দৈনিক আমল কণিকা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩৬ এএম, ২৯ মে ২০১৯ বুধবার
আজ বুধবার তেইশ রমজান। জাহান্নাম থেকে নাজাতের দশক চলছে। আজকের আমল হোক জান্নাতের সুবিধা আদায়, মানুষের অধিকার নষ্ট না করা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আমল ও দানশীল হওয়া।
জান্নাতের কিছু সুবিধা যাদের জন্য
আলি (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে কিছু কক্ষ রয়েছে যার বাহির থেকে ভেতর দেখা যাবে এবং ভেতর থেকে বাহির দেখা যাবে। এ কথা শুনে একজন বেদুইন বলে উঠলো, হে আল্লাহর রাসূল, এসব কার জন্য? নবী করীম (সা.) বললেন, যে সুন্দরভাবে কথা বলে, (মানুষকে) খাবার খাওয়ায়, নিয়মিত সিয়াম পালন করে এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন যে আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করে।
মানুষের অধিকার নষ্টকারী ব্যক্তিই পরকালে প্রকৃত নিঃস্ব
আবূ হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কি জানো নিঃস্ব কে? তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের মধ্যে সেই তো নিঃস্ব যার কাছে টাকা-পয়সা ও জীবনোপকরণ কিছুই নেই।
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সেই নিঃস্ব যে কিয়ামতের দিন (নিজের আমলনামায়) প্রচুর সালাত, যাকাত ও সিয়াম নিয়ে হাজির হবে। কিন্তু (দুনিয়াতে) সে গালমন্দ করে কারো সম্মানহানী করে এসেছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে এবং কাউকে আঘাত করেছে। সে (বিচারের অপেক্ষায়) বসে থাকবে; এমন সময় (দুনিয়াতে তার কাজের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের) একজন এসে তার কিছু সওয়াব নিয়ে যাবে; আরেকজন এসে আরো কিছু সওয়াব নিয়ে যাবে। পাপের দেনা শোধ হওয়ার আগেই যদি তার সওয়াব ফুরিয়ে যায়, তাহলে তাদের পাপ এনে তার উপর নিক্ষেপ করা হবে; পরিশেষে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।
দানশীলের সম্পদ বৃদ্ধি ও কৃপণের সম্পদ ধ্বসের জন্য দু’জন ফেরেশতা দোয়া করতে থাকে
আবুদ দারদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সূর্যোদয়ের সময় দু’জন ফেরেশতা সূর্যের দু’পাশ থেকে দুনিয়াবাসীকে শুনিয়ে ডাকতে থাকে, ‘তোমাদের রবের দিকে এসো। যে আমলের পরিমাণ কম, কিন্তু পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে করা হয়- তা ওই আমলের তুলনায় উত্তম যার পরিমাণ বেশি, কিন্তু খামখেয়ালিভাবে করা হয়।’ কেবল মানুষ ও জিন এ আওয়াজ শুনতে পায় না। আবার সূর্যাস্তের সময় দু’জন ফেরেশতাকে সূর্যের দু’পাশে পাঠানো হয় যারা দুনিয়াবাসীকে শুনিয়ে ডাকতে থাকে, ‘হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি (তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে) খরচ করে তুমি তাকে বিকল্প কিছু দান করো, আর যে (সম্পদ) আটকে রাখে (তার সম্পদ) তুমি বিনাশ করে দাও!’ কেবল মানুষ ও জিন এ আওয়াজ শুনতে পায় না। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত কখনো এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি।’
তথ্যসূত্র : ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল, অনুবাদ: জিয়াউর রহমান মুন্সী, রাসূলের চোখে দুনিয়া গ্রন্থ।
এএইচ/