্রহণ করেন। মামলাটি সিআইডি তদন্ত করবেন মর্মে আদালতে প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য আবেদন করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ১ মার্চ ও ২৪ এপ্রিল এক মাসের ব্যবধানে দু’টি সাব কবলা দলিলের মাধ্যমে ১-৫ নং আসামীর নিকট থেকে ৬নং আসামী এস্ট্রো এস্টেড (ইউনাইটেড গ্রুপের) মালিক ২ শত সাড়ে ৭৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এর মধ্যে ডিইপিজেড ও সড়ক জনপথের অধিগ্রহণকৃত জমির পরিমান ২ শত ৭৭ শতাংশ। মোট জমি ৫০৬ শতাংশ। উল্লেখিত দাগে ব্যক্তি মালিকানা জমি থাকে ২শত ২৯ শতাংশ। অথচ ছলচাতুরির মাধ্যমে একমাস ব্যবধানে দু’টি দলিলের মাধ্যমে সাড়ে ৫০ শতাংশ ডিইপিজেডের জমি দখলে নিয়েছে ইউনাইটেড গ্রুপের এস্ট্রো এস্টেড।

এ ঘটনায়ও আদালতে মামলা হয়েছে। দলিল বাতিল ও সকল কার্যক্রম বন্ধের জন্যে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন ডিইপিজেড এর মহাব্যবস্থাপক আবদুস সোবাহান স্বাক্ষরিত  ডিসি, এসিল্যান্ড ও সাব রেজিষ্ট্রার এর দফতরে লিখিত আবেদন করেন।

উল্লেখিত,দাগের অভ্যন্তরেই রয়েছে চৌধুরী ইন্টার লাইনিং ইন্ডাষ্ট্রিজ নামক প্রতিষ্ঠানটি। কারখানাটি বেশ কিছু যাবৎ বন্ধ থাকায় নতুন ক্রয়কৃত মালিক এস্ট্রো এস্টেড জমি থেকে স্থাপনাটি উৎখাতের জন্য এবং দখলে নিতে কারখানার মালামাল ও যন্ত্রাংশ সড়িয়ে স্থাপনা ভাঙ্গার কাজ শুরু করে।

কেআই/